আশুলিয়ায় দোসাইদ ধর্ষনের ৪ দিন পর তরুণীর সন্ধান; থানায় মামলা
সাভারঃ আশুলিয়ায় দোসাইদ এলাকায় এক নারী পোশাক কারখানার শ্রমিককে বেড়ানোর কথা বলে ধর্ষন করেছে বখাটেরা। গত শুক্রবার বিকেলে আশুলিয়া দোসাইদ ঈদগাহ মাঠ সংলগ্ন র্যাংগস গ্রুপের পরিত্যক্ত গোডাউনের ভিতরে এ ঘটনা ঘটেছে। তবে ধাপা চাপা দেয়ার চেষ্টা করেছিলো প্রভাবশালী একটি মহল।তবে গণমাধ্যম ও স্থাণীয়দের চাপে চারদিন পরে নিযাতিত তরুণীকে খুঁজে বের করলো পুলিশ।এছাড়া ৪ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের।
অভিযোগে উঠেছে আশুলিয়া ইউনিয়নের ইউপি’র চেয়ারম্যান শাহাব উদ্দিনের নির্দেশে ইউপি সদস্য হোসেন ও এলাকার মাদবর জুলফিকার ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে ৪ ধর্ষককে ছেড়ে দেয়। শুধু তাই না, এ রকম ঘটনা ধাপা চাপা দেয়ার আরও অভিযোগ রয়েছে শাহাব উদ্দিনের বিরুদ্ধে। একাধিক গণমাধ্যমে প্রকাশিতও হয়েছে।
ধর্ষিতা পোশাক শ্রমিক নওগা জেলার বাসিন্ধা। সে সাভার সবুজবাগ এলাকার আবুল খায়েরের বাড়ী ভাড়া থেকে উলাইল প্রতিক পোশাক কারখানায় চাকুরি করে।
গণধর্ষণের শিকার ওই তরুণী ইউপি’র চেয়ারম্যান শাহাবুদ্দিন মাদবরকে ও থানা মামলা দায়ের কথা জানান। তবে চেয়ারম্যান কোন আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ না করে ধর্ষিতাকে মামলার ঝামেলায় না জড়ানোর ভয় দেখিয়ে চলে যেতে বলেন। চেয়ারম্যানের নির্দেশে এসময় উপস্থিত হোসেন আলী মেম্বার তরুণী হাতে ৫০০ টোকা দিয়ে রিকসায় তুলে দেন। ধর্ষিতা নিরুপায় হয়ে ভয়ে তড়িঘড়ি করে আশুলিয়া থেকে পালিয়ে আত্মগোপন করে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কম্পক্সে ভর্তি হয়েছিল। এব্যাপারে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে পুলিশ তরূনীর খোঁজ শুরু করে। পরে মঙ্গলবার বিকালে উপজেলা স্বাস্থ্য কম্পক্সে তরুণী সন্ধান পেয়ে আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক শহিদুল ইসলাম পিপিএম উদ্ধার করেছে।
এ বিষয়ে মেম্বার হোসেন আলী জানান, আমার কোন কথা নেই। তরুণী অভিযোগে যা দিছে তাই। এ বিষয়ে আমি অনেক বার কথা বলেছি। আর কোন কথা বলতে চাই না।
পরে নিযাতিত তরুণী থানায় পুলিশের উধ্বর্তন কর্মকর্তার উপস্থিতিতে ৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়।পরে ৪ জনের বিরুদ্ধে মামালা রজু করে পুলিশ। মামলা উল্লেখ করা হয়, হযরত আলী ভূঁইয়ার ছেলে ইস্রারাফিল ও আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে শরিফুল বেড়ানোর কথা বলে তাদের পূর্ব পরিচিত পোশাক কারখানার ওই নারী শ্রমিককে ডেকে নিয়ে দোসাইদ এলাকার র্যাংগস গ্রুপের পরিত্যক্ত গোডাইনে নিয়ে সেখানকার নিরাপত্তা কর্মী জাহাঙ্গীর ও পলাশের সহযোগিতায় ওই নারী শ্রমিককে ধর্ষন করে। এসময় ধর্ষিতার চিৎকারে এলাকাবাসি র্যাংগস গ্রুপের ওই বাউন্ডারীর ধর্ষিতাকে উদ্ধার করে। পরে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শাহাব উদ্দিনের কাছে নিয়ে যায়।
এ বিষয়ে চেয়ারম্যান জানান, তরুণী ও তার স্বজনকে মুঠোফোনে জানান।তারা থানায় অভিযোগ করতে রাজি না থাকায় তরুণী পাঠিয়ে দেয়া হয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ধর্ষকরা এলাকার প্রভাবশালী। এছাড়া ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বারের ঘনিষ্টজন হওয়ায় কৌশল খাটিয়ে বিষয়টি নধাপা চাপা দেয়ার চেষ্টা করেছিলো।
জানতে চাইলে, আশুলিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল আউয়াল বলেন, পোশাক শ্রমিক ধর্ষনের ঘটনা গণমাধ্যমে মাধ্যমে জানতে পেরে ধর্ষিত মেয়েটিকে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কম্পক্সে থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। ধর্ষনের ঘটনার বর্ননা দেয়ার পর সত্যতা পেয়ে অভিযুক্তদেও বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
উল্লেখ্য এরকম ঘটনার ধাপা চাপার দেয়ার আরও অভিযোগ পাওয়া গেছে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শাহাব উদ্দিনের বিরুদ্ধে। এ বছরের ১৭ মার্চ আশুলিয়ায় বাজার এলাকায় পেশেন্ট কেয়ার হাসপাতালে নারী শ্রমিক চিকিৎসকের হাতে ম্লীলতাহানীর শিকার হন। খবর পেয়ে শাহাব উদ্দিন ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করে রফাদফা করে দেন। এ বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলেও প্রশাসন কোন ব্যবস্থা নেয়নি।