হবিগঞ্জে পবিত্র আশুরা পালিত ‘হায় হোসেন, হায় হোসেন’ ধ্বনিতে শোকাবহ প্রতিটি মোকাম
ছনি চৌধুরী,হবিগঞ্জ প্রতিনিধি :
সারাদশের ন্যায় হবিগঞ্জ জেলার বিভিন্ন উপজেলায় প্রতি বছরের ন্যায় এবারো যথাযোগ্য মর্যাদা ও ধর্মীয় ভাবগাম্বীর্যের মাধ্যমে পবিত্র আশুরা পালিত হয়েছে। ‘হায় হোসেন, হায় হোসেন’ ধ্বনিতে শোকাবহ হয়ে ওঠে প্রতিটি মোকাম। মুসলিম বিশ্বে কারবালার শোকাবহ ঘটনাকে ত্যাগ ও শোকের প্রতীক হিসেবে পালন করা হয়। আশুরা অন্যায় ও অসত্যের বিরুদ্ধে সংগ্রামের প্রেরণার উৎস হিসেবে পরিগণিত হয়ে থাকে। এ ছাড়াও ১০ মহররমে হজরত মুসা (আঃ) ফেরাউনের জুলুম থেকে পরিত্রাণ লাভ করেছিলেন তার অনুসারীদের নিয়ে নীল নদ পার হয়ে। তাদের পিছু নেওয়া ফেরাউন সদলবলে নীল নদে ডুবে যায়। এমন আরও অনেক তাৎপর্যময় ঘটনা ঘটেছিল এই দিনে। বিশ্বেও মুসলমানদের কাছে এ দিনটি একদিকে যেমন শোকের, তেমনি হত্যা ও ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার চেতনায় উজ্জ্বল। তবে, মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছিল কারবালা প্রান্তরে। কারবালার শোক ও স্মৃতি স্মরণ করে হবিগঞ্জে আশুরা উপলক্ষে সবচেয়ে বড় আয়োজন করা হয় সুলতানশী হাবিলীতে। প্রতিবছরের ন্যায় এবারেরো সেখানে থেকে বের করা হয় তাজিয়া মিছিল। রোববার দুপুরে বিশাল একটি তাজিয়া মিছিল বের করা হয়। হাজারো মানুষ এই শোক মিছিলে ‘হায় হোসেন-হায় হোসেন’ মাতম তুলে অংশ নেয়। একই সময়ে বাহুবলের চন্দ্রছড়ি থেকে একটি তাজিয়া মিছিল বের করা হয়। মিছিলে এবার ছুরির বদলে হাত দিয়ে বুক চাপড়িয়ে মাতম করতে দেখা যায়। বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে জেলা শহরের বহুলার মোকামবাড়ী, সুতাং শাহজীবাজার ও মিরপুরে চলছে আশুরার আয়োজন। বিকেল বেলায় সবাই একসাথে হয়ে হোসনী দালান ও ঘোড়া নিয়ে বের করবে তাজিয়া মিছিল। এছাড়াও নবীগঞ্জ উপজেলার কুর্র্শি ইউনিয়নের হুসাইনী দালান, পিটুয়া হুসাইনী মোকান, পূর্ব তিমিরপুর ও পশ্চিম তিমিরপুর হুসাইনী মোকাম, ছোট ভাকৈর হোসাইনী মোকামসহ উপজেলার একাধিকস্থানে স্থানে জারী মাতম ও তাজিয়া মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিকসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার নারী পুরুষের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। পবিত্র মহরম মাস শুরু থেকেই প্রতিটি মোকামে জারী মাতম করে আসছিলো বক্তরা। জারী মাতম দেখার জন্য বিভিন্ন গ্রাম থেকে আত্বীয় স্বজনসহ নানা পেশার লোকজন বিভিন্ন মোকামে জড়ো হয়। পবিত্র আশুরার দিনে রবিবার বিকেলে কুর্শি হোসাইনী দালান থেকে একটি তাজিয়া মিছিল বের করা হয়। বেশ কয়েকটি গরু জবাই করে শিরনী বিতরন করা হয়। এসময় রাজনৈতিক, সামাজিক, প্রশাসনিক, জনপ্রতিনিধি ও নানা পেশার লোকজন উপস্থিত ছিলেন ।