নতুন মন্ত্রিসভা নিয়ে গুঞ্জন, বাদ পড়ছেন কারা?

বর্তমান সরকারের শেষ সময়ে এসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটি পরিচ্ছন্ন মন্ত্রিসভা গঠনের চিন্তাভাবনা করছেন বলে দলীয় সূত্র জানিয়েছে। ইতিমধ্য মন্ত্রিসভায় প্লাস-মাইনাসের জন্য একটি খসড়া তালিকাও তৈরি করা হয়েছে। এমন আভাস দিয়েছেন দলের উচ্চ পর্যায়ের দায়িত্বশীল নেতারা। নতুন মন্ত্রিসভায় তরুণদের বিশেষভাবে অন্তর্ভুক্তিকরণের বিষয়টিও প্রক্রিয়াধীন। এক্ষেত্রে বাদ পড়তে যাচ্ছেন দলীয় ইমেজ ক্ষুণ্ণকারী মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীরা।

এক্ষেত্রে উচ্চ আদালতের রায়ের কারণে ত্রাণ, দুর্যোগ ও ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া ও খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বাদ পড়তে পারেন। বিশেষ করে খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলামের ব্যাপারের দলের নানা স্তরে ক্ষোভ রয়েছে। কারণ, দ্রব্যমূল্য বিশেষ করে চালের দাম অতিরিক্ত হারে বৃদ্ধির জন্য বেকায়দায় পড়েছে আওয়ামী লীগের মত গণমুখী দল। এছাড়াও খাদ্যমন্ত্রী কামরুলের ব্যর্থতার মধ্যে চালের দাম উচ্চহারে বৃদ্ধি ও পঁচা গম ইস্যু অন্যতম। আর মন্ত্রী ত্রাণমন্ত্রী মায়ার জামাই তারেক সাঈদ মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হওয়ায় তার (মায়া) প্রতিও জনমনে বিরূপ একটা ধারণা তৈরি হয়েছে। এজন্য এ দুজনকে মন্ত্রিসভা থেকে বাদ দিয়ে ক্লিন ইমেজের কাউকে অন্তর্ভুক্ত করা  হতে পারে।

দলীয় একটি সূত্র অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত, পরিকল্পনা মন্ত্রী আহম মোস্তফা কামাল লোটাস মন্ত্রিসভা থেকে ছিটকে পড়তে পারেন বলে দাবি করলেও অন্য আরেকটি বিশ্বস্ত সূত্র জানিয়েছে, কোন অবস্থায়ই বর্তমান সরকার থেকে আবুল মাল আব্দুল মুহিতের বাদ পড়ার আশংকা নেই।

আর ময়মনসিংহ থেকে টেকনোক্রেট কোটায় ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমানও বাদ পড়তে পারেন। এছাড়াও এলাকাভিত্তিক রাজনীতির মেরুকরণে বাদ পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে পরিকল্পনা মন্ত্রী আহম মোস্তফা কামাল লোটাস ও রেলমন্ত্রী অ্যাডভোকেট মুজিবুল হকের। আর তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে তুমুল বিবাদে জড়ানো ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের সংসদ সদস্য উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর সঙ্গে দ্বন্দ্ব থাকা মৎস্য মন্ত্রী সায়েদুল হকও বাদ পড়ার তালিকায় রয়েছেন বলে জানা গেছে। এছাড়া ভূমিমন্ত্রী পাবনার শামসুর রহমান শরীফ ডিলু, প্রতিমন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার, আরিফ খান জয়, বন পরিবেশ উপমন্ত্রী আব্দুল্লাহ আল জ্যাকব প্রমুখ মন্ত্রিসভা থেকে বাদ পড়তে পারেন বলে গুঞ্জন রয়েছে।

মন্ত্রিসভায় নতুন যারা আসতে পারেন: দলের এক নম্বর সদস্য সাবেক চিফ হুইপ আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহ ও দলীয় সভাপতি মন্ডলীর সদস্য সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী শেখ ফজলুল করিম সেলিম এবারের মন্ত্রিসভায় স্থান পেতে পারেন বলে গুঞ্জন রয়েছে। এছাড়াও নতুন মুখ হিসাবে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান ও মোজাফফর হোসেন পল্টু টেকনোক্রেট কোটায় মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত হতে পারেন বলে একটি সূত্র জানিয়েছে। এক্ষেত্রে ড. মশিউর রহমানকে অর্থমন্ত্রী এবং মোজাফফর হোসেন পল্টু যুব ক্রীড়া মন্ত্রী হিসাবে বিবেচনায় রয়েছেন বলে জানা গেছে।

এছাড়াও পরিকল্পনা মন্ত্রী হিসেবে কুমিল্লার অধ্যাপক আলী আশরাফের নাম তালিকায় রয়েছে বলে গুঞ্জন উঠেছে। আর টাঙ্গাইল -১ আসনের সংসদ সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক, গোপালগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য লে. কর্নেল (অব.) মোহাম্মদ ফারুক খান ও চাঁদপুরের সংসদ সদস্য ড. দীপু মনি ও ড. হাছান মাহমুদ পুনরায় মন্ত্রিসভায় স্থান পাচ্ছেন বলে গুঞ্জন উঠেছে। এছাড়া সাবেক প্রতিমন্ত্রী পটুয়াখালী-২ আসনের সংসদ সদস্য আখম জাহাঙ্গীর হোসাইনকেও এবার পূর্ণ মন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে বলে দলীয় একাধিক সূত্র জানিয়েছে।

এছাড়াও দিনাজপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, শরিয়তপুর-১ এর সংসদ সদস্য বি এম মোজাম্মেল হক ও নওগাঁ- ৬ আসনের সংসদ সদস্য ইসরাফিল আলম, সিলেট-৩ আসনের সংসদ সদস্য মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরীকে নতুন মন্ত্রিসভায় দেখা যাবে বলে গুঞ্জন উঠেছে।