৫ জানুয়ারির নির্বাচন অবৈধ নয় বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ
নুর আলম সিদ্দিক, ভ্রাম্যমান প্রতিনিধিঃ দেশে শুধু নির্বাচিত সরকার নয়, তত্ত্বাবধায়ক সরকারও বিতর্কিত হয়েছে। ২০০১ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচন নিয়ে আমরাও নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ভূমিকা ও নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলাম। বিএনপিও ৯৬ এবং ২০০৮ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচিন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল। সর্বশেষ ৫ জানুয়ারি নির্বাচন নিয়ে বিতর্ক থাকলেও এই সরকার বৈধ। কোনো সহায়ক সরকার নয়, এই সরকারই আগামী নির্বাচনকালীন সময়কালে তিনমাস অন্তবর্তীকালীন সরকার হিসেবে কাজ করবে। তবে তারা কোথাও নির্বাহী ক্ষমতা প্রয়োগ করবে না, নির্বাচন কমিশনই স্বাধীনভাবে ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবে। নির্বাচন নিয়ে সব দেশেই বিতর্ক রয়েছে। আজ শনিবার ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি ও এটিএন বাংলার যৌথ আয়োজনে রাজধানীর এফডিসিতে ইউসিবি পাবলিক পার্লামেন্টের গ্র্যান্ড ফাইনাল অনুষ্ঠানে এক ছায়া সংসদ বিতর্ক অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। সভাপতির আগামী নির্বাচনে সহায়ক সরকারের প্রয়োজনীয়তার প্রসঙ্গের প্রেক্ষিতে বক্তব্যের জবাবে জনাব তোফায়েল আহমেদ বলেন, সব দলের অংশগ্রহণের মধ্যে দিয়েই আগামী একাদশ জাতীয় নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ এবং গ্রহণযোগ্যভাবে অনুষ্ঠিত হবে। এবং সেই নির্বাচনে বিএনপিও অংশগ্রহণ করবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন এটিএন বাংলা ও এটিএন নিউজের চেয়ারম্যান ড. মাহফুজুর রহমান, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান এম এ সবুর, এটিএন বাংলার উপদেষ্টা নওয়াজিশ আলী খান, এটিএন বাংলার সিনিয়র ভাইস প্রেডিডেন্ট তাশিক আহমেদ। প্রতিযোগিতায় ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি চ্যাম্পিয়ন হয়। রানার আপ ও তৃতীয় স্থান অধিকার করে যথাক্রমে বিজিএমইএ ইউনিভার্সিটি অব ফ্যাশন এন্ড টেকনোলজি এবং প্রাইম ইউনিভার্সিটি। ২০১৭ সালের এই প্রতিযোগিতায় দেশেরে সরকারি-বেসরকারি ৩২ টি বিশ^বিদ্যালয় অংশগ্রহণ করে।
তোফায়েল আহমেদ আরও বলেন, এই সরকারের বিগত সময়ে ৫টি বৃহৎ সিটি কর্পোরেশনের সবগুলোতেই আওয়ামী লীগকে পরাজিত করে বিএনপি জয়ী হয়। বর্তমান সিইসির অধীনে যে দুটি সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে সেখানেও আওয়ামী লীগ পরাজিত হয়েছে। সরকারের কট্টর সমালোচকরাও বলেছে নির্বাচন ভালো হয়েছে। তবে এ দেশের জনগণই হলো সবচেয়ে বড় বিচারক। তারা চুপ থাকে এবং সময়মতো জন আদালতে জবাব দিয়ে দেয়। তিনি বলেন, গত চারবছরে দেশ অনেক এগিয়ে গেছে। বর্তমানে বাংলাদেশের যে উত্থান তার ভিত তৈরি করে গেছেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, নির্বাচনে যারা জয়লাভ করে তাদের মধ্যে সবকিছুই নিয়ে নেওয়ার প্রবণতা তৈরি হয়েছে। এই প্রবণতায় বিজয়ীরা ব্যবসা-বাণিজ্য, সরকারি সুযোগ-সুবিধাসহ সবকিছু তাদের নিয়ন্ত্রণে নেয়। অন্যদিকে পরাজিতরা হয়রানি জেলজুলুম-এর শিকার হয়। একথায়Ñ উইনার টেক্স অল। যে কারণে নির্বাচনে কেউ পরাজিত হতে চায় না। তাই একাদশ নির্বাচন নিয়ে এখনও কোনো জাতীয় ঐক্যমত গড়ে তোলা সম্ভব হয়নি। জাতীয় নির্বাচনকে নিয়ে প্রধান দুই রাজনৈতিক শক্তির মধ্যে মতবিরোধ অব্যাহত রয়েছে। তিনি আরও বলেন, এই অবস্থান থেকে দেশের মানুষ পরিত্রাণ চায়। শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রেখে অংশগ্রহণমূলক গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্যে যত দ্রুত সম্ভব প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতৈক্য দূর করে প্রয়োজনীয় আলোচনা করা উচিত। তা না হলে কোনো ধরনের সংঘাত-সংঘর্ষ ও অস্থীতিশীলতার দায় রাজনৈতিক দলগুলোকে বহন করতে হবে।
প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার হিসেবে ট্রফি, ক্রেস্ট ও সার্টিফিকেটসহ চ্যাম্পিয়ন দলকে নগদ ২ লক্ষ, রানার আপ দলকে ১ লক্ষ এবং তৃতীয় স্থান অধিকারী দলহে ৫০ হাজার টাকা প্রদান করা হয়। ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বিতার্কিকরা হলো জান্নাতুল ফেরদৌসী, মো. মাহফুজুল বাশার, কাওছার আলম। বিজিএমইএ ইউনিভার্সিটি অব ফ্যাশন এন্ড টেকনোলজির বিতার্কিকরা হলো- সৈয়দ খালিদ মাহমুদ, মেহেদী হাসান, ইমন বিশ^াস শুভ।
প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক সোমা ইসলাম, অনিমেষ কর, ঝুমুর বারি ও মইনুল হক চৌধুরী।