বিশ্বে শিক্ষা থেকে ঝরে পড়তে পারে প্রায় ১ কোটি শিশু
করোনাভাইরাসে থমকে আছে পুরো পৃথিবী। একই অবস্থা শিক্ষাঙ্গনেও। মহামারির কারণে বন্ধ থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো আবার চালু হলেও অন্তত ৯৭ লাখ শিশু ক্লাসে না ফেরার ঝুঁকিতে রয়েছে। সোমবার (১৩ জুলাই) এ তথ্য দিয়েছে সেভ দ্য চিলড্রেন।
ব্যাংকক পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্রিটিশ দাতব্য সংস্থাটি ইউনেস্কোর তথ্যের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, কোভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণে এপ্রিল থেকে বন্ধ থাকায় বিশ্বজুড়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাচ্ছে না প্রায় ১৬০ কোটি শিক্ষার্থী। যা বিশ্বের মোট শিক্ষার্থীর প্রায় ৯০ শতাংশ। সেভ আওয়ার অ্যাডুকেশন’ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘মানব ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বিশ্বব্যাপী একটি সম্পূর্ণ প্রজন্মের পড়াশোনা ব্যাহত হয়েছে।
শিক্ষাঙ্গন থেকে এ শিশুদের ঝরে পড়ার কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে দরিদ্রকে। করোনা মহামারির কারণে যে অর্থনৈতিক সংকট সৃষ্টি হচ্ছে তাতে আরও নয় কোটি থেকে ১০ কোটি ৭০ লাখ শিশুর শিক্ষায় প্রভাব ফেলবে দরিদ্রতা।
পরিবারের আর্থিক চাহিদা মেটাতে অনেক শিশুকে কাজে যেতে হবে উল্লেখ করে বলা হয়েছে, অনেক কন্যা শিশুকে বাধ্য করা হবে বাল্যবিয়েতে। ফলে স্থায়ীভাবে অন্তত ৯৭ লাখ শিশুকে বিদ্যালয় ছাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে সেভ দ্য চিলড্রেন।
তারা আরও সতর্ক করেছে, ২০২১ সালের মধ্যে স্বল্প ও মধ্য আয়ের দেশগুলোর শিক্ষা বাজেট সাত হাজার ৭০০ কোটি ডলার পর্যন্ত কমে যেতে পারে।
দাতব্য সংস্থাটি প্রতিটি দেশের সরকার ও দাতাদের অনুরোধ করেছে নতুন একটি শিক্ষা পরিকল্পনার জন্য বিনিয়োগ করতে। যাতে সব শিশু আবারো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফিরতে পারে এবং যতদিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলছে না ততদিন অনলাইনে ক্লাস করতে পারে।
সেভ দ্য চিলড্রেন বাণিজ্যিক ঋণদাতাদের অনুরোধ করেছে, স্বল্প আয়ের দেশগুলোকে দেয়া ঋণের কিস্তি সংগ্রহ বন্ধ রাখতে। যাতে দেশগুলো এই অর্থ শিক্ষা কার্যক্রমে ব্যয় করতে পারে।
প্রতিবেদনটিতে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকা ১২টি দেশের তালিকা প্রকাশ করেছে। তালিকায় রয়েছে আফ্রিকা মহাদেশের নাইজার, মালি, চাদ, লাইবেরিয়া, গিনি, মৌরিতানিয়া, নাইজেরিয়া, সেনেগাল ও আইভরি কোস্ট এবং এশিয়া মহাদেশের ইয়েমেন, আফগানিস্তান ও পাকিস্তান।