ভ্যালেনটাইনের ফুল দিয়ে অন্যরকম ভালবাসা দিলেন সার্জেন্ট সোয়েব
আলাউদ্দীন চট্টগ্রাম : গতকাল ভ্যালেনটাইন ডে-তে এক ব্যতিক্রম ধর্মী ভালবাসা দেখালেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ট্রাফিক উত্তর ডিভিশনের সার্জেন্ট সোয়েব আহমদ শুভ।সাধারণত ভ্যালেনটাইন-ডে তরুণ তরুনী, প্রেমিক যুগলরা একে অপরকে ফুল দিয়ে ভালবাসা আদান প্রদান করে থাকে। যে কোন পার্ক কিংবা সাংকৃতিক আচার অনুষ্ঠানের স্থান গুলোতে গেলে সাধারণত এমন দৃশ্যই চোখে পড়ে। কিন্তু গত কাল এক ব্যতিক্রম ধর্মী নতুন আঙ্গিকের ভালবাসা দেখালেন সার্জেন্ট সোয়েব।সকাল ১০টায় আগ্রাবাদ থেকে গাড়িতে উঠে ডিসি হিল যাওয়ার পথে কদমতলী (বি আর টি সি) ট্রাফিক চেক পোষ্টে দেখা গেল একজন ট্রাপিক সার্জেন্ট গাড়ি থামিয়ে কাগজ পত্র চেক করে চালকদের কে ফুল দিচ্ছেন।মনে প্রশ্ন জাগল এটা কি ধরণের রহস্য। কারণ পরিবহণ শ্রমিকদের প্রতি ট্রাফিক সারজেন্টদের এধরণের আচরণ বিরল।প্রায়ই দেখা যায় সার্জেন্টরা হয় হাত উচিয়ে তর্জনি দিয়ে সতর্কবাণী দিচ্ছে নতবা গাড়ি থামিয়ে মামলা দিচ্ছে।কৌতহল বশতঃ সেখানে গাড়ি থেকে নেমে লক্ষ্য করলাম চালকদেরকে ফুল দেওয়া অব্যহত রয়েছে। আবার কখনও কখনও গাড়ির মালিক সাথে থাকলে তাকেও ফুল দেওয়া হচ্ছে। এবার সার্জেন্ট সোয়েবের কাছে জানতে চাইলাম, কেন তিনি এমন ব্যতিক্রম ধর্মী কাজটি করছেন? জবাবে তিনি বললেন সাধারণত মানুষ তার ভাল কাজের জন্য পুরস্কার এবং মন্দ কাজের জন্য তিরস্কার বা শাস্তি পেয়ে থাকে।আমাদের দেশের লোকজন দেশের প্রচলিত আইন কানুন মেনে চলার ব্যাপারে উদাসীন।অন্যদিকে পুলিশের প্রতিও জনসাধারণের নেতিবাচক ধারণা রয়েছে।তাই আমি চাই যারা দেশের প্রচলিত আইন কানুন মেনে তাদের গাড়ির আনুষাঙ্গিক সব কাগজপত্র আপডেট রেখেছে আজ তাদেরকে ফুল দিয়ে ভালবাসা ও সম্মান জানাব।আর যাদের কাগজ পত্র ঠিক নেই তাদেরকে মামলা দেব।সবায়কে দেশের প্রচলিত আইন কানুন মেনে চলাতে আগ্রহী করে তুলতে আজ আমার এই উদ্যোগ এবং সবার প্রতি এটি একটি বার্তাও যে,সবায় দেশের প্রচলিত আইন মেনে চললে পুলিশের হাতে হয়রানি নয় বরং দেশের সম্মানিত নাগরিক হিসাবে সম্মান ও ভালবাসা পাবে।
সার্জেন্ট সোয়েবের এমন কাজের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলাম বার্জার পেইন্ট এর Head of the technical services and business development হামিদুর রহমান চৌধুরীর কাছে তার ঢাকা মেট্রো - গ ৩৩-৯৮৫৬ নাম্বারের গাড়িটির কাগজ পত্র চেক করে তার ড্রাইভার নুরুল ইসলামের হাতে এক গুচ্ছ ফুল তুলে দেওয়ার পর।তিনি বললেন,অবশ্যই ভাল কাজ,এই প্রথম বাংলাদেশে নতুন কিছু দেখলাম। বাহরাইন প্রবাসী মো নেছার উদ্দীন যিনি প্রবাসে ব্যবসা করেন, ভুলবশতঃ তার মোটর সাইকেলের ডকুমেন্ট বাসায় রেখে এসে মোটর সাইকেল চালিয়ে ব্যাংকে যাচ্ছিলেন পথে চেক পোষ্টে তল্লাসীতে পড়ে মোটর সাইকেল রেখে পুনরায় বাসায় গিয়ে ডকুমেন্ট নিয়ে আসেন।তার পর মোটর সাইকেল নিয়ে যাওয়ার সময় তার প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি বলেন,বিরক্তির কিছু নেই। Excellent, should be continued. এসময়ের মধ্যে কয়েকটি মোটর সাইকেল,একটি পিক আপ একটি সি এন জি চালিত অটো রিকশাকে মোটর যান নিয়ন্ত্রণ আইনের ১৩৭ ধারায় মামলা দেওয়া হয়। তবে তাদেরকেও এক গুচ্ছ করে ফুল দেওয়া হয়।তাদেরক কাছে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তারা কাজটিকে খারাপ নয় বলে মন্তব্য করে।