আশ্রিত রোহিঙ্গারা নিজ দেশে ফিরতে চায়-এস ই ইসলাম
লেখক আশ্রিত রোহিঙ্গাদের পরিদর্শনকালে দেখতে পান দুর্বল হয়ে আসছে রোহিঙ্গা নারী-শিশুরা। নবজাতক থেকে ১০ বছর বয়সী শিশুদের মধ্যে এ প্রবণতা বেশি। এমনিতেই স্মরণার্থীদের মধ্যে পুষ্টিহীন শিশুর সংখ্যা বেশি। নবজাতকদের মধ্যে বেশির ভাগ শিশুই মাতৃদুগ্ধ পাচ্ছে না। আবার অপুষ্টির শিকার হয়ে অনেক মা এখন মৃত্যু শয্যায়। এর সাথে যোগ হয়েছে সময় মতো খাবার না পাওয়া। ত্রাণের অপ্রতুল্যতা। স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিমান সম্পন্ন খাদ্যের অভাব। পরিবেশগত বিষয় তো আছেই। স্বজন হারানোর যন্ত্রণা, নির্যাতন আর বীভৎসতা রাতদিন কুরে-কুরে খাচ্ছে অনেক নারীকে। সব মিলিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা কেহই ভালো নাই। দুঃখ, কষ্ট, আর যন্ত্রণায় তাদের প্রতিদিনের সূর্যাস্ত হয়। যদিও বাংলাদেশে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপ ও সেনা তৎপরতার সুফল পাচ্ছে রোহিঙ্গারা। রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তায় সেনাবাহিনী মোতায়েন পর শৃঙ্খলা আনায়ন ত্রাণ তৎপরতা ও আশ্রয়ের ক্ষেত্রে দ্রুত সুফল আসছে। উখিয়া ও টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সুষ্ঠ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ বিতরণে সেনাবাহিনীর তৎপরতা শুরু না হলে পরিস্থিতি কি অবনতি হতো তা চিন্তা করা যায় না।
সেনাবাহিনীর পাশাপাশি স্থানীয় জন প্রতিনিধি সরকারী কর্মকর্তা, এনজিও, দেশি-বিদেশী দাতা সংস্থা ও বিভিন্ন সংগঠনেরÑসেচ্ছা সেবকরা দিবা রাত রোহিঙ্গাদের জন্য সার্বিক সহায়তা দিয়ে যাচ্ছেন। এদিকে, ঢাকায় সফররত জাপানের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়াং হরি বলেছেন, ‘রোহিঙ্গা শরণার্থী নিয়ে সৃষ্ট কঠিন সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশের প্রতি টোকিও’র পূর্ণ সমর্থন রয়েছে’। বুধবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের সঙ্গে বৈঠকের পর জাপানের মন্ত্রী সাংবাদিকদের এ কথা বলেন। তিনি বলেন, বিষয়টি (রোহিঙ্গা) জাপানের জন্যও উৎকন্ঠার। আমরা বাংলাদেশের জন্য সহায়তাও দিচ্ছি। জাপান শুরু থেকেই বাংলাদেশের পাশে আছে, থাকবে। সর্বশেষ ৫ লক্ষাধিক রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘বিশ্ব মানবতার বাতিঘর’ হিসাবে স্বীকৃতি পাচ্ছেন বিশ্ব নেতাদের কাছ থেকে। ৩৬ বছরের দীর্ঘ রাজনৈতিক পথ পরিক্রমায় শেখ হাসিনা কেবল সেই মহান নেতার কন্যা তাঁর রাজনৈতিক উত্তর সূরি হিসাবে গণ মানুষের প্রধান নেতার আসনে স্থান পাননি। তিনি জেল, জুলুম, মামলা-হামলা, হত্যা প্রচেষ্টাসহ স্বজন হারানো ও হুমকির মুখে অটল থেকে নেতৃত্বের অগ্নিপরীক্ষায় উর্ত্তীণ হয়েছেন।
গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাহসী নেতৃত্ব জনগণের কাছে আদর্শের ও অনুপ্রেরণার প্রতীক হয়ে আছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনিই আজ মহান কাজে বিভিন্ন সম্মাননায় ভূষিত হচ্ছেন। তাঁর মত একজন সাহসী নারীর পক্ষেই সম্ভব হয়েছে রোহিঙ্গা আশ্রয় দেওয়ার সিদ্ধান্তটি। তিনি বলেছেন, আমার যতটুকু আছে তা দিয়েই আমি এই নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়িয়েছি। যদিও অনেক দেশ রোহিঙ্গাদের নিয়ে ভাবছে এবং সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন।
পরিশেষে, তাদের (রহিঙ্গাদের) সাথে আলাপ কালে জানতে পারলাম যে, তারা নিজ দেশে ফিরতে চায়। নিরাপদ আশ্রয় হোক তাদের। বাসযোগ্য পৃথিবী তাদের একান্তকাম্য।