মানুষ যেন নির্বিঘ্নে সেবা পেতে পারেন সেদিকে আন্তরিক হউন
পুলিশের কাছ থেকে যাতে মানুষ নির্বিঘ্নে সেবা নিতে পারেন সেজন্য এ বাহিনীর সদস্যদেরকে আরও আন্তরিক আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
বুধবার বঙ্গভবনে পুলিশ সপ্তাহ উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
রাষ্ট্রপতি বলেন, জনগণ বিপদে পড়লেই পুলিশের দ্বারস্থ হয়— তাই আপনাদের নিকট সেবা নিতে আসা প্রতিটি মানুষই যেন নির্বিঘ্নে সেবা পেতে পারে সেদিকে বিশেষভাবে আন্তরিক হতে হবে।
আর সেবা প্রদানের মাধ্যমেই বাংলাদেশ পুলিশ একটি সেবাধর্মী ও জনবান্ধব প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে উঠুক— এটাই জনগণ প্রত্যাশা করে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
দেশের অভ্যন্তরে নিরাপত্তায় পুলিশকে আরও দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও সমাজ ব্যবস্থায় ‘আইনের শাসন’ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ— এ দায়িত্ব পালনে মুখ্য ভূমিকা পালন করে পুলিশ।
তাই আপনাদেরকে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও মানবাধিকার সমুন্নত রেখে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালনে অবিচল থাকতে হবে–দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিধান ও নিরাপদ সমাজ প্রতিষ্ঠায় আপনাদেরকে আরও দায়িত্বশীল হতে হবে বলে রাষ্ট্রপতি।
দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিধান, জনগণের জানমালের সুরক্ষা, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, সন্ত্রাস ও অপরাধ দমন বাংলাদেশ পুলিশের প্রধান ও পবিত্র দায়িত্ব—এ কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, সকল পর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তা এবং পুলিশ সদস্যদের নিজ নিজ অবস্থান হতে জনসাধারণকে আইনগত সহায়তা প্রদানে বিশেষভাবে তৎপর থাকতে হবে।
জঙ্গি দমনে পুলিশের কার্যক্রমের প্রশংসা করে আবদুল হামিদ বলেন, তথ্য প্রযুক্তি ও যোগাযোগ এবং মুক্ত অর্থনীতির প্রেক্ষাপটে বিশ্বে অপরাধের ধরনে এসছে বহুমাত্রিকতা। বিশ্বয়ানের এ যুগে অপরাধ ও অপরাধীরা আর নির্দিষ্ট কোনো দেশের গণ্ডিতে সীমাবদ্ধ নেই। প্রযুক্তির বিভিন্ন সুবিধা ব্যবহার করে সংঘবদ্ধ অপরাধীরা দেশীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক অপরাধ নেটওয়ার্কের সাথে সহজে সম্পৃক্ত হবার সুযোগ পাচ্ছে। তারা সম্পৃক্ত হচ্ছে ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইমসহ জঙ্গি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, এ ধরনের অপরাধ নিয়ন্ত্রণ ও মোকাবেলা পুলিশের জন্য অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং হলেও সারাদেশে জঙ্গি দমনে পুলিশ সদস্যরা যে পেশাদারিত্ব, দক্ষতা ও সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন তা সত্যিই প্রশংসনীয়। জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় পুলিশের সক্ষমতায় জনজীবনে শান্তি ও স্বস্তি ফিরে এসেছে। জঙ্গি দমনে বাংলাদেশ পুলিশের সাফল্য শুধু দেশেই নয়, আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে।
কমিউনিটি পুলিশিংয়ের ওপর জোর দিয়ে রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, আধুনিক পুলিশি ব্যবস্থায় জনবান্ধব পুলিশিংয়ের কোনো বিকল্প নেই। অপরাধ দমন ও নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ও জনসাধারণের পারস্পরিক সহযোগিতা একান্ত প্রয়োজন।
এ লক্ষ্যে কমিউনিটি পুলিশিং কার্যক্রমকে জোরদার করে জনগণকে সাথে নিয়ে আইনশৃঙ্খলার অধিকতর উন্নয়নে একযোগে কাজ করে যেতে হবে। আমি আপনাদের আবারও স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, জনপ্রত্যাশা পূরণ এবং জনআস্থা অর্জনের জন্য জনগণের সাথে ভালবাসা ও মৈত্রীর বন্ধন সুদৃঢ় করতে হবে।
বঙ্গভবনের দরবার হলে আয়োজিত এই অনুষ্ঠান শেষে রাষ্ট্রপতি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে ফটোসেশন অংশ নেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও পুলিশের মহাপরিদর্শক একেএম শহীদুল হক অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।