তেতুলবাড়িয়া গ্রামে কথিত সোর্স আতিয়ার ও বজলুর অত্যাচারে অতিষ্ঠ এলাকা বাসি
এম এ লিংকন,জেলা প্রতিনিধি মেহেরপুর ॥ মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার তেতুলবাড়িয়া ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের লোকজন কথিত বিজিবি’র সোর্স এর অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। কথিত সোর্স কুইল হালসানার ছেলে আতিয়ার রহমান ও একই গ্রামের মৃত নাড়া মন্ডলের ছেলে বজলুর রহমান এলাকার সহজ সরল মানুষের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার উদ্দেশ্যে এ কাজ করে থাকে। এলাকা বাসি জানান, যারা প্রকৃত পক্ষে মাদক চোরা কারবারি করে তারা থাকে ধরা ছোয়ার বাইরে অথচ যারা নির্দোশ খেটে খাই তাদেরকে মিথ্যা মাদক পাচারকারি সাজিয়ে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়। এ বিষয়টি নিয়ে তেতুলবাড়িয়া গ্রামের সব শ্রেনীর নারী পুরুষ সাংবাদিকদের কাছে এ কথা জানান। তারা দাবি করেন এর সুষ্ঠ বিচারের। এলাকাবাসি বলেন সুষ্ঠ তদন্ত করে সত্যিকারের চোরা কারবারিকে আইনের আওতায় আনার জন্য প্রয়োজনে আমরা সকলে সব ধরণের সহযোগিতা করব। ভুক্তোভোগি কয়েকজন জানান, বিজিবির কথিত সোর্স পরিচয় দিয়ে তারা বিজিবিকে সাথে নিয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে সহজ সরল মানুষের নামে মাদকব্যাবসার তকমা লাগিয়ে দিয়ে তাদেরকে ধরে নিয়ে বিনাদোষে অনেককে হজত খাটতে হয়েছে। এলাকাবাসি আরো জানান, গ্রামের অনেকের নামে বিজিবির কাছে মাদকব্যাবসায়ী হিসেবে তালিকা পাঠানো হয়েছে। ঐ কথিত সোর্স দ্বয় প্রতিনিয়ত তালিকাভুক্তো লোকজনের কাছে ভয় ভিতি দেখিয়ে টাকা দাবি করে। তাদের অত্যাচার এতটায় বেশি আকার ধারণ করেছে যে অনেকে তাদের নাম বলতেও ভয় পান। এতিকে এক বৃদ্ধ নারী আতংকিত হয়ে বলেন “তাদের নাম বললে গলা থাকবেনা”। এলকাবাসির কথার বর্ণনায় তাদের ভয়াবহ অত্যাচারের চিত্র ফুটে ওঠে। এদিকে মাদক পাচারকারি মামলার আসামী তেতুলবাড়িয়া গ্রামের মৃত মোতালেব আলীর ছেলে দিন মজুর মুসা (৩৫) সাংবাদিকদের জানান, আমাকে যে মামলায় জড়ানো হয়েছে এ বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা অথচ একটি মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন। তিনি জানান, আমার মামলায় যাকে স্বাক্ষি করা হয়েছে সে নিজেই জানেনা যে আমাকে এ মামলার আসামি করা হয়েছে। মাদক মামলার শিকার একই গ্রামের কারিগরপাড়ার মৃত আফজাল হোসেন এর ছেলে রতন (২২) জানান, আমি রাজ মিস্ত্রির কাজ করি অথচ কিভাবে আমাকে এই মামলাতে জড়িয়ে দিলো আমি নিজেই জানিনা। আমরা এর প্রতিকার চায়। তারা জানান, আমাদের মামলায় স্বাক্ষি একই গ্রামের হাটপড়ার মৃত আঃ বারির ছেলে ফানু সে এ মামলার বিষয়ে কিছুই জানেনা অথচ তাকে স্বাক্ষি করা হয়েছে। এ বিষয়ে ফানুর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কোথায় কাকে কীভাবে ধরা হয়েছে বা কী জিনিস উদ্বার করা হয়েছে তার কিছুই জানিনা অথচ আমাকে স্বাক্ষি করা হয়েছে। তিনি জানান এ ভাবে আমাকে এলাকার লোকের কাছে শত্রুতা সৃষ্টি করা হচ্ছে আমি এর বিচার চাই।
এদিকে সম্প্রতি মাদক মামলায় আসামি করা হয়েছে একই গ্রামের জান আলির ছেলে আঃ বাকিকে। তিনি জানান, এর আগের সুবেদার আজমালুর রহমান থাকতে একটি মামলার স্বাক্ষি করা হয় অথচ সে মামলার বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা তিনি আরো জানান গত তিন দিন আগে আমাকে আবারো একটি মাদক মামলায় আসামি করা হয়েছে এটা কোন যুক্তিতে করা হয়েছে। তিনি দাবি করেন আমার কাছে যদি কোন মাদক পায় তাহলে আমাকে ধরে যে শাস্তি হয় তা দিক তাতে আমার পরিবার জানবে যে আমি দোষী অথচ দোষ করলামনা আসামি হয়ে গেলাম এটা মেনে নেওয়া যায়না। এই হয়রানির মুল হোতাকে জানতে চাইলে গ্রাম বাসি একই সুরে বলে আমাদের গ্রামের সাধারণ মানুষকে অতিষ্ঠ করে তুলছে শুধু মাত্র দু’জন তারা হলো আতিয়ার রহমান ও বজলুর রহমান। এলাকাবাসি দাবি করেন, এরা প্রকৃত পক্ষে মাদক পাচার কারি এমনকি এরা মাদক পাচারে সাহায্য করে থাকে। অথচ বিজিবি এদেরকে না ধরে সুষ্ঠ তদন্ত না করে এলাকার লোকজনকে মিথ্যা তথ্যের উপর নির্ভর করে মামলা দিয়ে হয়রানি করে যাচ্ছে। আঃ ছাত্তারের ছেলে পল্টু জানান, আমরা দিন আনি দিন খায় আমরা কিভাবে এসব কাজ করব। আমাদের কাছে যদি কোন মাদক পেয়ে থাকে তাহলে আমাদের ধরে নিয়ে যাক আমাদের কোন আপত্তি থাকবেনা। তেতুলবাড়িয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান নাজমুল হুদা পচুর কাছে বিষয়টি নিয়ে গ্রামের লোকজন পরামর্শ চান কথিত দু’ সোর্সের অত্যাচার থেকে বাঁচার জন্য। চেয়ারম্যান এ বিষয়টি নিয়ে কয়েক দফা বিজিবি ক্যাম্পে যোগাযোগ করেছেন বলে জানান। সাবেক চেয়ারম্যান নাজমুল হুদা পচু ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে সাংবাদিকদের জানান, কথিত সোর্স এর কর্মকান্ডে আমাদের এলাকার লোক অতিষ্ঠ হয়ে এর সুরাহা কিভাবে হয় সে জন্য আমার কাছে জানতে এসেছিলো। সে মোতাবেক আমি তেতুলবাড়ি ক্যাম্প কমান্ডার জাকির হোসেনের সাথে যোগাযোগ করে কোন কাজ হয়নি পরে গাংনী থানার ওসি আনোয়ার হোসেনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি উপর মহলে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন।
তেতুলবাড়ি ক্যাম্প কমান্ডার জাকির হোসেনের সাথে মোবাইলে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন কথিত দুই সোর্স কুহিল হালসানার ছেলে আতিয়ার রহমান ও মৃত নাড়া মন্ডলের ছেলে বজলুর রহমান আমাদের কোন সোর্স নয় বলে তিনি অস্বীকার করেন।