গাংনীর কুমারীডাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বহু অপকর্মের হোতা মাদক স¤্রাট কামাল হোসেন ইয়াবা সহ গ্রেফতার
মেহেরপুর প্রতিনিধি : মেহেরপুরের গাংনীর কুমারীডাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বহুঅপকর্মের হোতা কামাল হোসেনকে অবশেষে ইয়াবা ট্যাবলেট সহ গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাত ১১ টার সময় বামুন্দী পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই হারুন সিন্দুরকৌটা গ্রামের একটি কাঠাল বাগান থেকে তাকে ৪৭ পিচ ইয়াবা সহ গ্রেফতার তাকে করে। এসময় পুলিশের উপস্থিতি টোর পেয়ে কামাল হোসেনের সহযোগীরা পালিয়ে যায়। কামাল হোসেন সিন্দুরকৌটা গ্রামের লুতফর রহমানের ছেলে। বামুন্দী পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই হারুন জানান,কামাল হোসেন সিন্দুরকৌটা গ্রামের ইউনুছের কাঠাল বাগানে মরনঘাতি মাদক ইয়াবা ট্যাবলেট বিক্রি করছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এসময় তার কাছ থেকে ৪৭ পিচ ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়। গাংনী থানার ওসি হরেন্দ্রনাথ সরকার বলেন,কামাল হোসেন এলাকার একজন শীর্ষ মাদক ব্যাবসায়ী। তার বিরুদ্ধে গাংনী থানায় মাদক সহ ৪ টি মামলা রয়েছে। এছাড়া কামালের বিরুদ্ধে চুরি ডাকাতিসহ সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের একাধিক অভিযোগ রয়েছে বলে জানান গাংনী থানার ওসি হরেন্দ্র নাথ সরকার। কামাল হোসেন ইয়াবা ট্যাবলেট সহ গ্রেফতার হওয়ায় সিন্দুরকৌটা,কুমারীডাঙ্গা,কামারখালী এলাকায় আনন্দের বন্যা বইছে। এছাড়া কামালের হাতে নির্যাতনের শিকার হওয়া কয়েকটি পরিবার মিষ্টি বিতরণ করেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
ধন্যবাদ জ্ঞাপন : কামাল হোসেনকে ইয়াবা ট্যাবলেট সহ আটক করায় পুলিশের প্রতি ধন্যবাদ জানিয়েছে স্থানীয়রা। স্থানীয়রা জানায়,পুলিশের বিচক্ষনতায় অনেক দেরিতে হলেও কামাল হোসেনকে আটক করা সম্ভব হয়েছে। কামাল হোসেনের সহযোগীদের গ্রেফতারের দাবি করেন তারা।
কে এই কামাল হোসেন ?
কামাল হোসেন সিন্দুরকৌটা গ্রামের লুৎফর রহমানের ছেলে। গত ১০ বছর পূর্বে মাঠে দিনমুজুরের কাজ করতো ও পরে গ্রাম গ্রাম ঘুরে হাড়ি পাতিল বিক্রি করে জীবন জীবিকা নির্বাহ করতো। ২০০৮ সালে আওয়ামীলী ক্ষমতায় আসার পর থেকে অবৈধ ভাবে খালবিল দখল করে বালি উত্তোলন সহ নানা অপকর্মের মাধ্যমে রাতারাতি কোটি কোটি টাকার মালিক বনে যান। এসময় গাংনীতে কয়েকজন আওয়ামীলীগ নেতার সাথে সখ্যতা গড়ে তুলে নিজেকে আওয়ামীলীগ নেতা দাবি করেন। এরপর আওয়ামীলীগের নাম ভাঙ্গিয়ে এলাকায় গড়ে তোলে একক আধিপত্য। কামালের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পাইনী। এরপর থেকে কামাল হোসেনের উত্থান শুরু হয়। পড়ালেখা না জানলেও ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে কুমারীডাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতির পদ বাগিয়ে নেন। এরপর শুরু হয় নিয়োগ বানিজ্য। সম্প্রতি কামাল হোসেনের অত্যাচারের প্রতিবাদ করায় কামারখালীর গ্রামের আব্বাস আলীর ছেলে সাদ্দাম হোসেন নামের এক যুবককে অস্ত্র নিয়ে গুলি করতে আসেছিলো বলে নাটক সাজায়। পরে পুলিশের হাতে তুলে দেয়া হয় ঐ যুবক সাদ্দামকে। পুলিশের কাছে সাদ্দাম হোসেন জানায়,কামাল বাহিনীর অত্যাচারের প্রতিবাদ করায় পিস্তুল দিয়ে তাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হাজতবাস করানো হয়। ইতোপূবে স্থানীয় পুলিশ ক্যাম্পের সাথে সখ্যতা গড়ে তুলে এলাকার নিরিহ মানুষকে হয়রানী করার অভিযোগ করেছে স্থানীয়রা। এছাড়া সম্প্রতি কোদাইলকাটি গ্রামে মধ্যে রাতে এক বিধবা মহিলার বাড়িতে গিয়ে গ্যাড়াকলে পড়েছিলেন কামাল হোসেন। গভীর রাতে বিধবা ঐ মহিলার বাড়িতে স্থানীয়দের প্রতিরোধের মুখে বাড়ির সিমানা প্রাচীর ডিঙ্গিয়ে পালিয়ে যায় কামাল হোসেন। এ ঘটনায় কুমারীডাঙ্গা গ্রামে চাঞ্চল্য’র সৃষ্টি হয়। অপকর্মের বিষয়ে সাংবাদিকদের কাছে এ ঘটনা প্রকাশ না করতে স্থানীয়দের নানা ভাবে হুমকী দেয় কামাল হোসেন সহ তার ক্যাডার বাহিনী। এ ঘটনার পর থেকে বিধবা ঐ মহিলা তার বাড়িতে তালা মেরে পার্শবর্তী জেলার একটি গ্রামে অবস্থান নেয়।