রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারের প্রতি আহবান
রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারের প্রতি আহবান জানিয়েছেন ৪০ দেশের কূটনীতিকরা। কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তারা। রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে ইতিবাচক ভূমিকা রাখার পাশাপাশি মানবিক বিপর্যয়ে বাংলাদেশের পাশে থাকার কথা জানান।
এদিকে, মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা চার লাখ রোহিঙ্গার মধ্যে দুই লাখেরও বেশি শিশু মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে জানিয়ে জরুরী সহায়তার আহবান জানিয়েছে জাতিসংঘের শিশু তহবিল-ইউনিসেফ। এদিকে পালিয়ে আসার সময় নাফ নদীতে আবারো নৌকাডুবির ঘটনা ঘটেছে। এ পর্যন্ত ৭ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
মিয়ানমারে দমনপীড়নের মুখে গত ২০ দিনে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে প্রায় চার লাখ রোহিঙ্গা। তারা কক্সবাজার ও বান্দরবানের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। এ অবস্থায় রোহিঙ্গা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে বুধবার কক্সবাজার যান যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ভারত, যুক্তরাজ্যসহ ৪০ দেশের কূটনীতিকের একটি দল।
বেলা ১২টার দিকে কক্সবাজার পৌঁছান তারা। কুতুপালং ও বালুখালী শরণার্থী ক্যাম্প ঘুরে দেখেন, কথা বলেন রোহিঙ্গাদের সঙ্গে। এসময় তাদের সঙ্গে ছিলেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।
বিদেশি কূটনীতিকরা সাংবাদিকদের বলেন, একসঙ্গে এতো মানুষকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য সত্যিই বাংলাদেশ প্রশংসার দাবি রাখে। এ পরিস্থিতি আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে তুলে ধরা হবে। রোহিঙ্গাদের ওপর হামলা বন্ধ করে রাখাইনে স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনতে এবং রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমার সরকারের প্রতি আহবান জানান তারা।
এদিকে, এক বিবৃতিতে জাতিসংঘের শিশু তহবিল ইউনিসেফ জানিয়েছে, রোহিঙ্গাদের মানবিক সংকট ক্রমেই বড় আকার ধারণ করছে। আর এই সঙ্কটে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে আছে শিশুরা।
বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া নতুন শরণার্থীর ৬০ ভাগই শিশু উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, বড় ধরনের স্বাস্থ্য ঝুঁকি এড়াতে ক্যাম্পগুলোতে সুপেয় পানি এবং পয়ঃনিস্কাশনের ব্যবস্থা করা দরকার। সেজন্য প্রাথমিকভাবে ৭৩ লাখ ডলার প্রয়োজন, যা আরও বাড়বে বলে জানায় সংস্থাটি।
এরইমধ্যে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সময় মঙ্গলবার রাতে টেকনাফে আরো একটি রোহিঙ্গাবাহী নৌকাডুবি হয়েছে। এ ঘটনায় সাতজনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ নিয়ে গত ২৫ আগস্ট থেকে কক্সবাজার ও বান্দরবানের বিভিন্ন স্থানে ১০২ জন রোহিঙ্গার মৃতদেহ পাওয়া গেছে। গত ২৪ আগস্ট মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সহিংস ঘটনার পর আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর দমনপীড়নের মুখে প্রতিদি্ই হাজার হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করছেন।