বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনার মাধ্যমে ঝালকাঠিতে সরস্বতীর পূজা পালন
মোঃমোছাদ্দেক বিল্লাহ (বিষেশ প্রতিবেদক)
সনাতন ধর্মালম্বীদের ধর্মীয় উৎসবগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি হলো সরস্বতী পূজা। প্রতিবছর সরস্বতীর পূজার দিনটিতে মণ্ডপের পাশাপাশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতেও চলে দেবীর আরাধনা। প্রতিবছরের মতো এবারও ঝালকাঠির প্রায় স্কুল কলেজে ও মন্দিরে দেবী আরাধনার সব আয়োজন করা হয়েছে। সকাল থেকেই তাই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে ছিল মানুষের ঢল। এ উৎসব সনাতন ধর্মাবলম্বীদের হলেও বাংলাদেশে বিদ্যমান সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির কারণে তা এখন ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলের উৎসবে পরিণত হয়েছে।প্রতিবছর পৌষ-সংক্রান্তির শুরুতেই ছেলে বুড়ো সকলের মুখেই শোনা যায়, সরস্বতী পূজা সরস্বতী পূজা। শ্রী শ্রী সরস্বতী দেবীর পূজা, প্রতিবছর মাঘ মাসের শুক্লপক্ষের পঞ্চমী তিথিতে অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।সরস্বতী পূজা হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিদ্যাদেবী বা সরস্বতী দেবীকেই পূজা করে থাকে।জানতে চাইলে ঝালকাঠির কাঠালিয়া উপজেলার আওরাবুনিয়া গ্রামের এক পুরহিত জানান দেবীর এক হাতে বীণা থাকার কারণে, এটিকে সংগীত দেবী বা বীণাপাণিও বলে থাকে। শাস্ত্রমতে সরস্বতী শব্দটির অর্থ, ‘সতত রসে সমৃদ্ধা’। তিনি শুক্লবর্ণা, শুভ্র হংস বাহনা। ‘বীণা-রঞ্জিত পুস্তক হস্তে।’ অর্থাৎ এক হাতে বীণা ও অন্য হাতে পুস্তক।সেগুলোর রহস্য তথা যথার্থ তাৎপর্য হৃদয়ে ধারণ করেই, সরস্বতী দেবীকে পূজা করা হয়। নয়তো পূজার্চনা যতই হোক না কেন, তা অর্থহীন হয়েই থেকে যায়।শিক্ষার্থীরা দেবী সরস্বতীর পূজা বেশি করে থেকে এবং প্রায় প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই সরস্বতী দেবীর পূজা অনুষ্ঠিত হয়। এই সরস্বতী পূজার দিনেই অনেক হিন্দু ধর্মাবলম্বী পরিবারের শিশুদের হাতেখড়ি দেওয়া হয়। এই নিয়মটি প্রাচীন আমলেও ছিল, এখনো আছে।সরস্বতী পূজা শুধু শিক্ষার্থী আর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই সীমাবদ্ধ থাকে না। এই সরস্বতী দেবী বা বিদ্যাদেবীর পূজা, প্রতিটি গ্রামে, প্রতিটি মহল্লায়, আনাচে-কানাচেই হয়ে থাকে। কারণ, সরস্বতী দেবী বা বিদ্যাদেবী হলেন, জ্ঞানদায়িনী দেবী সরস্বতী। তিনি বিদ্যা জ্ঞান দানকারী দেবী। তিনি মর্তলোকে সকলকে বিদ্যা আর জ্ঞান দান করেন। তাই মানুষ বিদ্বান আর জ্ঞান লাভের আশায় সরস্বতী দেবী বা বিদ্যাদেবীর পূজা করে থাকেন।