এক রাতে রাস্তার ইট উধাও গাংনীর চাঁদপুরে পূর্ব শত্রতার জেরে মসজিদের রাস্তা বন্ধ করেছে প্রভাবশালীমহল
এম এ লিংকন মেহেরপুর প্রতিনিধি ঃ গাংনী উপজেলার রাইপুর ইউনিয়নের অন্তর্গত চাঁদপুর গ্রামে পূর্ব শত্রæতার জেরে মসজিদের রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে গ্রামের প্রভাবশালী মহল।এমনকি ২ বছর আগে এলজিইডি নির্মিত হেরিং বন্ডের ১০০ গজ রাস্তার ইট রাতের আঁধারে তুলে নিয়ে গেছে অস্তিত্ববিহীন চাঁদপুর আদর্শ ক্লাবের সদস্যরা।ফলে ধর্মপ্রান মুসুল্লীরা মসজিদে যেতে বাঁধাপ্রাপ্ত হচ্ছেন।এরকম অমানবিক ঘটনাটি ঘটেছে চাঁদপুর স্কুলপাড়া জামে মসজিদ কে কেন্দ্র করে।গত বৃহস্পতিবার রাতে গ্রামের প্রভাবশালী রতন মাস্টার, ঠান্ডু ডাক্তার ও স্কুল কমিটির সভাপতি রুমেনের নেতৃত্বে রাস্তার ইট তুলে নেয়া হয়।এর আগে ঈদের পরের দিন মসজিদে যাওয়ার রাস্তাটি বাঁশের রেলিং দিয়ে ঘিরে বন্ধ করে দেয়া হয়।গ্রামের রতন মিয়া ও আসলাম আলী নামের দুটি পরিবারের মধ্যে বিবদমান বিরোধের জের ধরে এই ঘটনা ঘটেছে বলে এলাকাবাসীর ধারনা।সরেজমিনে ঘুরে গ্রামবাসীসূত্রে জানা গেছে,চাঁদপুর স্কুল পাড়ায় মুসুল্লীদের জন্য সম্মিলিত প্রচেষ্টায় একটি জামে মসজিদ নির্মাণ করা হয়। যার নাম দেয়া হয় স্কুল পাড়া জামে মসজিদ।এক পর্যায়ে গ্রামের মেম্বর,মোড়ল মাতব্বরদের আবেদনের প্রেক্ষিতে মুসুল্লীদের যাতায়াতের জন্য সরকারীভাবে এলজিইডি হেরিং বন্ডের রাস্তা নির্মাণ করে দেয়। কিন্তু একটি মহল এই মসজিদের রাস্তা নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র করে একপর্যায়ে রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে। মুসুল্লীরা এহেন কর্মকান্ডের তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।ক্ষমতাধর প্রভাবশালী মহলের বিরুদ্ধে গ্রামের কেউ সত্য কথা সাহস পাচ্ছে না।
ঘটনার বিবরণে জানা গেছে, খেলার মাঠের দক্ষিণ-পশ্চিম কর্ণারে সহোদর হারান ও কুড়নের ২ কাঠা জমির উপর বাঁশ ঝাড় ছিল। এই জমিটুকু বিক্রির ঘোষনা দিলে ক্লাবের পক্ষ থেকে ক্রয়ের কথা বলা হলেও দীর্ঘ দিনেও তা পারেনি।একপর্যায়ে গ্রামের অন্যজন কানাডা প্রবাসী আসলাম হোসেন কুড়নের অংশটুকু ক্রয় করেন। তার স্বপ্ন ঐ মসজিদের পাশে তিনি একটি এতিমখানা নির্মাণ করবেন।এদিকে ক্লাবের সদস্যরা হারানকে ভয়ভীতি দেখিয়ে কোন টাকা পয়সা না দিয়ে তার বাঁশ ঝাড়টি কেটে জবরদখল করে নেয়। পাশাপাশি মসজিদের হেরিং বন্ড রাস্তা রেলিং দিয়ে আটকিয়ে দেয়া হয়।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে,একটি কুচক্রীমহল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের খেলার মাঠ প্রশস্ত করার নামে মাঠ সংলগ্ন বসবাসকারী ইমরানের নিকট থেকে দেড় লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে। এই টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে তার বাড়ীতে যাতায়াতের রাস্তা বন্ধ করে দেয়া হয়। ইমরান হোসেন এ প্রতিবেদককে জানান, আমি গরীব মানুষ। অনেক কষ্ট করে একটি ছেলেকে বিদেশে পাঠিয়েছি। আমার নিকট দেড় লক্ষ টাকা চাঁদা চাওয়া হয়েছে আমি দিতে পারেনি বলে আমার বাড়ীতে যাতায়াতের রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে।একইসাথে প্রতিবেশী হুদাইফা, টেংগর ও তার সন্তানদের রাস্তাও বন্ধ করা হয়েছে।
এব্যাপারে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি রুমেন জানান, দুই বছর আগে রাস্তাটি নির্মিত হলেও স্কুল কমিটির আপত্তি ছিল।তবে ইমরানের নিকট চাঁদা চাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, আমরা ঐ টাকা দিয়ে খেলার মাঠ সম্প্রসারনে ব্যয় করতে চেয়েছিলাম।আর ইট তোলার বিষয়টি গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় স্কুল মাঠে বৈঠকশেষে অধিকাংশ গ্রামবাসীর সিদ্ধান্তক্রমে করা হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার রাতে রাস্তার ইট তোলার বিষয়টি উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনকে অবহিত করা হলেও এব্যাপারে কোন আইনগত ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি।
বিষয়টি সরেজমিনে তদন্তপূর্বক মসজিদের রাস্তা বন্ধ করা ও সরকারী রাস্তা ভেঙ্গে ফেলার অপরাধ খতিয়ে দেখে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে সচেতন মহলের দাবী।