ঢাকায় সু চির দপ্তরের মন্ত্রীর সঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠক চলছে
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সঙ্গে মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চির দপ্তরের মন্ত্রী কিউ টিন্ট সোয়ে রাজধানী ঢাকায় বৈঠক চলছে।
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী সঙ্গে এ বৈঠক চলছে। সোমবার রাতেই কিউ টিন্ট সোয়ে মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার কথা রয়েছে।
সোমবার বেলা পৌনে ১১টার দিকে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় শুরু হওয়া এ বৈঠকে মিয়ানমার প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন দেশটির স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চির দপ্তরের মন্ত্রী কিউ টিন্ট সোয়ে। আর বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলে আছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী, পররাষ্ট্র সচিব শহিদুল হক।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানান টিন্ট সোয়ের বৈঠকে খুব স্বাভাবিকভাবেই প্রাধান্য পাবে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের প্রসঙ্গ বিশেষ করে, তাদের নিরাপদে ও মর্যাদার সঙ্গে রাখাইনে ফেরানোর বিষয়টি নিশ্চিত করার চেষ্টা করবে বাংলাদেশ।
সমস্যার উৎস যেহেতু মিয়ানমারে সমাধানটাও মিয়ানমারকেই করতে হবে—এ বার্তা দেয়া হবে সরকারের পক্ষ থেকে।
গত ২৫ আগস্ট থেকে পাঁচ লাখের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।
সেনাবাহিনী রোহিঙ্গা অধ্যুষিত গ্রামগুলোতে নির্বিচারে গুলি চালিয়ে মানুষ মারছে, রোহিঙ্গা নারীদের ধর্ষণ করা জচ্ছে, জ্বালিয়ে দেয়া হচ্ছে গ্রামের পর গ্রাম।
মিয়ানমারের নেত্রী সু চি সেনাবাহিনীর এই অভিযানকে ‘সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে লড়াই’ হিসেবে বর্ণনা করেছে তবে জাতিসংঘ একে চিহ্নিত করেছে ‘জাতিগত নির্মূল অভিযান’ হিসেবে।
রাখাইন রাজ্যের পরিস্থিতি দেখতে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোকে সেখানে যেতে দিচ্ছে না মিয়ানমার সরকার। এমনকি সেখানে আইসিআরসি ছাড়া অন্য কোনো সংস্থাকে ত্রাণ দিতেও বাধা দেয়া হচ্ছে।
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস রোহিঙ্গাদের ওপর সহিংসতা আরও ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে সতর্ক করেছেন।
গত বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে মিয়ানমার পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনায় তিনি বলেন, রাখাইনের উত্তরাঞ্চলে রোহিঙ্গাদের ওপর যে সহিংসতা হয়েছে তা মধ্যাঞ্চলেও বিস্তৃত হতে পারে এবং সেখানে আড়াই লাখ রোহিঙ্গা বাস্তুচ্যুত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।
ওই বৈঠকে মিয়ানমারের সেনা কর্মকর্তাদের শাস্তি দাবি করে যুক্তরাষ্ট্র।
পাঁচ দশকের বেশি সময় সামরিক শাসনে থাকা মিয়ানমারে গত বছর সাধারণ নির্বাচনে জয়ী হয়ে সু চির দল ক্ষমতায় আসে। কিন্তু এখনও দেশটির স্বরাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়সহ গুরুত্বপূর্ণ অনেক মন্ত্রণালয় দেশটির সেনাবাহিনীর হাতে রয়েছে।