রাজধানীতে গরমে তীব্র পানির সংকট
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে চলছে পানির তীব্র সংকট। গরমের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে আরো ভয়াবহ হচ্ছে সে সংকট। অধিকাংশ এলাকাতেই দিনে পানির দেখা মিলছে মাত্র দু-একবার। আবার কোথাও বা পানির সঙ্গে দুর্গন্ধ আর ময়লা থাকায় দুর্বিষহ হয়ে উঠছে নগরজীবন।
সরবরাহ লাইনে ত্রুটি আর ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়াকেই সংকটের কারণ বলছে ঢাকা ওয়াসা কর্তৃপক্ষ। শিগগিরই এ সংকট সমাধানের আশ্বাস দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
রাজধানীর মুগদায় ওয়াসার এই পানির পাম্পে মানুষের সার্বক্ষণিক ভিড়ই যেন নগরীর পানি সংকটের প্রতীকী রূপ। বাসায় নেই পানি, তাই ওয়াসার পাম্পে ছুটতে হচ্ছে নগরবাসীকে।
রাজধানীর মগবাজার, মধুবাগ, মীরবাগ, খিলগাঁও, আশকোনা, পুরান ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় কয়েক মাস ধরেই চলছে পানির সংকট। আর গ্রীষ্মকাল আসার পর নতুন করে সংকট দেখা দিয়েছে মিরপুর, মোহাম্মদপুর, নাখালপাড়াসহ আরো কয়েকটি এলাকায়।
অধিকাংশ এলাকায় পানির দেখা মিলছে দিনে মাত্র দু-একবার। আবার দুর্গন্ধময় ও ময়লাযুক্ত হওয়ায় সেই পানিও ব্যবহারের অনুপযোগী। নগরবাসীর অভিযোগ, কর্তৃপক্ষকে বারবার জানানো হলেও মিলছে না সমাধান।
রাজধানীর পানি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ঢাকা ওয়াসা বলছে, ২৩০ কোটি লিটার চাহিদার বিপরীতে ২৪৫ কোটি লিটার উৎপাদন সক্ষমতা থাকলেও সরবরাহ লাইনে ত্রুটি আর ভূগর্ভে পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়াই সংকটের কারণ।
ঢাকায় দৈনিক পানির চাহিদা ২৩০ কোটি লিটার। ঢাকা ওয়াসার উৎপাদন সক্ষমতা ২৪৫ কোটি লিটার।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সংকট নিরসনে সংস্কার করা হবে পানির সব লাইন। আর দীর্ঘমেয়াদে পানির টেকসই ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে হাতে নেয়া হয়েছে প্রায় ১৪ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ৩টি বৃহৎ প্রকল্প। এগুলো হচ্ছে যশলদিয়া, গর্ন্ধবপুর ও সায়েদাবাদ তৃতীয় ধাপ পানি শোধনাগার প্রকল্প।
ওয়াসার তিনটি বৃহৎ পানি শোধনাগার প্রকল্প
প্রকল্পের নাম----সরবরাহ লক্ষ্যমাত্রা---সময়সীমা
পদ্মা পানি শোধনাগার প্রকল্প----দৈনিক ৪৫ কোটি লিটার---২০১৯ সাল
গর্ন্ধবপুর পানি শোধনাগার প্রকল্প---দৈনিক ৫০ কোটি লিটার---২০২০ সাল
সায়েদাবাদ পানি শোধনাগার প্রকল্প ---দৈনিক ৪৫ কোটি লিটার---২০২১ সাল
ঢাকা ওয়াসা ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী তাকসিম এ খান বলেন, 'এই যে সমস্যাটা হয় সেটির মূল কারণই হলো ভূ-গর্বস্থ পানির ওপর ব্যবহার কমাতে হবে। কারণ এটা অপর্যাপ্ত না।'
ঢাকার অনেক বস্তিতেই রয়েছে পানির অবৈধ সংযোগ। চলতি বছরের মধ্যেই শতভাগ বস্তিকে বৈধ পানি সেবার আওতায় আনা হবে বলেও জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।