গৌরবের ১০০ বছরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
জনগোষ্ঠীর সবচেয়ে প্রাচীন, ঐতিহ্যবাহী ও প্রধান উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও ঐতিহাসিক পালাবদলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রেখেছে বিশেষ ভূমিকা।
বুধবার (০১ জুলাই) প্রতিষ্ঠানটি পা রেখেছে একশ বছরে।
বিশেষজ্ঞদের মত, বাংলাদেশের প্রধান উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে নতুন জ্ঞান সৃষ্টি কিংবা বিকাশে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে না বিদ্যাপিঠটি।
বঙ্গভঙ্গ রদের কারণে হতাশ মুসলমান সম্প্রদায়ের জন্য রাজকীয় ক্ষতিপূরণ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
নানা বাঁধা পেরিয়ে ১৯২১ সালে রাজসিক কর্মযজ্ঞে উপাচার্য করে ব্রিটেন থেকে নিয়ে আসা হয় শিক্ষাবিদ পি. জে হার্টগকে। পরিকল্পনা ছিল ঢাকা হবে পূর্ব বাংলার বুদ্ধিবৃত্তিক রাজধানী আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হবে শক্তিশালী স্কুল অব হিস্টরি, প্রাকটিক্যাল স্কুল অব সোশ্যাল ইকোনমিকস।
এরপর নানা বিপত্তি থাকা সত্ত্বেও উপমহাদেশের প্রথম আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়টি ১৯৩০ সালের মধ্যেই এশিয়ার দশটি বিশ্ববিদ্যালয়ের একটিতে পরিনণ হয়। আর তখন থেকেই এটা প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাতি পেয়ে যায়।
এরপর টালমাটাল সময়ে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সম্মুখ নেতৃত্ব দিয়েছে। সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা রুখেছে, ভাষার দাবি আদায় করেছ। বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় রেখেছে অনন্য ভূমিকা। এমনকি স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম পতাকা উড়েছে এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে। এরপর স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে স্বৈরশাসকদের বিরুদ্ধে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলন সংগ্রাম বাক বদলের ভূমিকা রেখেছে। এমন গৌরবময় ইতিহাস পৃথিবীর আর কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে আছে কী?
শিক্ষাবিদ অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন জানান, যে ঐতিহ্য, যে একাডেমিক পটভূমি ছিলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের, এখন তা নেই। জ্ঞান উৎপাদন করা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এখন প্রায় উধাও হয়ে গেছে।
প্রতিষ্ঠাকালীন স্বপ্ন এই প্রতিষ্ঠানটি হবে আন্তর্জাতিক সেন্টার অব এক্সিলেন্স। সেই স্বপ্ন কতটা পূরণ হলো?
স্বাধীন বাংলাদেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের প্রথম সহ-সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম জানান, খুবই দুঃখজনক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সব দিক থেকে নিচে নেমে এসেছে।
একটি প্রজন্মের মানুষ এই বিশ্ববিদ্যালয়কে দিয়েছে গৌরব ও আন্তর্জাতিকতা, যদি অন্য আর একটি প্রজন্ম এসে দুঃখজনকভাবে তা অনির্মাণ করে থাকে তবে, নিশ্চতভাবে এই আশা থেকে যায় নতুন প্রজন্ম পুনঃনির্মাণে স্বপ্নাতীত ভূমিকা রাখবে।