তেঁতুলিয়ার আলোচিত ধর্ষকদ্বয়ের আদালতে আত্মসমর্পণ, জামিন নাকচে জেলহাজতে
পঞ্চগড় প্রতিনিধিঃ অবশেষে ধর্ষণ, ব্ল্যাকমেইলের শিকার মেধাবী স্কুলশিক্ষার্থী সোনিয়া আত্মহত্যার মামলার তৃতীয় দিনে পঞ্চগড় বিজ্ঞ আমলী আদালতে আত্মসমর্পণ করেছে রাজন ও আতিক পলাতক দুই আসামী। সোমবার দুপুরে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট তেঁতুলিয়া আমলি আদালত-৪ এ হাজির হয়ে রাজন ও আতিক জামিনের আবেদন করেন। এ সময় ওই আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাহাঙ্গীর আলম তাদের জামিন নাকচ করে জেল হাজতে প্রেরণ করার নির্দেশ দেন। আসামীদের আত্মসমর্পনের কথা শুনে আদালত চত্বরে অসংখ্য উৎসুক লোকজন ভিড় করে ওই দুই আসামীকে দেখার জন্য। গত ১০ অক্টোবর এই দুই ধর্ষকের হাতে সম্ভ্রম হারানো ও ব্ল্যাকমেইলের হুমকি সইতে না পেরে সোনিয়ার আত্মহত্যার পর হতে পলাতক ছিলেন তারা। এদিকে ধর্ষক রাজন ও আতিককে জেলহাজতে প্রেরণের খবরে সন্তোষ প্রকাশ করেছে স্থানীয়রা। এছাড়া সোমবার ওই ঘটনার প্রতিবাদে এবং আসামীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে তেঁতুলিয়ার প্রত্যেক মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। গত ১০ অক্টোবর মঙ্গলবার দুই ধর্ষকের হাতে সম্ভ্রম হারানোর লজ্জায় ও ব্ল্যাকমেইলের হুমকি সইতে না পেরে কাজী শাহাবুদ্দিন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের নবম শ্রেণির এই মেধাবী শিক্ষার্থী ও পাথর শ্রমিকের কন্যা সোনিয়া আত্মহত্যা করে। পরিবারের অভিযোগ, তেঁতুলিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ওয়ার্ড বয় মনসুর আলম রাজন ও তেঁতুলিয়া বাজারের বিকাশ এজেন্ট আতিকুজ্জামান আতিক নামের দুই যুবক তিনমাস ধরে ধর্ষণ করে এবং ভিডিও ধারন করে ইন্টানেট সহ বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচারসহ প্রাণে মেরে ফেলার ভয় দেখিয়ে তিন মাস ধরে নানাভাবে ধর্ষণ করে আসছিলেন। ধর্ষণের ভিডিও প্রকাশের ভয় দেখালে কোচিং না গিয়ে অর্ধেক রাস্তা থেকে বাসায় ফিরে এসে ফাঁসি লাগিয়ে আত্মহত্যা করে। এ ঘটনায় নিহতের পরিবার ধর্র্ষণ ও আত্মহত্যা প্ররোচনার মামলা মডেল থানায় পরপর চারদিন ঘুরলেও থানা মামলা না নিলে ফুসে উঠে সংবাদমাধ্যম ও উপজেলার নানা পেশাজীবি মানুষ। পরে গত ১৩ ও ১৪ অক্টোবর দেশের শীর্ষ গণমাধ্যমে সোনিয়া আত্মহত্যা নিয়ে সংবাদ প্রকাশের চাপে ১৪ অক্টোবর দুপুরে মামলা নিতে বাধ্য হয় পুুলিশ। ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন সংশোধনী ২০০৩ এর ৯ (ক) ধারায় মামলা রেকর্ড করা হয়। মামলার দ্বিতীয় দিনে দুই ধর্ষকদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবিতে সমবেত মানববন্ধনে সোচ্চার কন্ঠে প্রতিবাদের আওয়াজ তুলে উপজেলার বিভিন্ন পেশার হাজার হাজার মানুষ।