৪৭ হাজার গ্রাম পুলিশের চাকরি জাতীয়করণে হাইকোর্ট রায় প্রকাশ
সারা দেশে দায়িত্বরত ৪৭ হাজার গ্রাম পুলিশের চাকরি জাতীয়করণ করতে হাইকোর্টের দেওয়া পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করা হয়েছে। তাদের বেতন-ভাতা ২০০৯ সালে ঘোষিত জাতীয় বেতন স্কেলের (বর্তমানে জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫) ১৯তম ও ২০তম গ্রেড অনুযায়ী দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রায়ে গ্রাম পুলিশের মধ্যে দফাদার পদধারীদের ১৯তম গ্রেড এবং মহল্লাদারদের ২০তম গ্রেডে বেতন-ভাতা ও সুযোগ সুবিধা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের স্বাক্ষরের পর বাংলায় ১৮ পৃষ্ঠায় দেয়া এ রায় সুপ্রিমকোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।
রিটকারী আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির (পল্লব) রায় প্রকাশের বিষয়টি জানান ।
রায়ে বলা হয়, এটা স্পষ্ট যে, গ্রাম পুলিশ ও মহল্লদাররা ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃক নিয়োগ পেয়ে প্রজাতন্ত্রের ৭০ প্রকার কাজে সার্বক্ষণিক নিয়োজিত থাকেন। সাধারণ মানুষের সবচেয়ে নিকটতম আত্মীয়ের মতো প্রজাতন্ত্রের কর্মে তারা নিয়োজিত। ঝড়-বৃষ্টি, বিপদ-আপদ উপেক্ষা করে তারা সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্য থাকেন। দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার কাকে বলে এরা জানে না।
গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর সংক্ষিপ্ত রায় দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।
রায়ে আরো বলা হয়, সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৩১ মোতাবেক আইনানুযায়ী কোনো ব্যক্তিকে তার ন্যায্য অধিকার থেকে তথা ন্যায্য প্রাপ্যতা থেকে তথা ন্যায্য প্রত্যাশা থেকে তথা আইনসম্মত অধিকার থেকে বঞ্চিত করা যায় না। দরখাস্তকারীরাসহ সব মহল্লাদার ও দফাদারগণের ন্যায্য অধিকার বিধিমালা ২০১১ অনুযায়ী বেতন-ভাতাদি পায়। কিন্তু প্রতিপক্ষগণ স্পষ্টত: দরখাস্তকারীগণ সহ সকল মহল্লাদার ও দফাদারগণকে ন্যায্য অধিকার থেকে বেআইনিভাবে দীর্ঘদিন ধরে বঞ্চিত করে আসছে।
রায়ের আদেশ অংশে বলা হয়, ২০১১ সালের ২ জুন হতে মহল্লাদারগণকে জাতীয় বেতন স্কেল ২০০৯ (বর্তমানে জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫) এর ২০তম গ্রেডে বেতন ভাতাদি প্রদান করতে এবং দফাদারগণকে জাতীয় বেতন স্কেল ২০০৯ (জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫) এর ১৯ তম গ্রেডে বেতন ভাতাদি প্রদান করতে নির্দেশ প্রদান করা হলো। ২০১১ সালের ২ জুন তারিখের পর হতে স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) কর্মচারী চাকরি বিথিমালা ২০১১ বহির্ভুতভাবে মহল্লাদার ও দফাদার এর যে কোনো নিয়োগ অবৈধ ও বেআইনি মর্মে গণ্য হবে। ওই তারিখের পর হতে বিধিমালা ২০১১ বহির্ভুত যে কোনো নিয়োগ আপনা আপনি বাতিল।
২০১৭ সালের ৩ ডিসেম্বর ঢাকার ধামরাইয়ের টুপিরবাড়ীর হাটকুশারা এলাকার বাসিন্দা লাল মিয়াসহ কয়েকজন গ্রাম পুলিশ সদস্য রিটটি দায়ের করেন। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে রুল জারি করেছিল হাইকোর্ট। ওই রুল যথাযথ ঘোষণা করে আজ পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করা হয়েছে।