দেশের প্রথম নারী বিচারপতি অবসরে যাচ্ছেন
দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের একমাত্র নারী বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা অবসরে যাচ্ছেন। সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী আগামী জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে তিনি অবসরে যাচ্ছেন।
দেশের ইতিহাসে আপিল বিভাগের প্রথম ও একমাত্র নারী বিচারপতি হলেন নাজমুন আরা সুলতানা। এছাড়া হাইকোর্টে থাকাকালীনও তিনি প্রথম নারী বিচারপতি ছিলেন।
আগামী জুলাইয়ের ৭ তারিখ অবসরে নাজমুন আরা সুলতানা অবসরে গেলে আপিল বিভাগে আপাতত আর কোনো নারী বিচারপতি থাকছেন না।
নাজমুন আরা সুলতানা ১৯৫০ সালের ৮ জুলাই মৌলভীবাজারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম আবুল কাশেম মঈনুদ্দীন ও মাতা বেগম রশীদা সুলতানা।
তিনি ময়মনসিংহের বিদ্যাময়ী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৬৫ সালে এসএসসি, ১৯৬৭ সালে মুমিনুন্নেসা উইমেন্স কলেজ থেকে এইচএসসি এবং আনন্দ মোহন কলেজ থেকে ১৯৬৯ সালে বিএসসি ডিগ্রি অর্জন করেন।
ছোটবেলায় বাবাকে হারানো নাজমুন আরা সুলতানা বাবার ইচ্ছানুযায়ী মোমেনশাহী ল’ কলেজে ভর্তি হন। ১৯৭২ সালে তিনি এলএলবি পাস করেন।
এরপর ময়মনসিংহ জেলা আদালতে আইনজীবী হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন তিনি। ১৯৭৪ সালের আগে দেশে নারীদের বিচারক হওয়ার বিধান ছিলো না। তবে ১৯৭৪ সালে এই বিধান উঠিয়ে নেয়ায় তার বিচারক হওয়ার পথ সুগম হয়।
১৯৭৫ সালের ২০ ডিসেম্বর বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে তিনি মুনসেফ পদে চাকরি পান। চাকরিজীবনে দেশের বিভিন্ন জেলায় বিচারক হিসেবে কাজ করার পর ২০০০ সালের ২৮ মে তিনি হাইকোর্টে অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান।
এরপর আপিল বিভাগের প্রথম নারী বিচারপতি হিসেবে ২০১১ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি শপথ নেন তিনি। সাংগঠনিক জীবনে তিনি বাংলাদেশ মহিলা জজ অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি।
তার দেয়া উল্লেখযোগ্য রায়ের মধ্যে রয়েছে ফতোয়া অবৈধ, সেনানিবাসে খালেদা জিয়ার বাড়ি অবৈধ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি বাতিলসহ আরও অনেক রায়।