লালমোহনে শ্বশুরের প্ররোচনায় স্ত্রীর মামলা।বাংলাদেশ ব্যাংক কর্মকর্তা কারাগারে।
এম.ইউ মাহিম।
জেলা প্রতিনিধি,ভোলা : দ্বীপের রানী ভোলার লালমোহন উপজেলার বদরপুরের তেতুলিয়া নদী বিধৌত পুণ্যভুমি চরকচ্ছপিয়া,নাজিরপুর দফাদার বাড়ীর মোঃ রতন দফাদারের পুত্র বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী ব্যবস্থাপক মোঃ মহিউদ্দীন তার শ্বশুর ডাঃ হুমায়ুনের প্ররোচনায় স্ত্রী মোসাঃ জেরিন আফসানা (শোয়াইবা) কর্তৃক যৌতুকের মামলায় এখন শ্রীঘরে। মামলার বিবরন সুত্রে ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এস আই মোঃ পনির খাঁন লালমোহন থানার সাথে কথা বলে জানা যায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১১গ/৩০ মামলা নং ১৮,লালমোহন থানা।
এতে বাদী মহিউদ্দীনের স্ত্রী মোসাঃ জেরিন আফসানা(শোয়াইবা) মামলায় ১ নং বিবাদী তার স্বামী- ব্যাংকার মহিউদ্দীন, অন্যান্য বিবাদী করা হয়েছে মহিউদ্দীনের বাবা রতন দফাদার, মা রোকেয়া বেগম, বোন নুপুর ও ভাই ফরহাদ কে।মামলার বিবরনীতে বলা হয়
বিয়ের পর স্বামী মহিউদ্দীনকে নগদ পাঁচ লক্ষ টাকা ২ ভরি স্বর্নের চেইন,১ ভরি স্বর্নের আংটি, ৩ ভরি স্বর্নের হাতের চুরি দেওয়া হয়।এরপরেও স্বামী মহিউদ্দীন ও বিবাদীরা আরও পাঁচ লক্ষ টাকা যৌতুক দাবী করে তাকে বিভিন্ন সময় মারপিট করতে থাকে।
সর্বশেষ গত ২৭/৬/১৭ ইং সকালে তাকে অন্যান্য বিবাদীদের প্ররোচনায় স্বামী নির্যাতন করে।
মহিউদ্দীনের পারিবারিক সুত্রে জানা যায় সামাজিক ভাবে ওদের বিয়ে হয়েছে গত তিন বছর।প্রেম ভালবাসায় পরিপুর্ন ছিল এ যুগলের জীবন। মহিউদ্দীন তার স্ত্রীর প্রতি যথেস্ট দায়িত্বশীল ও অসম্ভব ভালবাসত তার প্রিয়তমা স্ত্রী শোয়াইবাকে। আদর,ভালবাসা ও সোহাগের কোন কমতি ছিলনা তাদের দাম্পত্য জীবনে। স্ত্রীর সকল আবদার অনায়াসেই পুরন করত সরল মনের মহিউদ্দীন। নিজ স্ত্রীর মামলায় গ্রেফতার হয়েও ভুলে যাননি প্রিয়তমা স্ত্রীকে।হৃদয়ে স্ত্রীর প্রতি অনন্ত গভীর ভালবাসার পরিচয় দিয়েছেন।কারাগারে যাওয়ার পুর্বে তার স্ত্রীকে সংবাদটি পৌছে দিতে ও তার প্রতি লক্ষ্য রাখার জন্য বলে যান সরল মনের বাংলাদেশ ব্যাংকের এ মেধাবী কর্মকর্তা।কারাগারে মহিউদ্দীন কে দেখতে যাওয়া এক দর্শনার্থী ও প্রতিবেদককে জানান, মহিউদ্দীন তাকে বলেছে সে তার স্ত্রীকে নিয়ে এখনো সংসার করতে রাজী আছে, তার মধ্য ভালবাসার কোন কমতি হয়নি।এ কথাটি যেন শোয়াইবাকে গিয়ে জানায়।
প্রিয়তমা স্ত্রীর প্রতি অগাধ ভালবাসার আরও প্রমান দেখা যায় রোমান্টিক মুডে থাকা স্ত্রীর ছবিসহ মহিউদ্দীনের এফবি পেজে। গভীর প্রেম ভালবাসায় পুর্ন হঠাৎ কেন এই সুইট যুগলের দাম্পত্য জীবনে এমন ছন্দপতন!!
এই প্রশ্নের জবাব খুজতে গিয়ে মহিউদ্দীনের পিতা রতন দফাদারকে প্রশ্ন করা হলে তিনি কস্টের এক দীর্ঘশ্বাস------ ফেলে
অভিযোগের আঙ্গুল তুলেন বেয়াই ডাঃ হুমায়ুনের দিকে। তিনি বলেন বিয়ের পর হতে আমার ছেলে মহিউদ্দীনকে বেয়াই ডাঃ হুমায়ুন ঘর জামাই রাখতে চান।আমার আরও এক ছেলে এক মেয়ে মহিউদ্দীন ও পুত্রবধু শোয়াইবাসহ ঢাকার বাসায় থাকে।আমার দুই ছেলে মেয়ে সেখানে থেকে লেখাপড়া করে এটা তার সহ্য হয়না। আমার জম্মদাতা ছেলে আমাদের সংসারে খরচ দিবে আমার ছেলে মেয়েকে খরচ দিবে এটা সে মানতে পারেনা। আমার ছেলে তার ঘর জামাই হয়ে থাকেনা বিধায় সে তার মেয়েকে দিয়ে আমার ছেলে মহিউদ্দীনকে প্ররোচিত করত। এ ঘরজামাই থাকা নিয়ে আমার পুত্রবধু শোয়াইবার সাথে আমার ছেলে মহিউদ্দীনের মাঝে মধ্য কথা কাটাকাটি ও ঝগড়া হত। মহিউদ্দীন তার শ্বশুর ও স্ত্রীর কথা মানেনা বিধায় তার শ্বশুর ডাঃ হুমায়ুনের কুপরামর্শে মেয়েকে দিয়ে এ মামলা করেছে।মামলা করার পর ডাঃ হুমায়ুন তার মেয়ের নামে ৫ কানি জমি দাবী করেন। পুত্রবধু শোয়াইবার আনীত ৫ লক্ষ টাকার যৌতুকের অভিযোগ সম্পুর্ন মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে তিনি দাবী করেন।তিনি বলেন আমার ছেলে বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন অফিসার। তার অবস্থা কি এত খারাপ হয়েছে তার শ্বশুরের নিকট হতে ৫ লক্ষ টাকা যৌতুক নিতে হবে। তার মন অনেক বড়, আপনি প্রয়োজনে এলাকায় এসে এলাকাবাসীকে জিজ্ঞাসা করেন।পুত্রবধু শোয়াইবাকে কোন নির্যাতন ও করা হয়নি বলে তিনি দাবী করেন।দাম্পত্য জীবনে ছোট খাট ভুল বুঝাবুঝি থাকবেই। এটা সব পরিবারেই হয় বলে তিনি জানান। পুত্রবধুর মামলায় যাদের স্বাক্ষী করা হয়েছে তাদের সম্পর্কে রতন দফাদার বলেন এদের সাথে আমাদের পারিবারিক বিরোধ রয়েছে। তারপরেও এরা কেউই কোর্টে গিয়ে স্বাক্ষী দিবেনা বলে তিনি মন্তব্য করেন।স্বাক্ষীদের নিয়ে রতন দফাদারের মন্তব্যর
সত্যতা জানতে মামলার ১নং স্বাক্ষী হাসিনা বেগম ও ৩ নং স্বাক্ষী গজনবী মিয়াকে তাদের মোবাইল নাম্বারে সাংবাদিক পরিচয়ে ঘটনাটি জানতে চাইলে লাইনটি কেটে দেয়া হয় পরে পুনরায় ফোন দিলে তারা আর রিসিভ করেনি।এদিকে মামলাটির ১নং বিবাদী মহিউদ্দীনের পিতা
রতন দফাদারের বক্তব্য জানার পর প্রতিবেদক মহিউদ্দীনের স্ত্রী মামলার বাদী শোয়াইবাকে মোবাইলে ফোন দিলে তার নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।পরে শোয়াইবার আম্মা মহিউদ্দীনের শ্বাশুরীর নাম্বারে একাধিকবার ফোন করে এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি অসুস্থ তার বাবার বাড়িতে আছেন বলে কথা বলতে রাজি হননি।অনেক অনুরোধের পর তিনি তার স্বামী মহিউদ্দীনের শ্বশুর ডাঃ হুমায়ুনের সাথে কথা বলতে বলেন। ডাঃ হুমায়ুনকে ফোন করে সাংবাদিক পরিচয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি লাইনটি কেটে দেন।পরে পুনরায় ফোন করা হলে তিনি আর রিসিভ করেননি।মামলার ১নং বিবাদী মহিউদ্দীনের পরিবারের তরফ হতে আনীত অভিযোগের প্রেক্ষিতে মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা এস আই পনির খাঁনের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন বিষয়টি তদন্ত চলছে তারা যদি তদন্তে অপরাধী না হন তাহলে নির্দোষ প্রমানিত হবেন।
ঘটনাটি জানার জন্য ঐ এলাকায় গেলে এলাকাবাসীর অনেকেই জানান শৈশব হতে অসম্ভব মেধাবী এ তরুন ব্যাংক কর্মকর্তা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় হতে রসায়ন বিজ্ঞানে অনার্স মাস্টার্স করে বাংলাদেশ ব্যাংকে সহকারী ব্যবস্থাপক হিসেবে যোগদান করেন।তরুন উদীয়মান এ ব্যাংকার এলাকার সবারই প্রিয় পাত্র। ছোট বড় সবাই ওরে খুব স্নেহ করে ভালবাসে। মানুষের বিপদে আপদে সুখে, দুখে মহিউদ্দীন পাশে এসে দাড়ান। কারও অসুখ হলে চিকিৎসা না চললে তিনি নিজ খরচে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন।
মহিউদ্দীন ঈদ উৎসবে বাড়ি আসলে গ্রামের গরীব মানুষদের জন্য ঈদের জামাকাপড় কিনে দেন।ধনী গরীব ভেদাভেদ ভুলে সাদামনে সকলের সাথে মিলে মিশে ঈদের আনন্দ উপভোগ করেন নিরহংকারী এ ব্যাংক কর্মকর্তা।ষাটোর্ধ বৃদ্ধ এক চাচা এসে বললেন এ্যাবার ঈদে ছেলেডা আমারে এ্যাকটা নোতুন জামা ও ১০০০ এক হাজার ট্যায়া দিছিল।এ কথা বলে তিনি অঝোড় ধারায় কাঁদতে থাকেন। এলাকার এমন একটি ভদ্র,পরোপকারী নিরীহ, নিরপরাধ,ছেলেকে শ্বশুর ডাঃ হুমায়ুনের প্ররোচনায় স্ত্রী শোয়াইবা কর্তৃক মিথ্যা যৌতুকের অভিযোগে কারাগারে যাওয়ায় এলাকার সবাই বিস্মিত। এলাকার সকলে তার নিঃশর্ত মুক্তি ও মামলা প্রত্যাহারের জন্য শ্বশুর ডাঃ হুমায়ুন ও তার স্ত্রীর প্রতি আহবান জানান। এলাকার আরও অনেক কে বলতে শোনা যায় কিছু ডাক্তারের গলাকাটা ভিজিট,অপ্রয়োজনীয় টেস্ট,ওষুধ দেয়ার কারনে জনগন তাদের ডাক্তার নামক কষাই বলে ডাকে। ডাঃ হুমায়ুন তার জামাই সরলমনা,ভদ্র, নিরীহ ছেলে তরুন উদীয়মান ব্যাংক কর্মকর্তা মহিউদ্দীন কে তার মেয়েকে দিয়ে মিথ্যা যৌতুকের অভিযোগে মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠিয়ে কি সেই পশু জবাই করা কষাইয়ের পরিচয় দিলেন?
দাম্পত্য জীবনে টুক টাক ভুল বুঝাবুঝি থাকবেই।ডাঃ হুমায়ুন সাহেব তার মেয়ে ও জামাইয়ের সাথে যদি মনোমালিন্য হয়ে থাকে তাহলে সেটা পারিবারিক ভাবে বসে বা সালিশ মিমাংসায় সমাধান করতে পারতেন।তিনি জামাইকে মামলা দিয়ে জেল হাজতে পাঠিয়ে একজন শিক্ষিত ভদ্র,সজ্জন, মানুষের পরিচয় দেননি।এতে কি তিনি শুধু তার নিজেরই মান সম্মান নস্ট করেছেন, নিজের ভাবমুর্তি ও চরম ক্ষুন্ন করেছেন।মানুষ কি এটাকে ভাল দৃস্টিতে দেখছে,মানুষ তাকে নিয়ে ঘৃনাভরে ছি, ছি, করছে।
সামাজিক ভাবে শরীয়াহ মোতাবেক এ যুগলের বিয়ে হলেও প্রেম,আদর আর ভালবাসায় স্ত্রী শোয়াইবা মহিউদ্দীনের নিকট ছিলেন "স্বর্গের অপ্সরী।
স্বর্গের অপ্সরী কে নিয়ে ব্যাংক কর্মকর্তা সাজিয়েছিলেন একটি সুন্দর ফুলের বাগানও। সে সাজানো ফুলের বাগানে ফুলের সৌরভ আর নতুন ফুল না ফুটতেই কি দুটি ফুলের বিচ্ছেদ হবে??
স্বার্থবাদী ঘরজামাই করে রাখতে চাওয়া ডাঃ হুমায়ুনের প্ররোচনায় মিথ্যা যৌতুকের মামলায় কি এখানেই থেমে যাবে তিন বছরের মধুর এ দাম্পত্য জীবন।এটাই কি প্রিয়তমা স্ত্রীকে স্বর্গের অপ্সরীর মত ভালবাসার করুন পরিনতি? নিরীহ,নিরপরাধ,তরুন উদীয়মান,
মেধাবী ব্যাংক কর্মকর্তা মহিউদ্দীন কি পাবে ন্যায় বিচার? এ প্রশ্ন আজ চরকচ্ছপিয়া সহ নাজিরপুর এলাকার সর্বস্তরের জনতার।।