বদলে যাচ্ছে শিক্ষাব্যবস্থা
করোনা-পরবর্তী শিক্ষাব্যবস্থায় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনলাইনে অনুষ্ঠিত এক সভায় তিনি বলেন, করোনাকালীন ও করোনা-পরবর্তী সময়ে শিক্ষাব্যবস্থার কী ধরনের পরিবর্তন আনতে হবে, তা নিয়ে কাজ করছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
এদিকে মহামারি করোনা পরিস্থিতিতে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চলমান ছুটি আগামী ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। এমনকি আগামী বছরের মার্চ পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকতে পারে। আর সে কারণেই আগামী বছরের শিক্ষা কার্যক্রম কেমন হবে, তার প্রস্তুতি এখন থেকেই নেওয়া হচ্ছে।
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড শিক্ষার্থীদের জন্য আগামী জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত তিন মাসের অ্যাসাইনমেন্ট তৈরির প্রস্তুতি নিয়েছে। অন্যদিকে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর এখন থেকেই প্রস্তুতি নিয়েছে বছরজুড়েই অ্যাসাইনমেন্টের মাধ্যমে শিক্ষার্থী মূল্যায়ন করার
করোনার প্রভাব না থাকলেও চলবে অ্যাসাইনমেন্ট ব্যবস্থা। একই সঙ্গে চলতি শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থীর ঘাটতি পূরণেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে শিক্ষাবর্ষে। এ জন্য এই নতুন বইসহ পুরাতন বছরের বই শিক্ষার্থীদের সংগ্রহে রাখতে হবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, ২০২১ সালের ১ জানুয়ারিতে শিক্ষার্থীদের কাছে পাঠ্যবই পৌঁছে দেওয়া হবে।
অ্যাসাইনমেন্ট ব্যবস্থা ছাড়াও অনলাইনে পাঠদান, ভিডিও রেকর্ড করা পাঠদান চলবে। করোনা পরিস্থিতি না থাকলেও অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হবে সারা বছর।
এ বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. সৈয়দ গোলাম মো. ফারুক অনলাইন সংবাদমাধ্যম বাংলাট্রিবিউনকে বলেন, ফরমেটিভ অ্যাসেসমেন্ট আমরা দীর্ঘদিন থেকে চালু করার চেষ্টা করছি কিন্তু পারিনি।
কোভিড-১৯ পরিস্থিতির কারণে ফরমেটিভ অ্যাসেসমেন্টে নভেম্বর থেকে যেতে হলো। সেটা খুবই কার্যকর হয়েছে শিক্ষার্থীদের জন্য। শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা এটিকে ভালোভাবে নিয়েছে। এতে প্রমাণ হয়েছে পরীক্ষার মধ্য দিয়ে শেখা যায়। আগের বিদ্যমান পরীক্ষাব্যবস্থার মধ্য দিয়ে কিছু শেখার নেই। কী শিখেছে, তা যাচাই করা হতো। এই ব্যবস্থা শুধুই পরীক্ষানির্ভর। তাই করোনা না থাকলেও আমরা আগামী বছর ফরমেটিভ অ্যাসেসমেন্ট চালু রাখব।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর জানায়, অ্যাসাইনমেন্ট ব্যবস্থায় শিক্ষার্থীদের ফাঁকি দেওয়ার সুযোগ থাকবে না। কেউ অন্যের মাধ্যমে অ্যাসাইনমেন্ট কপি করলে বা অন্যের মাধ্যমে অ্যাসাইনমেন্ট তৈরি করলে শিক্ষকরা তা ব্যবস্থা নেবেন। প্রয়োজনে নতুন করে একই অ্যাসাইনমেন্ট করাবেন। যেহেতু এখানে পরীক্ষার মতো কোনও নম্বর দেওয়ার বিষয় নেই, তাই শিক্ষার্থীকে শেখানোর জন্য অ্যাসাইনমেন্ট দেওয়া হবে।
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) সদস্য (শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক ড. মশিউজ্জামান জানান, করোনার জন্য যদি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা না যায় তাহলে আগামী তিন মাসের (জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি ও মার্চ) অ্যাসাইনমেন্ট রেডি করব।
এ ছাড়া অনলাইন ক্লাস তো চলবেই। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা গেলেও অনলাইন ক্লাস চলবে। এ বছরের ঘাটতির জন্য কিছু নির্দেশনা তৈরি করা হয়েছে। এ ছাড়া আগামী বছর আমাদের একটি প্যাকেজ যাবে। নতুন কারিকুলামের কিছু কনটেন্ট যাবে পুরাতন কারিকুলামে। প্রজেক্ট ওয়ার্ক থাকবে শিক্ষার্থীদের জন্য।