নওগাঁ বদলগাছীতে নতুন ইটভাটা নির্মাণের শুরুতেই গ্রামবাসী ভেঙে দিলেন।
গত বুধবার নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার মিঠাপুর ইউনিয়নের উজালপুর গ্রামের ফসলি কৃষি জমিতে অবৈধ ভাবে নতুন ইটভাটা স্থাপনা নির্মাণ কাজের শুরুর মুখেই ভেঙে দিয়েছেন গ্রামবাসী। বছরে যেখানে এসব জমিতে তিন থেকে চারটি ফসল ফলে থাকে সেখানে ইটভাটার প্রস্তুতি নেয়ায় গ্রামবাসী সবাই একতাবদ্ধ হয়ে গত বুধবার সকালে ইটভাটার চিমনি তৈরির জন্য করা ভীত ভেঙে দেয়।
গ্রামবাসী জানাই টাকা আর ক্ষমতাশীল কিছু ব্যক্তিদের ছত্রছায়ায় থেকে তাদের গরমে খাদাইল গ্রামের সফির উদ্দীন ও দেলোয়ার হোসেন ঝাড়ঘড়ীয়া মৌজায় বিএল ব্রিকস নামে কৃষি জমিতে অবৈধভাবে ইটভাটা নির্মাণের চেষ্টা চালালে। সেখানে স্থানীয় লোকজনের বাঁধার মুখে পরে জনগণের ভয়ে অবশেষে মালামাল নিয়ে সরে যেতে বাধ্য হতে হয়। পরবর্তীতে মিঠাপুর ইউনিয়নের উজালপুর গ্রামে ফসলি জমিতে ইটভাটা তৈরির জন্য মালামাল ফেলেন। এর পার্শবর্তী জমিগুলোতে বছরে সাধারণত তিন থেকে চারটি ফসল ফলানো হয়ে থাকে। সেখানে ভাটার মালিক সফির উদ্দীন ও দেলোয়ার হোসেনের নিজস্ব কোনো জায়গা-জমি ও নেই। তারা স্থানীয় দুই কৃষকের নিকট থেকে ১০-১৫ কাঠা জমি বছর চুক্তি পত্তন নিয়ে ইটভাটার চিমনি তৈরির প্রস্তুতি হিসেবে ভীট দিলে। বিষয়টি নিয়ে গ্রামবাসীর মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পরে। জমি নষ্ট হওয়ার আশঙ্কায় কৃষকেরা বাঁশ কেটে জমি ঘিরে নেন। সেখানে ইটভাটা উচ্ছেদ করতে গ্রামবাসী একতাবদ্ধ হয়ে বাদলগাছী-মহাদেবপুর আসনের স্থানীয় জাতীয় সংসদ সদস্য জনাব:- মোঃ ছলিম উদ্দীনের নিকট সহযোগিতা চাইলে সংসদ সদস্য সেখানকার স্থাপনা ভেঙে দেয়ার আদেশ দেন বলে গ্রামবাসী জানাই। গত বুধবার সকালে ইটভাটার চিমনি তৈরির জন্য ভীট দিলে গ্রামবাসী সেটি ভেঙে দাই।
উক্ত তথ্য সংগ্রহকালে গ্রামবাসীর ইউপি মেম্ববার নিখিল চন্দ্র মন্ডল, ইউপি চেয়ারম্যান ফিরোজ হোসেন, ও ইউপি মহিলা সদস্যরা নাজমা বেগম ও আকতার বানুসহ অন্তত দশজন গ্রামবাসী বলেন, তারা গরীব মানুষ। যেখানে ইটভাটা তৈরি করার জন্য আসছে তার আশেপাশে কারো ১০ কাঠা, কারো ৫ কাঠা আবার কারো ১৫ কাঠা ও কারো এক বিঘা জমি রয়েছে। তারা বছরে তিন থেকে চারটি ফসল উৎপাদন করেন। এর মধ্যে সবজি খেত প্রধান। যা দিয়ে তারা সংসার পরিচালনা করেন তাদের জীবন জীবীকা চালাই । সেখানে জোর করে কীভাবে ইটভাটা নির্মাণ করে। ইটভাটা বন্ধের দাবিতে গত ২ অক্টোবর নওগাঁ জেলা প্রশাসন বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন গ্রামবাসী। একই অভিযোগ করেন পরিবেশ অধিদফতরেও। অপরদিকে ইটভাটা স্থাপনা নির্মাণ শুরুর মুখে ভেঙে দেয়ায় ইটভাটার মালিক সফির উদ্দীন বাদী হয়ে কয়েকজন গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেন। এই বিষয়ে বদলগাছী থানার ওসি (তদন্ত) শাহিনুল ইসলাম জানান, অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে গতকাল সকালে তিনি নিজেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এবং ইটভাটার মালিক সফির উদ্দীনদের সাথে কথা বলেন এবং তদন্ত করে দাখেন ইটভাটা নির্মাণের তার কাছে কোন অনুমতিপত্র নেই বলে স্বীকারও করেন।
ইটভাটা মালিকের বৈধতা সম্পর্কে জানতে রাজশাহী বিভাগীয় পরিবেশ অধিদফতরের পরিচালক আশরাফুজ্জামান কে মোবাইল ফোনে জানালে তিনি বলেন বিষয়টি তার জানা নেই। তবে অভিযোগ পেলে খতিয়ে দেখবেন। এছাড়াও তিনি আরো বলেন কৃষি জমির উপর ইটভাটা নির্মাণে কোন ছাড়পত্র দেয়ার নিয়মও আমাদের নেই এটা পুরোটা অবৈধ।