শাকিব খানের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার
চিত্রনায়ক শাকিব খান এখন মুক্ত। আবারও তিনি ক্যামেরার সামনে দাঁড়াতে পারবেন। দর্শক প্রেক্ষাগৃহে তার ছবি দেখতে পাবেন। শাকিব খানের ওপর আরোপ করা চলচ্চিত্র–সংশ্লিষ্ট ১২টি সংগঠনের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়েছে। আজ সোমবার দুপুরে রাজধানীর এফডিসিতে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন চিত্রনায়ক আলমগীর, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি মুশফিকুর রহমান গুলজার প্রমুখ।
এখানে আরও জানানো হয়, শিগগিরই চলচ্চিত্র–সংশ্লিষ্ট সবকটি সংগঠনকে নিয়ে একটি সমন্বয় কমিটি গঠন করা হবে। এ কমিটি চলচ্চিত্র শিল্পে সুষ্ঠু পরিবেশ ও শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার জন্য একটি নীতিমালা প্রণয়ন করবে। আর এই নীতিমালা মেনেই সবাইকে কাজ করতে হবে। যদি কেউ এই নীতিমালা ভঙ্গ করে, তাহলে তাকে শাস্তির আওতায় আনা হবে।
এদিকে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আজকের জরুরি সভায় চিত্রনায়ক শাকিব খানের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিষয়টি আলোচিত হয়েছে। একই ঘটনায় বাতিল করা পরিচালক শামীম আহমেদ রনির সদস্যপদ পুনর্বহালের বিষয়টি এখানে আলোচনা করা হয়নি। পরে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতি।
এর আগে দুপুর ১২টা নাগাদ চলচ্চিত্র–সংশ্লিষ্ট ১২টি সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির কার্যালয়ে জরুরি সভায় বসেন। তখন মুশফিকুর রহমান গুলজার চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, ‘সভায় উপস্থিত সবার মনোভাব ইতিবাচক। আশা করছি, শাকিব খানের ব্যাপারে ইতিবাচক কোনো সিদ্ধান্ত হতে যাচ্ছে।’
গতকাল রোববার বিকাল সাড়ে ৫টা নাগাদ বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতিতে এসে দুঃখপ্রকাশ করেন চিত্রনায়ক শাকিব খান। এ সময় তিনি সম্প্রতি ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ঘটনার জন্য উপস্থিত সবার কাছে ক্ষমা চেয়েছেন। শাকিব খান আশা করছেন, চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট ১২টি সংগঠন মিলে তার ওপর যে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে, তা প্রতাহার করে নেওয়া হবে।
চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি মুশফিকুর রহমান গুলজার গতকাল রোববার সন্ধ্যায় চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, ‘পুরো ব্যাপারটির মধ্যস্ততা করেছেন চিত্রনায়ক আলমগীর। তিনি হঠাৎ শাকিবকে নিয়ে চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতিতে এসে হাজির হন। সঙ্গে আরও ছিলেন মাসুদ পারভেজ সোহেল রানা। এ সময় শাকিব আমাদের সবার সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। এরপর একটি জাতীয় দৈনিকে তার দেওয়া মন্তব্যের কারণে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ঘটনার জন্য দুঃখপ্রকাশ করেন। তিনি সবার কাছে ক্ষমা চেয়েছেন।’
জানা গেছে, এ সময় শাকিব খান উপস্থিত বিভিন্ন সংগঠনের নেতাদের বলেন, ‘ব্যক্তিজীবনের সংকটময় পরিস্থিতিতে আমি কিছুটা বিক্ষিপ্ত ছিলাম। তখন আমার আচরণ ও কথায় যদি কেউ আহত হয়ে থাকেন, তাহলে আমি দুঃখিত। চিত্র পরিচালকসহ চলচ্চিত্র-সংশ্লিষ্ট কেউ কষ্ট পেয়ে থাকলে, আমি ক্ষমাপ্রার্থী।’
চিত্রনায়ক আলমগীর বলেন, ‘আমার এক কথায় শাকিব বিষয়টি মীমাংসার জন্য রাজি হয়ে যায়। শাকিবকে আমি বলেছিলাম, যে কোনো বিষয়ের একটা সীমা থাকে। সীমা লঙ্ঘন করলে ক্ষতি হয়ে যায়। এই সীমা লঙ্ঘন করা হলে আমাদের চলচ্চিত্র পরিবারের জন্য অনেক বড় ক্ষতি হবে। আমরা তো একসঙ্গে থাকতে চাই, মিলেমিশে চলতে চাই।’
শাকিব খানের এই সিদ্ধান্তের কারণে দৃশ্যপট পুরোপুরি পাল্টে যায়। গত শনিবার সন্ধ্যায় এফডিসিতে এক যৌথ সভায় চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট ১২টি সংগঠন মিলে তার ওপর যে নিষেধাজ্ঞা জারি করে, তা দ্রুত প্রত্যাহার করার সম্ভাবনা তৈরি হয়।