আকাশপথে স্বর্ণ চোরাচালানে আলোচিত নাম বাংলাদেশ বিমান
DESK NEWS 4TV গত পাঁচ বছরে বিমানবন্দরে স্বর্ণ জব্দের ১৪টি ঘটনায় নাম এসেছে বাংলাদেশ বিমানের। এর মধ্যে করোনাকালেও গত এক বছরে ৪০ কেজি স্বর্ণ জব্দ করা হয়েছে। দেশে আকাশপথে স্বর্ণ চোরাচালানে সবচেয়ে আলোচিত নাম বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। চলতি বছরের ২২ ফেব্রয়ারি চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আবুধাবি থেকে আসা বিমানের একটি ফ্লাইট থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় প্রায় দেড়শ' স্বর্ণের বার আটক করা হয়। সাড়ে ১৭ কেজি ওজনের এ স্বর্ণের বাজারমূল্য প্রায় ১০ কোটি টাকা। যদিও আটক করা যায়নি সংশ্লিষ্ট কাউকেই। গত ২৯ এপ্রিল রাত ২টার দিকে দুবাই থেকে হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে আসা বিমানের বিশেষ ফ্লাইটে অভিযান চালিয়ে মেলে সোয়া তিন কেজি ওজনের ২৮টি স্বর্ণের বার। শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা উড়োজাহাজের একটি সিটের নিচ থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় স্বর্ণের বারগুলো উদ্ধার করেন। যার বাজার মূল্য দুই কোটি ছয় লাখ টাকা। এরপর বাংলাদেশ বিমানের উড়োজাহাজের ভেতর অভিযান চালিয়ে ছোটখাটো স্বর্ণের চালান উদ্ধার হয়। ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দুবাই থেকে আসা বিমানের একটি ফ্লাইটের টয়লেটসহ বিভিন্ন স্থানের স্ক্রু খুলে সাড়ে ৬২ কেজি স্বর্ণ ও স্বর্ণালংকার উদ্ধার করা হয়। যাত্রী নামানোর পর বিমানের বিশেষ বিশেষ স্থান থেকে স্বর্ণ উদ্ধার হওয়ায় এই চোরাচালানের সঙ্গে বাংলাদেশ বিমানের কর্মীরা জড়িত ছিলেন বলে মনে করে ঢাকা কাস্টমস হাউস। সংস্থাটি ২০১৫ সালের ১৭ ডিসেম্বর বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে একটি নোটিশও পাঠানো হয়। বিমান কর্তৃপক্ষকে এ ঘটনা তদন্ত করে দোষীদের নামের তালিকাসহ ১৫ দিনের মধ্যে নোটিশের জবাব দিতে বলা হলেও অজানা কারণে তার সুরাহা হয়নি আজও। শুল্ক গোয়েন্দা কর্তৃপক্ষের তথ্যমতে ২০১৭ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে, ১৭টি চালানের ১০টিই এসেছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসে। ২০১৩ সালের আগস্টে বাংলাদেশ বিমানের দুবাই থেকে আসা এ ফ্লাইটে দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে চাঞ্চল্যকর স্বর্ণের চালান উদ্ধার হয়। এয়ারবাস ৩১০ বিমানের কার্গো হোল্ডারে ১২৪ কেজি স্বর্ণ উদ্ধার করে শুল্ক গোয়েন্দা। এদিকে আবারও গতকাল বিমানের দুবাই ফেরত ফ্লাইটের টয়লেট থেকে স্বর্ণবার উদ্ধার করা হয়। উড়োজাহাজের ডাস্টবিন ও টিস্যু বক্সে মিলেছে ১৪ কেজি স্বর্ণের বার। এবারও কাউকেই আটক করতে পারেনি শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগ। তাদের দাবি, বিমানের কর্মী ছাড়া এমন চালান আনা সম্ভব নয়। গোয়েন্দাদের দাবি, চোরাচালান রোধে বিমানের কাছ থেকে কখনই সহযোগিতা পাওয়া যায় না। এ সময় এ ধরনের ঘটনায় ভবিষ্যতে উড়োজাহাজ জব্দের হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। বরাবরের মতো এই ঘটনাতেও কাউকেই আটক করতে পারেনি কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর। বিমানের কর্মচারীরা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করলেও কারও বিরুদ্ধে কোনো মামলা কিংবা কাউকে আটক করেনি সংস্থাটি। তবে এ ব্যাপারে কোনো সদুত্তরও নেই তাদের কাছে। সংবাদ সম্মেলনে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত বিভাগের মহাপরিচালক ড. মো. আব্দুর রউফ জানান, বিমানের কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হলে চোরাচালান সম্পর্কে আরও তথ্য পাওয়া সম্ভব হতো। আগামীতে উড়োজাহাজ জব্দের হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন।