ঝিনাইদহে ভূমি সহকারী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ওয়ারেশ সনদ জাল করে অন্যের নামে নামপত্তন করার অভিযোগ
স্টাফ রিপোর্টার,ঝিনাইদহ Channel 4TV :
ঝিনাইদহের হরিশংকরপুরের সদ্য বিদায়ী ভুমি ইউনিয়ন সহকারি কর্মকর্তা মোঃ জহিরের বিরুদ্ধে ওয়ারেশ সনদ জাল করে অন্যের নামে নামপত্তন করার অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত কর্মকর্তা বিষয়টি ভুক্তভোগীদের ঠিক করে দিবেন বলে ভুল বুঝিয়ে অবসরে চলে গেছেন। বর্তমানে ভুক্তভোগীরা জনপ্রতিনিধিসহ বিভিন্ন দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। ভুক্তভোগীগণ অবিলম্বে ভুয়া নাম পত্তন বাতিলসহ অভিযুক্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রশাসনের উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের নিকট তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানিয়েছেন।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগে জানা গেছে, ঝিনাইদহ সদর উপজেলার হরিশংকরপুর ইউনিয়নের ২৩১নং নরহরিদ্রা মৌজায় ২২৬নং খতিয়ানের ১২০৯,১২১০ ও ১২১৩ নং দাগে যথাক্রমে ০৬,২৬ ও ২৭ শতকসহ সর্বমোট ৫৯ শতক জমির প্রকৃত ওয়ারেশ গনের নামে নামপত্তন না করে অর্থের বিনিময়ে বিদায়ী ভুমি সহকারি কর্মকর্তা মোঃ জহির নরহরিদ্রা গ্রামের নরেন্দ্রনাথ শিকদারের ছেলে কার্তিক চন্দ্র শিকদারের নামে নামপত্তন করে দিয়েছেন। এই জমির প্রকৃত ওয়ারেশ পূর্ন চন্দ্র সরকারের আপন পিসতুত ভাই শশাংক ভুষন অধিকারী ও বিজয় গোপাল অধিকারী। এই দু’জন মৃত হওয়ায় বর্তমানে এই জমির ওয়ারেশ সুশান্ত কুমার অধিকারী, প্রশান্ত কুমার অধিকারী, জীবন কুমার অধিকারী ও দীপক কুমার অধিকারী। ২২৬নং খতিয়ানভুক্ত খ তফসিলে ৫৯শতক জমিসহ ক তফসিলে আরো অনেক দাগ রয়েছে যা জেলা জজ আদালতের অধীনে অর্পিত সম্পত্তি ট্রাইবুন্যালে মামলাধীন অবস্থায় রয়েছে (যার মামলা নং-১৪৫৯/১৩)।
২০১৩ সালে একই খতিয়ানভুক্ত(২২৬ খতিয়ান) জমিসহ অন্যান্যে জমির মামলা রয়েছে। তারপরও একই খতিয়ানের ৩টি দাগের ৫৯শতক জমি কিভাবে ২০১৪ সালে মামলা বিচারাধীন অবস্থায় অন্যের নামে নামপত্তন করে দেওয়া হয়েছে। উপায়ন্তর না পেয়ে গত ২০১৭ সালের ১২ এপ্রিল এই জমি নামপত্তনের বাতিলের জন্য দীপক কুমার অধিকারী বাদী হয়ে কার্তিক চন্দ্র শিকদারকে বিবাদী করে সহকারী কমিশনার (ভুমি) কার্যালয়ে নামপত্তন বাতিলের জন্য একটি মিসকেস এন্ট্রি করেছেন(যার নং-৮০৩)। অভিযোগ উঠেছে সদ্য বিদায়ী ভুমি সহকারি কর্মকর্তা মোঃ জহির বিবাদী গনের কাছ থেকে মোটা অংকের উৎকোচ গ্রহন করে নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে নামপত্তন করে দিয়েছেন।
বিষয়টি মীমাংসা করে দিবেন বলে তিনি দীর্ঘদিন ধরে ভুক্তভোগীদের বিভিন্ন আশ্বাস দিয়ে আসছেন। বর্তমানে তিনি এলপিআরএ চলে গেছেন। অভিযোগ রয়েছে হরিশংকরপুর ইউনিয়ন ভুমি অফিসে যোগদানের আগে দুর্নীতির কারনে জেলা প্রশাসন তাকে ৩ বছর সাসপেন্ড করে রেখেছিলেন। অনেক চেষ্টা ও তদবির করে তিনি চাকুরী ফিরে পান। এরপর হরিশংকরপুর ইউনিয়ন ভুমি অফিসে যোগদান করে বেপরোয়া ঘুষ, দুর্নীতিতে মেতে উঠেন তিনি। টাকা হলেই তিনি একজনের জমি অন্য জনের দখল দেখিয়ে রিপোর্ট দেওয়া ও পরিত্যক্ত জমিকে দখলি জমি দেখানোসহ নানা ধরনের অপকর্ম করেছেন।
এরই মাঝে ২০১৪ সালে দীপকদের নামপত্তন না করে পূর্ন সরকারের (ক ও খ)তফসিল ভুক্তি নয় এমন কয়েক একর জমি নাপত্তন করে দেবে বলে এ্যাসিল্যান্ডের নাম করে কৌশলে নগদ ১লাখ ৯৪হাজার টাকা হাতিয়ে নেন। অনেক তদবিরের মাধ্যমে ৫০ হাজার টাকার চেক(হাটগোপালপুর সোনালী ব্যাংকে) ও নগদ ৫০ হাজার টাকা দেন ফেরৎ দেন। বাকি ৯৪ টাকা আজও দেওয়া হয়নি। এব্যাপারে ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তার সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জমি জাল নাম পত্তন করার কথা অস্বীকার করে বলেন আমি টাকা নিয়েছিলাম। কাজ করে দিতে পারেনি বলে ওই সময় আমি তার টাকা ফেরৎ দিয়েছি।