একটি দেশকে গড়ে তুলতে রাজনৈতিক অঙ্গীকারেরসঙ্গে পরিকল্পনা থাকাও প্রয়োজন: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘একটি দেশকে গড়ে তুলতে রাজনৈতিক অঙ্গীকারের সঙ্গে পরিকল্পনা থাকাও প্রয়োজন। কারণ রাজনৈতিক অঙ্গীকার ছাড়া কোনো দেশ বা জাতি উন্নতি করতে পারে না। বাংলাদেশের জন্য সেটা একেবারেই সত্য।’
আজ বুধবার সকাল ১১টায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ উন্নয়ন ফোরামের সম্মেলন উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাতির পিতা দেশকে দারিদ্র্যমুক্ত ও উন্নত করার লক্ষ্যে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। ১৯৭৩ থেকে ৭৮ পর্যন্ত পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা নিয়েছিলেন তিনি।
আমরা ২১ বছর পর সরকার গঠন করে পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনাও গ্রহণ করি, পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনাও গ্রহণ করি। ষষ্ঠ শেষ করে, সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা প্রণয়ন করে বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। টেকসই উন্নয়নের ক্ষেত্রে কোন জায়গাগুলো গুরুত্বপূর্ণ তা চিহ্নিত করেই আমরা পরিকল্পনামতো এগিয়ে যাচ্ছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘জাতির পিতা যে স্বপ্ন নিয়ে দেশ স্বাধীন করেছিলেন, সেটা বাস্তবায়ন করাই আমাদের লক্ষ্য। তা করতে পারলেই দেশ এগিয়ে যাবে।
আমরা যদি এই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে পারি, তাহলে ২০২৪ সালে আমরা উন্নয়নশীন দেশের স্বীকৃতি পাবো এবং ২০৪১ সালের মধ্যে বিশ্বের উন্নত রাষ্ট্রের কাতারে অবস্থান হবে। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে।’
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় বাংলাদেশের অবস্থানের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় আমরা ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছি।
শুধু বাংলাদেশ নয় যেসব ছোট দ্বীপ জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, তাদের সবার প্রতিই সহায়তা করা প্রয়োজন। উন্নত রাষ্ট্রগুলোকে এক্ষেত্রে এগিয়ে আসতে হবে। আমরা যেহেতু বদ্বীপ, তাই ডেল্টা প্ল্যান ২০১০ প্রণয়ন করে তা বাস্তবায়নের কাজও শুরু করেছি।
আমাদের নদীগুলো ড্রেজিং করতে হবে। নাব্য বাড়াতে হবে। তাহলে বন্যার হাত থেকে আমরা মুক্তি পাবো। আর ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে আমরা অনেক ভূমিও উদ্ধার করতে পারবো। সেসব ভূমি কৃষিকাজসহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করতে পারবো। নদীতে নাব্য থাকলে যোগাযোগ ব্যবস্থাও সহজ হয়ে যাবে।’
বাংলাদেশের উন্নয়নের এই অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে কঠিন শর্ত না দিয়ে উন্নয়ন সহযোগীদের পাশে থাকার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। সেই সঙ্গে অনুষ্ঠানে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রস্তুতি নিতে কারিগরি শিক্ষায় উৎসাহিত করার তাগিদ দেন তিনি। এছাড়া বসতবাড়ি ও কৃষিজমি নষ্ট করে যেখানে সেখানে শিল্প কারখানা না করারও নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী।
উল্লেখ্য, দুই বছর পর ঢাকায় বসেছে এই সম্মেলন। সম্মেলনের আয়োজন করেছে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি)। দুই দিনব্যাপী সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।