অবহেলা করেই করোনায় আক্রান্ত ব্রাজিল প্রেসিডেন্ট
তিনি প্রায়ই বলতেন, ‘‘আমি অ্যাথলিট, করোনা আমায় ছুঁতেও পারবে না!’’ চতুর্থ বার পরীক্ষায় দেখা গেল, কোভিড পজিটিভ সেই ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জাইর বোলসোনারো-ও। উপসর্গ দেখা দেওয়ায় সোমবার পরীক্ষা করা হয়েছিল প্রেসিডেন্টের।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কিংবা ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের মতো জাইরও করোনা মহামারির প্রকোপকে কোনও গুরুত্ব দেননি । এপ্রিলে মন্তব্য করেছিলেন, ‘‘আমি যদি কোভিড-১৯-এ আক্রান্তও হই, চিন্তিত হব না। এটা তো একটা সাধারণ সর্দি-জ্বরের মতো অসুখ।’’ তখন অবশ্য ব্রাজিলে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৪০ হাজারের নীচে। এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৬ লক্ষে!
ভাইরাস ঠেকাতে মাস্ক পরা, সামাজিক দূরত্বের নিয়ম মানা এবং লকডাউনের বিরোধিতা করে আসা বোলসোনারো তার দেশের বিভিন্ন রাজ্যের গভর্নরদের সঙ্গেও দ্বন্দ্বে জড়িয়েছেন।
করোনাভাইরাসে পর্যুদস্ত ব্রাজিলে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করার একটি চেষ্টা গত সোমবার ভেটো ক্ষমতা প্রয়োগ করে আটকে দেন উগ্র ডানপন্থি মতাদর্শের এই রাজনীতিবিদ।
বিবিসি লিখেছে, কোভিড-১৯ কে সাধারণ সর্দি-জ্বরের সঙ্গে তুলনা করে গত এপ্রিলে বোলসোনারো বলেছিলেন, এ ভাইরাস তাকে মোটেও কাবু করতে পারবে না।
ওই মাসেই বোলসোনারোকে একবার কাশতে কাশতে লকডাউন-বিরোধী বিক্ষোভে হাজির হতে দেখা যায়। মুখে কোনো মাস্ক না পরে, হাতে গ্লাভস না পরেই বিক্ষোভ-সমাবেশে অংশ নেন বোলসোনারো।
সে সময় ব্রাজিলে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ৪০ হাজারের কাছাকাছি, মৃত্যুর সংখ্যা ছিল তিন হাজারের নিচে।
আর বোলসোনারোর নিজের যেদিন সংক্রমণ ধরা পড়ল, ততক্ষণে এ ভাইরাস ব্রাজিলে ৬৫ হাজারের বেশি মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে, আক্রান্ত করেছে ১৬ লাখের বেশি মানুষকে।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী শনাক্ত রোগীর সংখ্যায় ব্রাজিল এখন বিশ্বে দ্বিতীয়। এ দিক দিয়ে ব্রাজিলের চেয়ে এগিয়ে আছে কেবল ডনাল্ড ট্রাম্পের দেশ যুক্তরাষ্ট্র।
তবে পরীক্ষার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকায় ব্রাজিলে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃতের প্রকৃত সংখ্যা আরও অনেক বেশি বলে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের ধারণা।
ভয়ঙ্কর এই পরিস্থিতির মধ্যেও বোলসোনারো বলে আসছেন, ভাইরাস ঠেকানোর লকডাউন দেশের অর্থনীতির জন্য ভাইরাসের চেয়েও বেশি ক্ষতিকর।
সংবাদমাধ্যমগুলো এ ভাইরাস ও মহামারী নিয়ে অযথা আতঙ্ক ছড়াচ্ছে বলেও ব্রাজিলের প্রেসিডেন্টের অভিযোগ।