আমাদের নেতা দরকার নেই সাচ্চা কর্মী দরকার: কাদের
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, দলে দিন দিন কর্মী কমে যাচ্ছে। আর বাড়ছে নেতার সংখ্যা। আমাদের এতো নেতা দরকার নেই।
তিনি বলেন, ‘আমাদের আজকে সাচ্চা কর্মী দরকার। মঞ্চের দিকে তাকালেই বোঝা যায় যে কত নেতা! নেতার অভাব নেই। বিলবোর্ডে সুন্দর সুন্দর ছবি দেখাবেন, লোকে চেনেও না! উনি বিলবোর্ডে উজ্জ্বল। এসব দেখতে পাওয়া যায়।’
রোববার দুপুরে রাজশাহী মাদ্রাসা মাঠে মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
এর আগে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জাতীয় সংগীতের সঙ্গে বেলুন, ফেস্টুন ও কবুতর উড়িয়ে নগর আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক এই সম্মেলনের উদ্বোধন করেন ওবায়দুল কাদের।
দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘পকেট কমিটি করে আওয়ামী লীগকে দুর্বল করবেন না। পকেটের লোকদের নিয়ে কমিটি করলে আওয়ামী লীগ সুবিধাবাদীদের হাতে চলে যাবে।
মশারির ভেতর মশারি টাঙাবেন না, ঘরের ভিতর ঘর বানাবেন না। আমাদের সামনে কঠিন চ্যালেঞ্জ আছে। এই চ্যালেঞ্জ আমাদের অতিক্রম করতে হবে। ত্যাগী নেতাকর্মীকে নিয়ে আওয়ামী লীগকে ঢেলে সাজাতে হবে।’
কাদের বলেন, ‘আমরা মুজিববর্ষে আওয়ামী লীগে সুবিধাভোগী সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, ভূমিদখলদার ও মাদক কারবারিকে জায়গা দেব না। নেতা হতে হলে মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য হতে হবে।
মনে রাখতে হবে, ক্ষমতা চিরস্থায়ী নয়। ত্যাগের মহিমায় উজ্জীবিত হয়ে ভোগের লিপ্সা ত্যাগ করে আমাদের সত্যিকারের মুজিব সৈনিক হতে হবে। বঙ্গবন্ধুর রেখে যাওয়া আদর্শের পতাকা নিয়ে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।’
আওয়ামী লীগে সুবিধাবাদীদের দরকার নেই উল্লেখ করে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের মানুষ পাঁচবারের দুর্নীতিতে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন বিএনপিকে আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না। কিন্তু বাংলার বাতাসে আবারও চক্রান্তের গন্ধ।
শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করে যাচ্ছে অশুভ শক্তি। নির্বাচনে ব্যর্থ হয়ে বিএনপি চক্রান্ত করে সরকার হটানোর ষড়যন্ত্র করছে। এই অপশক্তিকে প্রতিহত করতে হবে।
বাংলাদেশে আর যেন কোনো দিন সাম্প্রদায়িক ও অন্ধকারের শক্তি ক্ষমতায় না আসতে পারে সে জন্য আওয়ামী লীগকে আজকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’
সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলির সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক ও জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাইদ আল মাহমুদ স্বপন, এসএম কামাল হোসেন, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নুরুল ইসলাম ঠাণ্ডু ও বেগম আখতার জাহান।
সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন।
সম্মেলনে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, আওয়ামী লীগ সভাপতির উপদেষ্টা প্রফেসর আব্দুল খালেক, প্রফেসর সাইদুর রহামন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মেরাজ উদ্দিন মোল্লা, সাধারণ সম্পাদক কাজী আবদুল ওয়াদুদ দারা, রাজশাহী-৩ আসনের এমপি আয়েন উদ্দিন, রাজশাহী-৪ আসনের এমপি ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক ও রাজশাহী-৫ আসনের এমপি ডা. মুনসুর রহমান। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার।
সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করেন ওবায়দুল কাদের। এতে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের দ্বিতীয়বারের মত সভাপতি হয়েছেন এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন।
তার সঙ্গে দ্বিতীয়বারের মতো সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন ডাবলু সরকার। একইসঙ্গে আগামী এক মাসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের নির্দেশনা দেন তিনি।