দাগনভূঞা পৌর মেয়রের বিরুদ্ধে এডিপির (২০১৬-১৭ ) অর্থবছরের বরাদ্ধকৃত ২১ টি প্রকল্পের অর্থের কাজ না করার অভিযোগ
এম.রফিকুল ইসলাম (চট্টগ্রাম) : দাগনভূঞা পৌরসভার মেয়র ওমর ফারুক খানের বিরুদ্ধে ২০১৬-১৭ অর্থ বছরের এডিপি(এশিয়া ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক) থোক বরাদ্দ ও নিজস্ব অর্থায়নে (রাজস্ব) কাজ না করে অর্থ আতœসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জানা যায়,এডিপি ও নিজস্ব অর্থায়নে (রাজস্ব) থোক বরাদ্দ থেকে ২১ টি প্রকল্পের অনুকুলে ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা বরাদ্ধ দেয়া হয়। প্রকল্পগুলোর কোন কাজ না করে মেয়র ওমর ফারুক খান ও সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারগন উক্ত টাকা আতœসাত করছে ।
স¤প্রতি স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রনালয় থেকে উক্ত প্রকল্প গুলোর কাজের অগ্রগতি জানার জন্য প্রতিবেদন চাওয়া হলে থলের বিড়াল বেরিয়ে আসে।
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে পৌরসভার প্যানেল মেয়র ও বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত মেয়র সাইফুল ইসলাম বলেন, দাগনভূঞা পৌরসভার কোথাও ২০১৫-১৬ ও ২০১৬-১৭ অর্থবছরে বরাদ্ধকৃত কাজের কোথাও কোন কাজ হয়নি । তিনি আরো বলেন, আমাদের অন্য কাউন্সিলর বৃন্দরাও এ বিষয়ে আপনাদেরকে আরো তথ্য দিতে পারবে বলে আমি মনে করছি। পরবর্তীতে পৌরসভার সচিব সূর্য কান্তি সাহা ও ইঞ্জি: মাসুদ এর সম্মুখে ৩নং ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর নুরুল হুদা সেলিমের কাছে জানতে চাইলে, যে আপনি আপনার এলাকায় বরাদ্ধকৃত কাজের কত শতাংশ কাজ করেছেন। সে প্রশ্নে তিনি ভালো কোন জবাব দিতে পারে নাই।
প্রকল্প গুলো হচ্ছে, নেয়াজ মেম্বারের বাড়ির পুকুরে, হারাধন ডাক্তার বাড়ির রোড়ে, বাবুলদের বাড়ির পুকুরে, খেজুর গাছ তলা উত্তর শ্রীধরপুর রোড়ে,কালভাটের পাশে, হাজী ক্লিনিকের পেছনের রোড়, মাজার রোড়ের প্লাসাইডিং কাজ ৩ লাখ ৬৬ হাজার ৩৫৬, আলাইয়ারপুর চৌকিদার বাড়ি, মাঝি বাড়ি, আইয়ুব আলী ড্রাইভারের বাড়ির রোড়ে বাকী অংশ সলিং, ১ লাখ ২১হাজার ২৪৭, সবুজের বাড়ি রোড় ম্যাকাডম কাজ ৬৯ হাজার ৩৪৬, উত্তর শ্রীধরপুর মসজিদ কার্পেটিং ৫৩ হাজার ১৩৩, সিদ্দিক নুরেন্নেসা স্কুল রোড়ের বাকী অংশ ম্যাকাডম কাজ ৭৭ হাজার ৯৮২, ইমান আলী হাজী রোড় উন্নয়ন ৮৫ হাজার ৫৯১, সুদ্রæ বাড়ি রোড ম্যাকাডম কাজ, বেতুয়া রোড়ে গাইড ওয়াল সংলগ্ন প্যালাসাইডিং ও গার্ড ওয়ালের রং এবং বিদ্যুতিক খুটি স্থাপন ১৫ লাখ ৩৬ হাজার ৩৫৭, নতুন গলি সিসি দ্বারা উন্নয়ন ১ লাখ ৯২ হাজার ৩ শত ২৫, দাস পাড়া রোড়ে উন্নয়ন ৮ লাখ ২১ হাজার ৩৪১, দাসপাড়া রোড়ের ড্রেন নির্মাণ ১৪ লাখ ৬ হাজার ৫২১, হাসপাতাল রোড়ের উন্নয়ন ৩ লাখ ২৩ হাজার ২০৬, পেন্টাগন হাসপাতাল রোড় উন্নয়ন ১০ লাখ ৬৪ হাজার ৮, দোস্ত মোহাম্মদ ভূইয়া বাড়ির রোড়ের কার্পেটিং ৫ লাখ ৪৫ হাজার ৬৫,ফারুক মিয়ার বাড়ির রোড়ের ম্যাকাডম দ্বারা উন্নয়ন ২ লাখ ৯৫ হাজার ৮৩০, রহিম আমিনের বাড়ির দরজার সলিং ৮২ হাজার ৫৬, হাজী জাফর মিয়ার বাড়ির রোড় ম্যাকাডম ৩ লাখ ৪৩ হাজার ৯৯১,মনু মোল্লা বাড়ীর পাশ্বের গাইড ওয়াল নির্মান ১ লাখ ৬৩ হাজার ১৮১,উপজেলা বিজয় চত্ত¡র টাইলস দ্বারা উন্নয়ন ২ লাখ ৭০ হাজার ১৪, মোস্তফা মেম্বার বাড়ির দরজা বাকী অংশ সলিং ৬১ হাজার ১৫৭ সহ সর্বমোট ২১ টি প্রকল্প।
প্রকল্পের কাজের বিষয়ে পৌরসভার ইঞ্জিনিয়ার মাসুদ জানায় আমরা সবে মাত্র কাজ শুরু করেছি। কিন্তু সময় পার হয়ে যাবার পরেও কেন বরাদ্ধকৃত কাজ শেষ হয়নি ? এ বিষয়ে তিনি তেমন কোন জবাব দিতে পারে নাই। তিনি আরো বলেন আমাদের মেয়র সাহেব দেশে আসলে তিনি আপনাদের ভালো করে বুঝিয়ে বলতে পারবে । পৌরসভার হিসাব রক্ষন শাখায় জানতে চাইলে দায়িত্বরত সোহেল জানায়, উক্ত প্রকল্পের টাকা আমাদের পৌরসভার একাউন্টে জমা হয়েছে কিন্তু এর বেশি কিছু আমি এখন বলতে পারবো না।
একাধিক পৌর নাগরিক জানান, গত ১বছরে পৌরসভার পক্ষ থেকে কোন রাস্তা ঘাটের উন্নয়ন করা হয়নি। মানুষ রিকসা নিয়েও অধিকাংশ রাস্তায় চলাচল করতে কষ্ট হয়। আর সেখানে এক বছরে ১কোটি ২৫ লাখ টাকার উন্নয়ন ডাহা মিথ্যা। তারা এ বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের সহযোগীতা কামনা করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক পৌর কাউন্সিলর জানান, তারা উন্নয়নের নামে এ অর্থ আতœসাতের ঘটনায় তারা লজ্জিত।তাদেরকে না জানিয়ে পৌরসভার কয়েক কর্মকতা ও কয়েক সিন্ডিকেট ঠিকাদারের সহযোগীতায় মেয়র এ কাজটি করেছে। তাদেরকেও আইনের আওতায় আনার দাবী জানান তারা।