জঙ্গিবাদের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় নতুন জনবল নিয়োগে বাজেট বরাদ্দ
জনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে একটা খাত পুলিশকে দেওয়া হয়, সেখান থেকেই দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিতকরণ করা হয় বলে জানালেন নিরাপত্তা বিশ্লেষক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ও সাবেক নির্বাচন কমিশনার এম সাখাওয়াত হোসেন।
বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে প্রস্তাবিত ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন: সমসাময়িক জঙ্গিবাদের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় পুলিশ বাহিনীর সক্ষমতা বাড়াতে আধুনিক অস্ত্র-শস্ত্র ও প্রযুক্তিনির্ভর সরঞ্জামাদি সংযোজন এবং প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাসহ প্রয়োজনের নিরিখে নতুন জনবল নিয়োগের ব্যবস্থা আমরা গ্রহণ করবো।
সমসাময়িক জঙ্গিবাদের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আলাদা বাজেট বিষয়ে চ্যানেল আই অনলাইনকে এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন: বাজেটে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে জঙ্গিবাদ দূর করতে একটা খাত পুলিশকে দেওয়া হবে। যেখান থেকে অপারেশনের জন্য নতুন নতুন অস্ত্র শস্ত্র ও প্রযুক্তি নির্ভর সরঞ্জামাদি কেনা হয়।
গেল বছরের পহেলা জুলাই রাতে গুলশানের হলি আর্টিজানের জঙ্গি হামলায় নিহত ২০ জনের মধ্যে তিনজন ছিলেন বাংলাদেশি। যাদের মধ্যে দু’জন ছিল শিক্ষার্থী ও একজন কর্মজীবি নারী। এই ঘটনার পরে জঙ্গিবাদ দমনে সরকারকে বিশেষ নজর দিতে হচ্ছে।
গ্রীষ্মের ছুটিতে পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে ঢাকায় এসেছিলেন ফারাজ ও অবিন্তা। কিন্তু তাদের পরিবারের সঙ্গে ঈদ করা হয় নি; বরং আলিঙ্গন করেছেন মৃত্যুর সঙ্গে। বয়স মাত্র বিশ হয়েছিল ফারাজ হোসেনের। সামনে পড়ে ছিল অনন্ত সম্ভাবনা, উজ্জ্বল ভবিষ্যতের হাতছানি। সেই ফারাজকে প্রাণ দিতে হলো জঙ্গিদের নৃশংসতায়।
গুলশানের হোলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গিদের হামলায় নিহতের মধ্যে ফারাজ আইয়াজ হোসেন ও অবিন্তা কবীর ছিল যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়ার এমোরি ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী।
অন্য একজন বাংলাদেশি হচ্ছেন ঢাকা আর্ট গ্যালারির সাবেক প্রধান ইশরাত আখন্দ। ছিলেন শিল্পীদের স্বপ্নের রূপকার। শিল্পী না হয়েও শিল্প আর শিল্পীর টানাপোড়েন খুব টের পেতেন যিনি। শিল্পীদের টানাপোড়েন থেকে রক্ষা করতে গড়ে তুলেছিলেন ইনস্টিটিউট অব আর্ট এন্ড কালচার। লক্ষ্য ছিলো শিল্প ও সাহিত্যের সমন্বয়ে জীবনের সমৃদ্ধি। জীবনকে হাসিমুখে দেখতে চেয়েছিলেন ইসরাত।কিন্তু তাকেই জঙ্গিদের হামলায় নির্মমভাবে মৃত্যুবরণ করতে হয়।
দেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে সংসদে বাজেট অধিবেশনে অর্থমন্ত্রী বলেন: আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সময়োপযোগী ব্যবস্থা গ্রহণের ফলে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস ও নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠনসমূহের তৎপরতা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়েছে।
আবুল মাল আব্দুল মুহিত বলেন: জাতীয় প্রতিরক্ষা এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা কাজে নিয়োজিত প্রতিষ্ঠানসমূহের সক্ষমতা বাড়াতে আমরা আধুনিক অস্ত্র-শস্ত্র ও প্রযুক্তিনির্ভর সরঞ্জামাদি সংযোজন করছি। সম্প্রসারণ করেছি বাহিনীসমূহের প্রশিক্ষণ সুবিধা। অবকাঠামোগত উন্নয়নসহ বাহিনীসমূহের আধুনিকায়নের এ প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
এছাড়া, নারী পুলিশ সদস্যদের আবাসন সমস্যা নিরসনকল্পে বিভিন্ন জেলায় ৫৬টি মহিলা ব্যারাক নির্মাণের উদ্যোগও আমরা গ্রহণ করেছি বলে জানান অর্থমন্ত্রী।