মাত্রাতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিপর্যয় বেনাপোলে
শহিদুল ইসলাম,বেনাপোল প্রতিনিধি : মাত্রাতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের কবলে পড়েছে দেশের সবচেয়ে বড় স্থলবন্দর বেনাপোল এলাকা। দিনের অধিকাংশ সময় বিদ্যুৎ না থাকায় কাস্টমস, বন্দর ও এর সঙ্গে সম্পৃক্ত সহস্রাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কাজকর্ম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এলাকাবাসীকেও।
গুরুত্বপূর্ণ এ স্থানটিতে ২৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য বন্দর সফরে আসা সরকারি কর্মকর্তা-মন্ত্রী-এমপিদের কাছে অনেকবার দাবি জানিয়ে এলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। ফলে সপ্তাহে ৭ দিনে ২৪ ঘণ্টা বাণিজ্য সচল রাখতে সবাইকে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন জানান, বেনাপোল বন্দর এলাকায় প্রায় ৮শ সিঅ্যান্ডএফ প্রতিষ্ঠান সরকারকে রাজস্ব পরিশোধের মাধ্যমে আমদানি ও রপ্তানি পণ্য ছাড় করানোর কাজ করছে। এছাড়া বন্দর, কাস্টমস অফিস এবং আন্তর্জাতিক পুলিশ ইমিগ্রেশন রয়েছে। কিন্তু সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ না থাকায় ব্যাহত হচ্ছে বাণিজ্য।
বেনাপোল বন্দর আমদানি-রফতানি সমিতির সিনিয়র সহ-সভাপতি আমিনুল হক জানান, বন্দর এলাকায় আমদানি-রফতানি বাণিজ্যে সম্পৃক্ত সরকারি-বেসরকারি প্রায় তিন হাজার প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে ১৫ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান। প্রতিবছর এ বন্দর দিয়ে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকার পণ্য আমদানি হচ্ছে। যা থেকে সরকার প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আয় করছে। এটি এশিয়া মহাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম স্থলবন্দর হলেও অবকাঠামো উন্নয়নে এখনো অবহেলিত।
বেনাপোল বন্দর এলাকায় বসবাসরত জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, বছরজুড়ে এখানে বিদ্যুৎ সমস্যা। এখন তা আরো বেড়েছে। গত ১৫ দিন ধরে বেনাপোল বন্দর এলাকায় দিনের অধিকাংশ সময় বিদ্যুৎ থাকছে না। প্রতিদিন রাত ১২টার পর বিদ্যুৎ যাচ্ছে, আর আসছে ভোর ৫টায়। সারাদিন খাটা-খাটুনির পর যদি রাতে একটু ঘুমাতে না পারি তাহলে দিনভর কাজ করা কঠিন হয়ে পড়ে।
ব্যবসায়ী মফিজুর রহমান জানান, কম গরুত্বপূর্ণ এলাকায় বিদ্যুতের সরবরাহ ভালো থাকলেও বেনাপোল বন্দরে বিদ্যুৎ থাকে না। দির্ঘদিন ধরে এখানকার মানুষের দাবি বাণিজ্যের স্বার্থে ২৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহের। কিন্তু সেই স্বপ্ন আজও পূরণ হয়নি। এটি অত্যন্ত দুঃখের বিষয়।
বন্দরের উপ-পরিচালক (প্রশাসন) রেজাউল বলেন, দিনের বেশিভাগ সময় বিদ্যুৎ না থাকায় আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য পরিচালনায় অফিসিয়াল কার্যক্রম চালাতে খুবই কষ্ট হচ্ছে। বর্তমানে জেনারেটরের উপর নির্ভর করে অফিস চলছে। বন্দর এলকায় এখন সপ্তাহে ৭ দিন ২৪ ঘণ্টা কাজ চলছে। তাই এখানে ২৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ জরুরি।
শার্শা পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের অভিযোগ কেন্দ্রের প্রধান আওলাদ হোসেন জানান, দেশে সার কারখানাগুলোতে বিদ্যুৎ সরবরাহের কারণে বেনাপোল বন্দর এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ কমানো হয়েছে।