রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধেনে দ্বিপক্ষীয় সমাধানের কথা হয়েছে মিয়ানমারকে
রোহিঙ্গা সঙ্কটের দ্বিপক্ষীয় সমাধানের কথা মিয়ানমার বলা হয়েছে –এ কথা উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন
এগিয়ে না এলে তখন বাংলাদেশ অন্য কিছু ভাববে।
মিয়ানমার থেকে ফেরার পর বৃহস্পতিবার তিনি সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, আমরা তাদের এটা বলেছি, দ্বিপক্ষীয়ভাবে এর সমাধান করা উচিৎ এবং আমরা সেটাই চাই, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও তাই চান।
এ সময় কামাল বলেন, তারা বলেছেন, আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ তৈরি করবেন।
রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর আশাবাদ প্রকাশ করে তিনি বলেন, আমরা মনে করি যে, আমরা হাঁটা শুরু করেছি, লক্ষ্যে পৌঁছতে পারব।
কামাল জানান, সফরে রাখাইন রাজ্যের পরিস্থিতি ও রোহিঙ্গাদের বিষয়ে কফি আনান কমিশনের সুপারিশ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৫ দফা দাবি বাস্তবায়নের প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। বিষয়গুলো পর্যায়ক্রমে প্রক্রিয়ার ভেতর দিয়ে চূড়ান্ত করা হবে বলে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমার সরকার আমার কাছে সন্ত্রাসীদের একটা তালিকা দিয়েছে, তাদের দাবি ওই সন্ত্রাসীরা বাংলাদেশে আছে, তালিকায় পূর্ণাঙ্গ নাম-ঠিকানা নেই আমরা তাদের পূর্ণাঙ্গ নাম-ঠিকানা দিতে বলেছি।
মিয়ানমার আন্তর্জাতিক চাপে আছে বলে কি বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে ডেকে নিয়ে ‘আইওয়াশ’ করেছে কি না, আসাদুজ্জামান কামালকে সেই প্রশ্ন জবাবে তিনি বলেন, দেখুন, আমি কোনো কিছুই নেগেটিভলি দেখি না, মনে করি-এটা তাদের সমস্যা তারা সমাধান করবে। এটা আমরা বিশ্বাস করি এবং মনে করি। আমাদের এই সমস্যা ওভারকাম করতেই হবে, আমরা সেটাই মনে করি।
মিয়ানমারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পাশাপাশি দেশটির নেত্রী সু চির সঙ্গেও আলোচনা করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
তিনি বলেন, তারা সবই রাজি হয়েছেন; কিন্তু তারা বলছেন, একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সব ফাইনালাইজড করতে হবে।
সু চির সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে কামাল বলেন, তাকে বলেছি, আজ আমাদের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশকে যে জায়গায় নিয়ে গিয়েছে আপনিও (সু চি) মিয়ানমারকে সে জায়গায় নিতে পারবেন। বাংলাদেশের মানুষ সেটা বিশ্বাস করে।
অং সান সু চি আমাকে বলেন, ‘তোমরা তাদের (রোহিঙ্গা) ফিরিয়ে দেয়ার জন্য উৎসাহিত কর-তারা তো এখন আসতে চায় না। আমি বলেছি, তারা কেন আসতে চায় না? সেটা আপনি নিশ্চয়ই জানেন। তাদের আসার পরিবেশ নাই। তাই তারা আসতে চায় না।
রোহিঙ্গাদের ফেরার পরিবেশ তৈরি করতে সু চির প্রতি আহ্বান জানান কামাল।
কামাল বলেন, আমি সু চিকে বলেছি, কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী কাজ করতে। তোমাদের দেশে শান্তি আসলে আমরাও বাঁচি। তোমরাও এই অশান্তি থেকে রেহাই পাবা। এই সব প্রস্তাব সবই শুনেছেন। আমরা মনে করি তারা এগুলো পর্যায়ক্রমে করবেন। সু চি নিজেই বলেছেন, তাদের নেয়ার বিষয়ে তার সরকার কাজ করছে।
রাখাইনে সেনা নির্যাতনের মুখে গত ২৫ আগস্ট থেকে বাংলাদেশ সীমান্তে রোহিঙ্গাদের ঢল নামলে আন্তর্জাতিক সমালোচনার মুখে মিয়ানমারের সুচি।