বৈরি আবহাওয়ায় শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি নৌপথে নৌচলাচল বন্ধের নির্দেশ
নিম্নচাপের প্রভাবে টানা বৃষ্টি আর ঝড়ো হাওয়ায় পদ্মার শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি নৌপথে সব ধরনের নৌচলাচল বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে বিআইডব্লিউটিসি।
বৈরি আবহাওয়ার কারণে ঘাটে আটকা পড়েছে ছয় শতাধিক যানবাহনের হাজার হাজার যাত্রী।
বিআইডব্লিউটিসির শিমুলিয়া ঘাটের সহকারী মহাব্যবস্থাপক খন্দকার শাহ নেওয়াজ খালিদ জানান, শনিবার সকাল থেকে প্রচণ্ড ঝড়ো হাওয়া, বৃষ্টি আর তীব্র স্রোতের কারণে ফেরি, স্পিডবোট ও লঞ্চসহ সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।
মাওয়া নৌপুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই সরোজিৎ কুমার ঘোষ জানিয়েছেন, যাত্রীরা ঘাটে আটকা পড়ায় পুলিশি নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাত থেকে চলা অবিরাম বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে রাজধানীসহ সারাদেশের মানুষের জীবনযাত্রা। বৃষ্টির পানিতে রাজধানী ও জেলাশহরের নিচু এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।
শনিবার রাজধানীর মগবাজার, মালিবাগসহ বিভিন্ন এলাকার সড়ক তলিয়ে হাঁটু পানি জমে গেছে।
গতকাল –শুক্রবার থেকে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের যানজট এখনো কমেনি। বন্ধ রয়েছে শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি রুটের নৌযান চলাচল। নিম্নচাপের প্রভাবে পটুয়াখালীর বিভিন্ন স্থানে বেড়িবাধ ভেঙে ও পানি উপচে অন্তত ১৪টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাত থেকে বৃষ্টি শুরু হলেও শুক্রবার ভোর থেকে সারাদেশেই বৃষ্টি হচ্ছে। হেমন্তের শুরুর এই অবিরাম বৃষ্টি জনজীবনকে স্থবির করে দিয়েছে। কোথাও জলাবদ্ধতা, কোথাও যানজট, কোথাওবা আবার বেড়িবাধ ভেঙে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে কয়েক হাজার মানুষ।
পটুয়াখালীতে তলিয়ে গেছে অর্ধশত চরসহ জেলার বেশিরভাগ পুকুর ও মাছের ঘের। কলাপাড়ার লালুয়া ইউনিয়নের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাধের দুটি পয়েন্ট দিয়ে পানি ঢুকে প্লাবিত হয়েছে অন্তত ১৪টি গ্রাম। এছাড়া মির্জাগঞ্জ উপজেলায় পায়রা নদীর কালিকাপুর পয়েন্টে ৭ থেকে ৮ মিটার বাধ ভেঙে পানি ঢুকে পড়েছে কয়েকটি গ্রামে। কোথাও কোথাও রাস্তাঘাট তলিয়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।
পায়রা বন্দরে ৩ নম্বর সতর্কতা সংকেত থাকায় বন্দরের সকল কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে। বন্ধ রয়েছে জেলার অভ্যন্তরীণ সকল রুটের লঞ্চ চলাচল।
কুমিল্লার নিচু এলাকায় বৃষ্টির পানি জমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। নগরীর রেসকোর্স, কালিয়াজুরী, স্টেডিয়াম মার্কেট, চকবাজারসহ বেশ কয়েকটি এলাকার সড়ক পানিতে তলিয়ে গেছে। কোথাও কোথাও বাড়িঘরেও পানি ওঠে গেছে।
টানা বৃষ্টিতে রাজবাড়ি শহরের বাজার ও আবাসিক এলাকার বিভিন্ন স্থানে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। চরম দুর্ভোগে পড়েছেন স্কুল, কলেজ ও অফিসগামী মানুষ। ব্যবসা বাণিজ্যে দেখা দিয়েছে স্থবিরতা।
ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের গাজীপুরের চন্দ্রা থেকে মির্জাপুর পর্যন্ত শুক্রবার ভোর থেকে সৃষ্ট যানজট শনিবার সকালেও রয়েছে। যানজট রয়েছে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কেও। কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে মহাসড়কে পানি জমায় এবং ছোট বড় গর্তের কারণে এ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছে যাত্রী ও চালকরা। যানজট নিরসনে কাজ করছে পুলিশ।
এদিকে, বৈরী আবহাওয়ার কারণে শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি রুটে সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ রেখেছে কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার সকাল ১১টা থেকে এই নৌরুটে লঞ্চ ও স্পিডবোট চলাচল বন্ধ রাখা হলেও শনিবার ভোর থেকে সব নৌযান চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়।