দ্বিতীয় দফা বন্যায় পানিবন্দি অর্ধকোটি মানুষ
নদ-নদীর পানি কমতে থাকায় দেশের উত্তরাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও দক্ষিণ-মধ্যাঞ্চলে পরিস্থিতি অবনতি হয়েছে। নতুন করে বন্যা দেখা দিয়েছে, নাটোর, মুন্সীগঞ্জ, শরীয়তপুর ও রাজবাড়ীর বিভিন্ন নিচু এলাকায়।
এদিকে, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর জানিয়েছে, দ্বিতীয় দফার এ বন্যায় দেশের এক তৃতীয়াংশ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে অন্তত অর্ধকোটি মানুষ। দুর্গত এলাকায় বিশুদ্ধ পানি ও খাদ্য সংকট চরম আকার ধারণ করেছে।
ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, দুধকুমার ও যমুনা নদীর পানি দ্রুত কমতে থাকায় দেশের উত্তরাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে।
তবে কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র ও ধরলার পানি এখনো বিপদসীমার ওপর দিয়ে বইছে। নিম্নাঞ্চলের রাস্তাঘাট, বাড়ি-ঘর থেকে পানি না কমায় এখনো ঘরে ফিরতে পারছেন না বানভাসী মানুষেরা। সব হারিয়ে অনেকেই খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছেন। সরকারি ও বেসরকারি ত্রাণ বিতরণ করা হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় সামান্য। ত্রাণ না পাওয়ার অভিযোগ বেশির ভাগ মানুষের।
আত্রাই, পদ্মা ও আড়িয়ালখার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় দক্ষিণ-মধ্যাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি কোথাও অপরিবর্তীত আবার কোথাও কোথাও অবনতি হয়েছে।
আত্রাই নদের পানি বিপদসীমার ৬০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বন্যা দেখা দিয়েছে নাটোরে।
মাদারীপুরে পদ্মা ও আড়িয়ালখার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। পদ্মার তীব্র স্রোতে দেশের গুরুত্বপূর্ণ শিমুলিয়া-কাঠালবাড়ি রুটে ফেরি চলাচল ব্যাহত হচ্ছে।
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে পদ্মা নদীর পানি প্রবাহিত হচ্ছে বিপদসীমার ১০৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে। পানি উঠে যাওয়ায় শুক্রবার থেকে গোয়ালন্দ স্টেশন পর্যন্ত ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। সদর, কালুখালী ও পাংশা উপজেলার নদী তীরবর্তী এলাকা প্লাবিত হয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ফসলের।
মুন্সীগঞ্জে পদ্মার পানি বেড়ে প্লাবিত হয়ে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে নদী তীরবর্তী শ্রীনগর, লৌহজং ও টঙ্গিবাড়ী উপজেলার ১০ হাজার পরিবার। টঙ্গিবাড়ি উপজেলার দিঘীরপাড় ইউনিয়নে নদী ভাঙনে ৮টি বাড়ি বিলীন হয়ে গেছে। হুমকির মুখে রয়েছে শতাধিক বাড়ি-ঘরসহ বিভিন্ন স্থাপনা।
মৌলভীবাজারে মনু নদী ও ধলাই নদীর পানি বিপদ সীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে কুশিয়ারার পানি সিলেটের শেওলা পয়েন্টে বিপদসীমার ৪৭ সেন্টিমিটার ও শেরপুর ব্রিজ পয়েন্টে বিপদসীমার ১০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এদিকে, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর জানিয়েছে, দ্বিতীয় দফার এ বন্যায় দেশের এক তৃতীয়াংশ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে অন্তত অর্ধকোটি মানুষ। দুর্গত এলাকায় বিশুদ্ধ পানি ও খাদ্য সংকট চরম আকার ধারণ করেছে।
বন্যা দুর্গত এলাকা পরিদর্শন ও দুর্গতদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করতে রোববার দিনাজপুর ও কুড়িগ্রাম সফর করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সফরকে কেন্দ্র করে এই দুই জেলায় বন্যা কবলিত মানুষের মাঝে ব্যাপক আশার সঞ্চার হয়েছে। বাড়ি-ঘর নির্মাণসহ পুনর্বাসনে প্রধানমন্ত্রী প্রয়োজনীয় সাহায্য প্রদান করবেন এমনটাই প্রত্যাশা তাদের। এদিকে, প্রধানমন্ত্রীর এ সফরকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তা জোরদার করছে প্রশাসন