গাংনীতে প্রেমের ফাঁদে ফেলে স্কুলছাত্রীকে নিয়ে শিক্ষক উধাও ২৭দিন অতিবাহিত হলেও খোঁজ মেলাতে পারেনি প্রশাসন
মেহেরপুর প্রতিনিধিঃ
গাংনী প্রি-ক্যাডেট এন্ড হাই স্কুলে শিক্ষক নিয়োগে অর্থ ব্যানিজ্যের অভিযোগও প্রেমের ফাঁদে ফেলে স্কুলছাত্রীকে ভাগিয়ে নিয়ে শিক্ষক উধাও হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।ঘটনার ২৭দিন অতিবাহিত হলেও অদ্যাবধি তাদের কোন খোঁজ মেলেনি।নিখোঁজ মেয়ের বাবা জাহাঙ্গীর আলম(অবসরপ্রাপ্ত সেনাসদস্য)নিখোঁজের বিষয়য়ে গাংনী থানায় একটি সাধারণ ডাইরি করেছে।যার নং৪৭২ তারিখ-১১-১০-২০ইং।এবিষয়য়ে পুলিশ প্রশাসনও কোন হদিস মেলাতে পারেনি।
স্থানীয়রা জানান,গাংনী বেসরকারী প্রি-ক্যাডেট স্কুলে শিক্ষক নিয়োগে অর্থ বানিজ্যে করে লক্ষ লক্ষ টাকা হতিয়ে নিয়েছেন।নারীলোভী লম্পট শিক্ষক সাগর হোসেনেকে নিয়োগ দিতে স্কুলের শিক্ষক সাইফুল ইসলাম।সাগরের শুশরের নিকট থেকে ১লক্ষ টাকা নিয়ে তাকে নিয়োগ দেওয়ার ব্যবস্থা করে দেন।
এই দুজন শিক্ষক স্কুলের ছাত্রীদের কু প্রস্তাব দিয়ে থাকেন বলে জানা গেছে।কর্তৃপক্ষ তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহন করেনি।গাংনী প্রি-ক্যাডেট এন্ড হাই স্কুলের ১০ম শ্রেণির ছাত্রী ২৭ দিন নিখোঁজ থাকার পরেও স্কুল কর্তৃপক্ষ এব্যাপারে কোন ব্যবস্থা গ্রহন করেনি।
অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে,গাংনী পৌর সদরে অবস্থিত স্বনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গাংনী প্রি-ক্যাডেট এন্ড হাই স্কুলের ১০ম শ্রেণির ছাত্রী স্কুল বন্ধ থাকায় দীর্ঘদিন ধরে স্কুলের শিক্ষক সাইফুল ইসলামের ভাড়াবাড়িতে (ইংরেজী বিষয়ে) প্রাইভেট পড়তো।লম্পট শিক্ষক সাইফুল ইসলামের কাছে প্রাইভেট পড়ার সুবাদে একই বিদ্যালয়ের আরেক নারীলোভী লম্পট শিক্ষক সাগর হোসেনের মেয়েটির উপর লোলুপ দৃষ্টি পড়ে।
মিথ্যা বিয়ের প্রলোভনে ছাত্রীর সাথে প্রেমজ সম্পর্ক গড়ে উঠে।একপর্যায়ে সাইফুল ইসলামের সহযোগিতায় কয়েকদিন আগে মেয়েটি প্রাইভেট পড়ে বাড়ী যাওয়া পথে সাগর ফুসলিয়ে তাকে নিয়ে অজানার উদ্দেশ্যে পাড়ি জমায়।অনেক খোঁজাখুজি করেও তাদের ঠিকানা জানা সম্ভব হয়নি।
মেয়ের বাবা জাহাঙ্গীর আলম জানায়,আমার মেয়ে নিখোঁজ হওয়ার পর জানতে পেরেছি যে, গাংনী প্রি ক্যাডেট এন্ড হাই স্কুলের শিক্ষক সাগর হোসেন (যার স্ত্রী ও ৯ বছর বয়সী এককন্যা সন্তান রয়েছে) আমার মেয়েকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে বাড়ি ছেড়েছে।আমি মেয়েকে ফিরে পেতে চাই।
আমি গাংনী থানায় অপহরণ মামলা করতে চাইলে মামলা না নিয়ে অফিসার ইনচার্জ সাধারণ অভিযোগ গ্রহণ করেন।আমার ধারণা,সে আমার মেয়েকে কবিরাজ মতে মন্ত্রমুগ্ধ অথবা গাছ-গাছড়া দিয়ে বশ করিয়েছে।
একজন শিক্ষক এরকম অনৈতিক কাজ করাটা অশোভনীয়।
আরও জানা গেছে, শিক্ষক সাইফুল ইসলাম ১ম স্ত্রীকে তালাক দেয়ার পর অবৈধ সম্পর্ক গড়ে পরস্ত্রী ২ সন্তানের জননী কে বিয়ে করে ভাড়া বাড়িতে বসবাস করছে।
বর্তমানে স্কুল বন্ধ থাকায় উক্ত শিক্ষক তার ভাড়াবাড়িতে মেয়েদের কোচিং করানোর নামে অবৈধ মেলামেশা করছে।সাথে যুক্ত হয়েছে একই স্কুলের আরেক লম্পট শিক্ষক সাগর হোসেন।পরে জানা গেছে, মেহেরপুর শহরের চক্রপাড়ার আব্দুর রশীদের ছেলে।সে এর আগেও গাংনী উপজেলার হাড়িয়াদহ গ্রামের এক ছাত্রীকে নিয়ে লাপাত্তা থেকে পরে বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হয়।বর্তমানে তার সংসারে ৯ বছর বয়সী একটি কন্যা সন্তান রয়েছে ।
এরকম লম্পট শিক্ষক স্কুলে কিভাবে থাকে এমন প্রশ্নের জবাবে স্কুলের প্রধান শিক্ষক জালাল উদ্দীন সাংবাদিকদের জানায়,আমরা ঘটনাটি শুনেছি।এরকম অপবাদের কারনে তিন মাস আগে আমরা অভিযুক্ত সাগর হোসেনকে স্কুল থেকে বহিস্কার করেছি।এই ব্যাপারে কোন কিছু না লেখার জন্য অনুরোধ জানান তিনি।
এব্যাপারে শিক্ষক সাইফুল ইসলাম বলেন,আমার কাছে কোচিং করতো করোনার কারণে বর্তমানে কোচিং বন্ধ রয়েছে।সাগরের সাথে ছাত্রীর যে প্রেমজ সম্পর্ক গড়েছে আমার জানা ছিলো না।মেয়ের বাবা আমার নামে মিথ্যা অভিযোগ করেছে।
এই ঘটনা জানাজানি হলে অভিভাবকদের মাঝে বিরুপ প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।সচেতন মহল মনে করেন, স্কুলের শিক্ষক যদি এরকম অনৈতিক কাজে জড়িয়ে পড়ে তাহলে স্কুলে ছেলে মেয়েদের পাঠানো ঠিক হবে না।
এছাড়াও অনিয়মের মাধ্যমে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে সারাদেশে সামাজিক দুরুত্ব বজায় রাখতে দোকান পাট ও যানচলাচল বন্ধ ঘোষনা করেন। শিশু সুরক্ষার কারনে সরকারি বেসরকারি সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষনা করে সরকার।
সেখানে বেসরকারি গাংনী প্রি-ক্যাডেট স্কুল সরকারি প্রজ্ঞাপনকে উপেক্ষা করে স্কুলের শিক্ষকরা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়ে বেতন ও ফিস পরিশোধ করে খাতা ও প্রশ্ন পত্র সংগ্রহ করতে তাগিদ প্রদান করছেন।প্রশ্নপত্র সরবরাহ ও ছাপা নিদের্শনায় প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের সাথে যোগাযোগ না করেই মনগড়া সিদ্ধান্তে পুর্বপ্রস্ততি নিয়ে প্রশ্ন পত্র সংগ্রহ করেছিলো।এঘটনায় এর আগে অনেক পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।
এব্যাপারে গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওবাইদুর রহমান বলেন,আমি একটি অভিযোগ পেয়েছি মেয়েকে উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।তদন্ত পূর্বক আসামীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।