মাথায় হাত চাষিদের, গাইবান্ধার আখ জয়পুরহাটে মাড়াই
কারখানার চাকা বন্ধ রেখে গাইবান্ধার রংপুর চিনিকল থেকে জয়পুরহাট চিনিকলে আখ পাঠাতে শুধু পরিবহন খরচই হচ্ছে ৫ কোটি ১৬ লাখ টাকা। আবার মাড়াই বন্ধ থাকলেও ঠিকই গুনতে হচ্ছে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা। এমন সিদ্ধান্তে মিলের ব্যয়ের সঙ্গে বেড়েছে হাজার হাজার চাষির দুর্ভোগ।
জমি থেকে কাটার পর প্রথমে আখ নেওয়া হয় গাইবান্ধার রংপুর চিনিকল চত্বরে। সেখান থেকে আবারও গাড়িবোঝাই করে পাঠানো হয় জয়পুরহাট চিনিকলে। প্রতিদিন ৭০০ মেট্রিক টন আখ পাঠানোর কথা থাকলেও নানা জটিলতায় গত ১১ দিনে পাঠানো হয়েছে মাত্র ৫ হাজার মেট্রিক টন। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন চাষিরা।
ভুক্তভোগী আখচাষি বলেন, আমার আখ গাড়িতে করে এই মিলে নিয়ে আসার পর সিএসি ওজন নিচ্ছিল না। যার কারণে তিন দিন ধরে আখের গাড়িতে আমাকে থাকতে হয়েছে।
এ স্তূপ থেকে আখ নিয়ে সামনের ক্যান কেরিয়ারে ফেললেই সম্ভব ছিল চিনি উৎপাদনের। অথচ এখান থেকে দেড়শ’ কিলোমিটার দূরে আখ পাঠানোর ফলে শুধু পরিবহনের জন্যই ব্যয় হচ্ছে কোটি কোটি টাকা।
প্রতি মেট্রিক টন আখ পরিবহনে ৯৯২ টাকা ধরে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ৫২ হাজার টন আখের জন্য ব্যয় হবে সোয়া পাঁচ কোটি টাকা। মিল চালু করলে এ অপচয় হতো না বলে মনে করেন স্থানীয়রা।
স্থানীয়রা জানান, এখানে মিল গেটে যে ২৩ হাজার মেট্রিক টন আখ আছে তার পরিবহন খরচ দেড় কোটি টাকা। এই মিল চালু থাকলে খরচ হতো ১ কোটি টাকা।
রংপুর চিনিকল পরিদর্শনকালে চিনিকলগুলোর ভবিষ্যৎ প্রশ্নে নতুন চেয়ারম্যানও শোনালেন পুরনো বাণী।
চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশন চেয়ারম্যান মো. আরিফুর রহমান অপু বলেন, আমরা ইনভেস্টর খুঁজছি। অনেকেই আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। এগুলো ন্যাশনাল ইন্টারন্যাশনাল বিভিন্ন দিক থেকেই আসছে।
রংপুর চিনিকল জোনে এবার সাড়ে পাঁচ হাজার একর জমিতে আখ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৫ হাজার মেট্রিক টনেরও বেশি। চিনিকলে মাড়াইয়ের সিদ্ধান্ত স্থগিতের পর আগামী মৌসুমের জন্য এখন পর্যন্ত চাষিদের সঙ্গে আখ চাষের চুক্তি হয়নি। এতে দুশ্চিন্তায় কর্মকর্তা-কর্মচারীর পাশাপাশি হাজার হাজার আখ চাষি।