গাংনীতে এসি-ল্যান্ডের অসদাচরণ ও দুর্নীতির প্রতিবাদে মুক্তিযোদ্ধার সাংবাদিক সম্মেলন
মেহেরপুর প্রতিনিধি : গাংনী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি)এর স্বেচ্ছাচারিতা, জমি সংক্রান্ত বিষয়ে নামজারিসহ সেবাগ্রহিতাদের সাথে অসদাচরণ, দুর্ব্যবহার, উৎকোচ গ্রহন সর্বোপরি দুর্নীতির প্রতিবাদে স্বাধীনতা সংগ্রামের অকুুতভয় সৈনিক একজন মুক্তিযোদ্ধা সাংবাদিক সম্মেলন করেছে। মঙ্গলবার দুপুরে গাংনী উপজেলা পরিষদের সাব রেজিস্টার অফিসের সামনে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা ঐক্য পরিষদের সভাপতি বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হান্নান গাংনী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এসএম জামাল আহমেদ এর নানা অপকর্ম তুলে ধরে সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন।
উপজেলার ধর্মচাকী গ্রামের মৃত সাবদার আলীর ছেলে মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হান্নান লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করে সাংবাদিকদের জানান, চেংগাড়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায় আমার জামাতা ও মেয়ে যথাক্রমে নুরুল ইসলাম ও নাজনীন আক্তারের নামে আনুমানিক ১৫/১৬ বছর পূর্বে খোষ কবলায় খরিদকৃত ২.৫০ শতক এবং ০৮ শতক জমি খরিদ করার পর শরিকানা সমস্যার কারনে দেওয়ানি মামলা (২৪/১৭) বিচারাধীন রয়েছে। য়ার খতিয়ান নং-সিএস-১০৭, এসএ-১০১, আরএস-৪৩৯, (দাগ নং-১৬১/১৯৫) ভুক্ত ১৭ শতক জমির উপর পাকা বাড়ী রয়েছে।দীর্ঘদিন পর জমির মালিক নবীছদ্দীনের স্ত্রী আনোয়ার খাতুনের সাথে দেওয়ানি মামলা বিচারাধীন রয়েছে।এদিকে রোকনুজ্জামান নামের জনৈক ব্যক্তি আনোয়ার নিকট থেকে জমি খরিদ সূত্রে ভূমি অফিসে খারিজের জন্য আবেদন করে। হয়রানি ও প্রতারনা করতে রোকনুজ্জামান জমির ক্রেতা ছাড়াও অনেকের নামে ভূয়া নোটিশ জারী করে আসছিল। এদিকে গত ৩০-০৭-১৭ ইং তারিধে এসি ল্যান্ড এসএম জামাল আহমেদ রোকুজ্জামানের নিকট থেকে মোটা অংকের উৎকোচ নিয়ে অথচ এসি ল্যান্ড আদালতে বিচারাধীন মামলা থাকা সত্বেও তার অফিস থেকে সার্ভেয়ার আজগর আলী ও অফিস সহায়ক রফিকুল ইসলামকে চেংগাড়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায় নুরুল ইসলামকে না জানিয়ে দখলীয় জমি পরিমাপ করতে পাঠান। একপর্যায়ে নুরুল ইসলাম সার্ভেয়ার কে জমি পরিমাপ করতে নিষেধ করলে তারা ফিরে এসে এসি ল্যান্ডের কাছে তাদেরকে মারধর,আঘাত করা এবং সরকারী কাজে বাঁধা দিয়েছে বলে মিথ্যা তথ্য দেয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে এসি ল্যান্ড নুরুল ইসলামের নামে গাংনী থানায় এজাহার করেন এবং সেমতে মামলা এফআইআর করা হয়। খবর পেয়ে আমি আমার মেয়েকে নিয়ে ভূমি অফিসে এসি ল্যান্ডের সাথে দেখা করতে চাইলে তার পিয়ন মারফত জানান, আমাদের সাথে তিনি কথা বলবেন না।পরবর্তীতে আমি অপেক্ষা করে ভুমি অফিসারের সাথে অফিসে ঘটনা জানতে এবং জমি খারিজ করার বিষয়ে আবেদন করা এবং অফিসে ইনকোয়ারী স্লিপ জমা থাকার পরও আপনি জমি খারিজ করা এবং জমি পরিমাপ করতে পারেন কিনা জানতে চাইলে তিনি আমার উপর ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন, আমি আপনার নিকট জবাব দিতে বাধ্য নই। আমি সার্ভেয়ার এবং পিয়নকে মারধর করার বিষয়টা মিথ্যা বলতেই এসি ল্যান্ডয়ার আমাকে শুয়ারের বাচ্চা, আমার অফিস থেকে বের হয়ে যা। আমি একজন বৃদ্ধ এবং মুক্তিযোদ্ধা । এছাড়াও আমার একটি ছেলে বিসিএস অফিসার। এসি ল্যান্ড এই কথা শুনে আমার উপর চড়াও হয় এবং পিয়নদের বলেন আমাকে ঘরে আটকিয়ে রাখার জন্য। পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরিফ-উজ-জামান এসে আমাকে চলে যেতে বলেন।পরবর্তীতে আমার জামাতা নুরুল ইসলামের নামে গাংনী থানায় মিথ্যা মামলা করে নিজেদের দোষ ঢাকতে নাটক করছেন। একজন মুক্তিযোদ্ধাকে শুয়ারের বাচ্চা বলে অকথ্য ভাষায় গালি গালাজ করা এবং অফিস থেকে বের করে দেয়ার বিচার চাই। নইলে প্রতিবাদে আরও বৃহত্তর কর্মসূচী গ্রহন করা হবে বলে তিনি জানিয়েছেন। সাংবাদিক সম্মেলনে মুক্তিযোদ্ধা মাহবুব এলাহী, দেলোয়ার হোসেনসহ বেশ কয়েকজন উপস্থিত ছিলেন।
এব্যাপারে এসি ল্যান্ড এসএম জামাল আহমেদ জানান, ১৭ শতক জমির মধ্যে মাত্র সোয়া এক শতক জমির বিপরীতে মামলা বিচারাধীন অন্যদিকে বাদী রোকনুজ্জামান ১৫.৮৩ শতাংশ জমির আদালতের রায় নিয়ে আসায় যেহেতু ইনজাঙ্কশন নেই সেহেতু আমার জমি পরিমাপ করতে কোন বাঁধা নেই।