আফগানিস্তানের উচিত সরাসরি পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনায় বসা: কোরেশি; কাবুলে প্রতিক্রিয়া
আফগানিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সেদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যকে হস্তক্ষেপমূলক অভিহিত করে এর তীব্র সমালোচনা করেছে।
আফগান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পাক পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কোরেশির বক্তব্য পারস্পরিক অনাস্থা সৃষ্টির পাশাপাশি দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
পাক পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছিলেন, কাবুল-ইসলামাবাদের মধ্যকার সংকট নিরসনের জন্য ওয়াশিংটনের মধ্যস্থতার প্রয়োজন নেই এবং মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের পর আফগানিস্তানের উচিত সরাসরি পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনায় বসা।
শাহ মেহমুদ কোরেশি আরো বলেছিলেন, আমেরিকার সঙ্গে সম্পর্ক বিস্তারের চাইতে আফগানিস্তানের উচিত পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক বাড়ানো যাতে দ্বিপক্ষীয়ভাবে বিরাজমান বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করা যায়।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, আফগানিস্তানে যুদ্ধ অবসানের জন্য তালেবানের সঙ্গে আমেরিকার চুক্তি সইয়ের পর পাকিস্তানের কর্মকর্তারা আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের ওপর যে গুরুত্বারোপ করেছেন তা পররাষ্ট্র ক্ষেত্রে আত্মবিশ্বাস শক্তিশালী হওয়ার পরিচায়ক।
কারণ চুক্তি সইয়ের আগে পাকিস্তান মার্কিন নীতির সমালোচনা করলেও আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের ব্যাপারে মন্তব্য করার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করত।
কিন্তু ২৯ ফেব্রুয়ারি দোহায় তালেবানের সঙ্গে আমেরিকার চুক্তি সইয়ের পর আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের বিষয়টি জোরেশোরে উত্থাপিত হওয়ায় পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেছেন, মার্কিন সেনা পুরোপুরি প্রত্যাহার করা হলে ওই অঞ্চলের সংকট বহুলাংশে কমে আসবে।
এ কারণে পাক পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কোরেশিও আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের কথা উল্লেখ করে দ্বিপক্ষীয় যে কোনো সমস্যা সমাধানে কাবুল ও ইসলামাবাদের মধ্যে সরাসরি আলোচনার আহ্বান জানিয়েছিলেন।
তিনি দ্বিপক্ষীয় আলোচনার মাধ্যমে আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের মধ্যকার বিরোধ নিরসনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন যা কিনা আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও গ্রহণযোগ্যতা পাবে বলে তিনি মনে করেন।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, দু’দেশ যদি সংলাপে বসতে ব্যর্থ হয় তাহলে এ ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতাকারী দেশগুলো ভূমিকা রাখতে পারে। তবে সে সুযোগ থাকলেও পাক পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিরাজমান বিরোধ বা মতভেদ নিরসনের ক্ষেত্রে ইসলামাবাদ ও কাবুলে মধ্যে সরাসরি সংলাপে বসার প্রস্তাব দেন।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তার বক্তব্যে আফগানিস্তানকে এটাই বোঝানোর চেষ্টা করেছেন যে, তারা যেন অভ্যন্তরীণ সংকটের বিষয়ে আমেরিকার সঙ্গে সম্পর্ক বিস্তারের চেষ্টা না করে কেননা তা আফগানিস্তানে হস্তক্ষেপের জন্য আমেরিকাকে সুযোগ করে দেবে।