রাজশাহীতে নির্ধারিত সময়ের আগেই গাছে গাছে আমের মুকুল
নির্ধারিত সময়ের আগেই রাজশাহীর বিভিন্ন এলাকায় দেশীয় জাতের আম গাছে মুকুল আসতে শুরু করেছে। চলতি মাসের প্রথম দিক থেকেই বারোমাসি ও লোকাল জাতের গাছে এই মুকুল দেখা দেয়। তাছাড়াও যে সকল গাছে গত বছর তেমনভাবে আমের মুকুল আসেনি, সেই সমস্ত গাছে আমের মুকুল আসতে শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন ফল গবেষণা কেন্দ্র। মূলত ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম দিক থেকে সব গাছেই মুকুল আসতে শুরু করবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।
তীব্র শীতে মুকুল ফোটায় কিছুটা বিঘ্ন ঘটলেও আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবার গাছগুলোতে মুকুলের সমারহ ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে। চাষিরা আশা করছেন বড় ধরনের কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না ঘটলে এবার আমের বাম্পার ফলন হবে।
রাজশাহী বিভিন্ন এলাকা জুড়ে শীতের তীব্রতা বিরাজ করলেও আগাম জাতের ওই সকল আম গাছে মুকুল আসতে শুরু করেছে। এ অঞ্চলে ৩৫ থেকে ৪০ জাতের আম চাষ হয়ে থাকে। আর সারা বাংলাদেশে রয়েছে ২’শ ৫০ জাতের আম। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে ফজলী, গোপাল ভোগ, মোহন ভোগ, ন্যাংড়া, ক্ষিরসাপাত, হিমসাগর, কৃষাণ ভোগ, মল্লিকা, লক্ষণা, আম্রপলি, দুধসর, দুধকলম, বিন্দাবনী, আরজান, রাণী পসন, মিশ্রীদানা, সিঁন্দুরী, আশ্বিনা সেই সাথে নানা প্রকার গুটি আম। রাজশাহীতে আম বাগান রয়েছে ১৬ হাজার ৫শ ১ হেক্টর জমিতে।
রাজশাহী ফল গবেষণা কেন্দ্রের সূত্র জানায়, ডিসেম্বরের শেষ দিক থেকে জানুয়ারির মাঝামাঝি সময় অবধি বারোমাসি বা লোকাল জাতের আম গাছে মুকুল আসা শুরু হয়। তবে এবার জানুয়ারির শুরুতেই মুকুল আসা শুরু হয়েছে। ফেব্রুয়ারি মাসেই মূলত আম গাছে মুকুল আসা শুরু হয়। শীতের তীব্রতা, তাপমাত্রা ও ঘন কুয়াশার কারণে গাছের মুকুল নষ্ট হতে পারে।
রাজশাহী মহানগরীর কোট এলাকার আম চাষি হাসান জানান, তার ১২টি গাছের একটি আম বাগান রয়েছে। তার অধিকাংশ গাছেই মুকুল দেখা দিয়েছে। তাও খুব সামান্য। গতবার ডিসেম্বরের শেষ দিকে মুকুল আসা শুরু হয়েছিল। সম্ভাব্য মুকুলের মাথাগুলোকে পোকা মাকড়ের আক্রমণ থেকে রক্ষার জন্য স্পে করা হচ্ছে। তবে গত কিছুদিন থেকে ঘন কুয়াশার কারণে মুকুল কিছুটা নষ্ট হয়েছে। পুরনো জাতের গাছগুলোতে মুকুল ধরেছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে চলতি মাসের শেষের দিক থেকে শুরু করে ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ দিক পর্যন্ত সব গাছে মুকুল দেখা যাবে।
রাজশাহী ফল গবেষণা কেন্দ্রের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আব্দুল আলিম জানান, গেলো দু’সপ্তাহ থেকে গাছে আমের মুকুল আসতে শুরু করেছে। মূলত আবহাওয়াগত কারণে দেশীয় জাতের গাছে এই আগাম মুকুল আসতে শুরু করেছে।
এর কোনো বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা তেমন নেই। বিশেষ করে আটি আম, ফজলি আম গাছে মুকুল আসছে বলে চাষিরা জানিয়েছেন বলে তিনি জানান।