নওগাঁয় ৭২৫ টি মন্ডপে হবে শারদীয় দূর্গাপুজা
মাসুদ রানা , (নওগাঁ ):সনাতন ধর্মাম্বলী হিন্দু সম্প্রাদয়ের সবচেয়ে বড় উৎসব দূর্গাপূজা। এ উপলক্ষে নওগাঁয় ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমা তৈরীর কারিগররা। সাম্প্রতিক দেশে বড় ধরনের বন্যার কারণে কিছুটা লোকসানের মুখে পড়তে হয়েছে কারিগরদের।
জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, জেলার ১১টি উপজেলায় এ বছর ৭২৫ টি মন্ডবে দূর্গা পূজা অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে সদর উপজেলা ও পৌরসভা মিলে ১০৪ টি, মহাদেবপুরে ১৪৬ টি, মান্দায় ১১০ টি, বদলগাছী ৮৯ টি, পতœীতলা ৭৩ টি, নিয়ামতপুর ৫৭ টি, আত্রাই ৪৮ টি, রানীনগর ৪২ টি, ধামইরহাট ২৩টি, পোরশায় ২০ টি এবং সাপাহার ১৩ টি।
এ বছর নৌকায় চড়ে আসছেন মা দূর্গা দেবী। আর ঘোড়ায় চড়ে গমন করবেন। অনেক আগ থেকেই সেই আগমনী বার্তা। আর সেই মাকে বরণ করে নিতে সনাতনধর্মালম্বী হিন্দু সম্প্রাদয়ের সবচেয়ে বড় উৎসব দূর্গা পূজার চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি। দেড় মাস আগ থেকেই শুরু হয় প্রতিমা তৈরীর প্রস্তুতি চলছে। এখন চাহিদা মোতাবেক প্রতিমাগুলো হস্তান্তর করতে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ব্যস্ত সময় পার করছেন কারিগরা। ইতোমধ্যে অবকাঠামোগত খড়, কাঁদা মাটির প্রলেপ শেষ হয়েছে। চলছে রং তুলির আচড়। এদিকে মন্ডবে মন্ডবে চলছে সৌন্দর্য বর্ধনে প্যান্ডেল তৈরীর কাজ। আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে দুর্গোৎসবের মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। ২৯ সেপ্টেম্বর বিজয়া দশমীর মধ্য দিয়ে ৫ দিনব্যাপী এ উৎসব শেষ হবে।
প্রতিমা তৈরীর সরঞ্জামের দাম কিছুটা বৃদ্ধি এবং আবহাওয়া বিড়ম্বনা ও ঘনঘন বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ে কাজের কিছুটা বিঘœ ঘটছে।
শহরের ঘোসপাড়া ‘মা লক্ষ্মী শিল্পালয়’ প্রতিমা কারিগর গজেন পাল বলেন, প্রতিমা তৈরীর উপকরনের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু বাড়েনি প্রতিমা ও মজুরির দাম। এবছর খড় ৬০০ টাকা পুন (৮০ আটি), বাঁশ ৩০০-৩৫০ টাকা দাম। এছাড়া গুড়া ও মাটির দামও বেশি। সারা বছর কাজ করে তেমন লাভ না থাকলে দূর্গা পূজার মৌসুমে কাজ করে তা পুশিয়ে নেয়া যায়। প্রতিটি প্রতিমা কাঠামোগত ও সৌন্দর্যের উপর ২০ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়। তবে বন্যার কারণে লোকজনের হাতে অর্থ কম থাকায় তারা অনেকটাই খরচ কমিয়ে দিয়েছে।
শহরের কালীতলা মহল্লায় ‘বুড়ী মা শিল্পালয়’ প্রতিমা তৈরীর কারিগর নন্দ দুলাল সাহা বলেন, আবহাওয়া কারণে প্রতিমা শুকানো নিয়েও সমস্যা। এছাড়া ঘন ঘন বিদ্যুৎ বিভ্রাট হওয়ায় কাজের ব্যঘাত হচ্ছে। প্রয়োজনীয় সময় বিদ্যুৎ না থাকায় প্রতিমায় মেশিন দিয়ে রং করা সম্ভব হচ্ছেনা।
জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ কমিটির সাধারন সম্পাদক বিভাস মজুমদার গোপাল বলেন, উৎসব সবার। পূজা হিন্দুদের। এই উৎসবে ধর্মবর্ণ নির্বিশেষে সবাই সহযোগীতা করে থাকেন। জেলায় বসবাস প্রায় তিন লাখ হিন্দু সম্প্রদায়ে মানুষের এ অনুষ্ঠান সুষ্ঠু ও সুন্দর ভাবে পালন করতে পারি। প্রতিবারের মত এ বছরও শান্তিপূর্ণ ভাবে পূজা অনুষ্ঠিত হবে বলে আশা ব্যক্ত করেন তিনি।
নওগাঁর পুলিশ সুপার ইকবাল হোসেন বলেন, এবার পূজা মন্ডব গুলো ঝুঁকিপূর্ন না থাকলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে তিন স্তুরের নিরাপত্তাসহ ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। পুলিশের পাশাপাশি আনসার-ভিডিপির সদস্যরাও দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়া গুরুত্বপূর্ন মন্ডবগুলো সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় রাখা হবে।