অটল চাকমা'র এক অনিশ্চিত জীবন পথচলা
চাইথোয়াইমং মারমা রুদ্র জেলা প্রতিনিধি বান্দরবান ] গতকাল ৭ জানুয়ারি, ২০১৮ খ্রিঃ রবিরার, সকাল ১০ঘটিকার সময় আমি শীতের সকালে ঢাকা মিরপুরস্থ বনফুল আদিবাসী গ্রীনহার্ট কলেজ মাঠ প্রাঙ্গনে মিষ্টি রোদ্দুরে বসে শরীরকে গরমে করে নিচ্ছিলাম। আর কলেজের কয়েকজন শিক্ষকের সাথে কুশল বিনিময় করে যাচিছলাম। মাঠে শিক্ষার্থীরা খেলছিল দলবেঁধে। পাশে কলেজের ডাঃ রুম(সুঞ্জুক কক্ষ) থেকে এক মলিন চেহারার ৭-৮ বছরের শিশু দরজা থেকে আমাদের দিকে থাকিয়ে আছে। তার শরীরের দুটো হাত নেই। ভাবছি শিশুটি কোন বড় দুর্ঘটনায় পড়েছিল। এজন্য হাত দুটো কেটে ফেলতে হয়েছে। কিছুক্ষণ পর আমাদের সামনে আসলো। কাছে ডেকে প্রশ্ন করলাম কেন এমন হয়েছে তোমার? শিশুটি সবকিছু খুলে বললো। সেই ২০১৫ খ্রিঃ তারিখে ১১ হাজার কেভি’র বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে হাতদুটো কেটে ফেলতে হয়েছে। এ খবরটি কমবেশি সবাই জানার কথা। আমিও বিগত বছরে ফেসবুকে এ শিশুটির একটি খবর হাতে পেয়েছিলাম সোস্যাল মিডিয়ার সুবাধে। কিছুক্ষণ পর তার বাবা বাদিচান চাকমা আমাদের সামনে আসল। অটল বাবার মতে, তারা বাঘাইছড়ির ভাইস চেয়ারম্যান সুমিতা চাকমার সাথে ঢাকায় এসেছেন অটলের হাত দুটোকে পুর্নবাসন (প্লাস্টিক হাত জোড়া দেয়ার) করার জন্য।
একপর্যায়ে অটল বাবাকে একপাশে নিয়ে বিস্তারিত জেনে নিলাম। সে বাদিচান চাকমা, বেদাগীছড়া(দিঘি-বাঘাইছড়ি সড়ক-১১মাইল), বাঘাইছড়ি উপজেলার স্থায়ী বাসিন্দা। সে আমাকে এক করুন কাহিনীর গল্প শুনালো।
গল্পটি ছিল ২০১৫ সালের। দিঘিনালা-বাঘাইছড়ি পর্যন্ত পার্বত্য বিদ্যুতায়ন প্রকল্পের আওতাধীন সঞ্চালন কাজ চলছিল। ঠিকাদার ছিলেন রফিকুল ইসলাম, প্রকৌশলী মোঃ আহসান উল্লাহ। সেসময় ১৪ কিঃমিঃ এলাকায় খুঁটি ধরে রাখার জন্য তার দিয়ে টানা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেখানে কিছু অংশ তার ছিড়ে গিয়ে মাটিতে পড়ে যায় এবং ১১ হাজার কেভির বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনের সঙ্গে লেগে যায়। তখন অটল চাকমা(৭বছর) ইউনিসেফ পরিচালিত প্রাক-প্রাথমিক বিদ্যালয়ে(পাড়াকেন্দ্র) শিশু শ্রেণিতে পড়তেন। হঠাৎ, অটল খেলতে গিয়ে সে ১১ হাজার কেভির বিদ্যুৎ ছিড়া তারের সাথে স্পৃষ্ট হয়ে জীবন সন্ধিক্ষণে! একপর্যায়ে তার হাতদুটো কেটে ফেলতে হয়। এভাবে অদক্ষকর্মী ও দায়িত্ব অবহেলার কারণে একটি নিষ্পাপ শিশুর জীবন অনিশ্চয়তায় চলেছে।
অটল বাবার ভাষ্যমতে, অটলকে চিকিৎসাক্ষেত্রে কোন ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দেয়া হয়নি কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে। দায়িত্ব অবহেলাকারীদের বিরুদ্ধে কোন আইনী ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। সে এখন দিশেহারা। অসহায়। কৃষিকাজ করে কোনরকমে পরিবার ভরণপোষন যাচ্ছেন। এদিকে অটল নিজে একা কোন খাদ্য খেতে পারছে না; কারোর সহযোগিতা ছাড়া। সে জানে না কার কাছে গেলে এর সুষ্ঠু বিচার ও সমাধান পাবে? কার কাছে গেলে অটলকে দু’মুটো অন্ন, বস্ত্র, চিকিৎসা খরচ পাবে?
অটল বাবা জানায়, সে রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষকেতু মহোদয়ের কাছে গেলে সে এ ব্যাপারে তার করার কিছু নেই বলে জানিয়ে দেন। এ ব্যাপারে আইনী সহযোগিতা চেয়ে রাঙ্গামাটি কোন এক এডভোকেটের কাছে গেলে সে আশ্বাস দিলেও টাকার দৈন্যদশায় আইনী প্রক্রিয়ায় এগোতে পারেনি। ঢাকা হাইকোর্টেও এক আইনজীবির শরনাপন্ন হন কিন্তু সেখানেও আটকে যায় আর্থিক অভাবের কারণে।অামি একজন এদেশের জন্ম অামার মাতৃভুমি বাংলাদেশ।অামার ও বেচেঁ থাকার পাচঁ টি মৌলিক চাহিদা রয়েছে।অন্যান্য শিশুদের মত চলার পথ অামার অনেক সপ্ন অাশা অাকাংখা টুকু নিয়ে অনেক দুর এগোতে চাই।অামার কি বা অপরাধ ছিল। অামি এখনো অবুঝ সন্তান হিসেবে বেচেঁ অাছি। তার অংগহানি দায় ভারতা কে বা নিবে ও নিচছে। সে ফুটফুটে শিশুটি কত যে অাশা অাকাংখা ছিল। এখন অাত্ত হারা দিশে হারা হয়ে তার জীবনটুকু ছাই পরিনত হয়ে মিশে গেছে। তার পিতা একজন জুমচাষ দিন মজুর করে সংসার জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। সে ঘটনার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দায়ী হিসেবে দাবী করেন তার ফুটফুটে শিশু বাবা সাংবাদিক কাছে তুলে ধরা হয়। তদন্ত সাপেক্ষে তার পিতা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি অাইনানুগ ব্যবস্থা জন্য জোরালো ভাবে দাবী করেন।তার ছেলের চিকিৎসা পিছনের সে জমাকৃত সম্পদ হারিয়ে।এখন নি:স জীবন নিয়ে রাত যাপন করছে।অার যাতে কারো এধরনের সারাজীবনের কারো পরিবারে বোঝা না হয়। অাসুন অামরা ফুটফুটে শিশুটি তার পাশে দাড়ায়ঁ তাকে নিয়ে করি সহায়তা হাত বাড়িয়ে তার জীবনকে কিছুটা হলে সামনের দিকে কাধে-কাধ এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি। শিশুটির পিতা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কাছে সাহায্য সহযোগিতায় চেয়েছেন, দৃস্টি অাকষর্ণ করছি,প্রধানমন্ত্রী, স্বাস্থ্য মন্ত্রী, অাইন মন্ত্রী, পাবর্ত্য চট্রগ্রামের প্রতিমন্ত্রী মহোদয়,প্রতি সুস্থ বিচার,পাওয়া ও সুচিকিৎসা পাওয়ার জন্য দাবী করছি।
অটল চাকমা ও তার বাবার বেদনার গল্প শুনে আমি সত্যিই কষ্ট পাই। আমি একজন নগন্য বৌদ্ধ ভিক্ষু আমার করার কিছু নেই। বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার কারণে । তাই আজ এই সোস্যাল মিডিয়ার কিছু ফেবুলিস্টে থাকা বন্ধুকে ট্যাগ দিলাম অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি।