খালেদা জিয়া আইনের উর্ধ্বে নয়
আইন অনুযায়ী বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ওয়ারেন্টের বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
তিনি আরো বলেন, কেউ আইনের উর্ধ্বে নয় আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে।
এদিকে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট ইস্যুর কারণে জানতে চাইলে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করতে পারে এতে কোনো আইনি বাধা নেই বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আব্দুল্লাহ আবু।
তিনি আরো বলেন, তিনটি আদালতেই খালেদাকে হাজির হয়ে জামিন নিতে হবে।
গত বৃহস্পতিবার পৃথক দুটি মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেয় ঢাকার দুটি আদালত। ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫–এর বিচারক আখতারুজ্জামান ও ঢাকার মহানগর হাকিম নুর নবী গ্রেপ্তারি এ আদেশ দেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার হাজির হওয়ার দিন ছিল। কিন্তু হাজির না হওয়ায় জামিন বাতিল করে তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে বিশেষ জজ আদালত।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ:
পুরান ঢাকার বকশীবাজারে আলিয়া মাদ্রাসাসংলগ্ন মাঠে স্থাপিত অস্থায়ী এজলাসে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলা ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টসংক্রান্ত মামলার বিচারকাজ চলে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এ দুটি মামলা করেছে। এর মধ্যে ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে করা জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় আসামি হলেন খালেদা জিয়া, তার বড় ছেলে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ছয় জন। তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আদালত। আর ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে করা জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় আসামি হলেন খালেদা জিয়াসহ চারজন।
খালেদা জিয়ার গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশের ব্যাপারে খালেদার আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া বলেন, আদালতে অনুপস্থিত থাকায় চেয়ারপারসনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দিয়েছে আদালত।
এদিকে, মানহানির মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আদালত।
বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর হাকিম নুর নবী এ পরোয়ানা জারি করেন।
এর আগে ৫ অক্টোবর খালেদা জিয়াকে ১২ অক্টোবর আদালতে হাজির হওয়ার আদেশ দিয়ে শেষবারের মতো সময় মঞ্জুর করে আদালত। বৃহস্পতিবার তিনি আদালতে হাজির না হওয়ায় এ গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়।
প্রসঙ্গত: ২০১৬ সালের ৩ নভেম্বর বাংলাদেশ জননেত্রী পরিষদের সভাপতি এ বি সিদ্দিক স্বীকৃত স্বাধীনতাবিরোধীদের গাড়িতে জাতীয় পতাকা তুলে দিয়ে দেশের মানচিত্র এবং জাতীয় পতাকার মানহানি ঘটানোর অভিযোগে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) আদালতে একটি মানহানির মামলা করেন।
প্রতিবেদন সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি তেজগাঁও থানার পুলিশ অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে।
এ মামলার অপর আসামি বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের মৃত্যু হওয়ায় তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
মামলায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগে বলা হয়, ২০০১ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বাধীনতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধী জামাতের সঙ্গে জোট করে নির্বাচিত হয়ে সরকারের দায়িত্ব গ্রহণ করেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তিনি রাজাকার-আলবদর নেতাকর্মীদের মন্ত্রী-এমপি বানিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের মানচিত্র ও জাতীয় পতাকা তাদের বাড়িতে এবং গাড়িতে তুলে দেন।
জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর ৭ নভেম্বর সিপাহী বিপ্লবের মাধ্যমে মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রপতির পদ দখল করেন।