পদত্যাগ করেছেন প্রধান বিচারপতি
পদত্যাগ করেছেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা— শুক্রবার কানাডা যাওয়ার পথে সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশের হাই কমিশনে রাষ্ট্রপতি বরাবর পদত্যাগ পত্রটি জমা দেন তিনি। শনিবার দুপুরে বঙ্গভবনে প্রধান বিচারপতির পদত্যাগপত্রটি এসে পৌঁছেছে বলে নিশ্চিত করেছেন রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মোহম্মদ জয়নাল আবেদিন।
পরে বিকেলে গুলশানে নিজ বাড়িতে সাংবাদিকদের আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, সংবিধান অনুযায়ী প্রধান বিচারপতি নিয়োগের বিষয়ে এখন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির হাতে। রাষ্ট্রপতি নতুন প্রধান বিচারপতি নিয়োগ না দেওয়া পর্যন্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি আবদুল ওয়াহহাব মিঞা অস্থায়ী প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পালন করবেন।
এদিকে, ছুটিতে থাকা প্রধান বিচারপতি পদত্যাগ করেছেন বলে শুক্রবার গভীর রাত থেকে বেসরকারি কয়েকটি টিভি চ্যানেলে খবর প্রচার করা হয়েছে। 'ব্রেকিং নিউজ' হিসেবে প্রচারিত এ খবরে বলা হয়- 'রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা।'
এর কিছুক্ষণের মধ্যে আরও কয়েকটি চ্যানেলের স্ক্রলে সদ্যপ্রাপ্ত সংবাদ হিসেবে একই তথ্য প্রচার করা হয় তবে কোনোটিরই তথ্যসূত্র ছিল না।
এ ব্যাপারে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, প্রধান বিচারপতির ছুটি বাড়ানোর কোনো তথ্য তার জানা নেই— সেক্ষেত্রে শনিবার থেকে তিনি ‘অনুপস্থিত’ বলে বিবেচিত হবেন এবং রাষ্ট্রপতি সংবিধানের ৯৭ অনুচ্ছেদ অনুসারে ব্যবস্থা নেবেন।
গত ২৪ আগস্ট প্রধান বিচারপতি শেষ অফিস করেন সুপ্রিম কোর্টের অবকাশ শুরুর আগে। ৩ অক্টোবর আদালত খোলার আগের দিন সরকারের তরফ থেকে তার ছুটিতে যাওয়ার কথা জানানো হয়। এরপর ১৩ অক্টোবর অস্ট্রেলিয়ার উদ্দেশ্যে দেশ ছাড়েন তিনি।
ওইসময় আইন মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ছুটিতে প্রধান বিচারপতির বিদেশে অবস্থানের সময়ে অর্থাৎ ২ নভেম্বর থেকে ১০ নভেম্বর পর্যন্ত, অথবা তিনি ‘দায়িত্বে না ফেরা পর্যন্ত’ বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহহাব মিঞা প্রধান বিচারপতির কার্যভার সম্পাদন করবেন।
২০১৫ সালের ১৭ জানুয়ারি প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পাওয়া বিচারপতি সিনহার চাকরির মেয়াদ রয়েছে আগামী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত। সংবিধান অনুযায়ী পদত্যাগ না করলে বা অপসারণ না করা হলে ওই সময় পর্যন্ত তিনিই বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি থাকবেন।
৩৯ দিনের দীর্ঘ ছুটি শেষে বিচারপতি সিনহা দায়িত্বে ফিরছেন কি না জানতে যোগাযোগ করা হলে সুপ্রিম কোর্টের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার জেনারেল জাকির হোসেন বলেন, এ বিষয়ে তাদের কাছে কোনো তথ্য নেই।