প্রশ্নফাঁস: ফেসবুক-মেসেঞ্জার গ্রুপে গোয়েন্দা নজরদারি
প্রশ্নফাঁস এখন আর শিক্ষা মন্ত্রণালয় কিংবা অন্য কারও অস্বীকার করার মতো অবস্থানে নেই। ইতোমধ্যে প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিষয়টি জাতীয় সমস্যায় পরিণত হয়েছে। তবে শুরুর দিকে বিষয়টি অস্বীকার করা হলেও গত কয়েকদিন থেকে এই সমস্যা সমাধানে সংশ্লিষ্টদের কতিপয় উদ্যোগ লক্ষ্য করা গেছে। এর মধ্যে পরীক্ষা চলাকালীন ইন্টারনেটের ধীরগতি ছিল উল্লেখযোগ্য। তবে ইন্টারনেটের ধীরগতির বিষয়টি সাধারণ মানুষের সমালোচনার মুখে তুলে নিতে বাধ্য হয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এরপর থেকেই জোরালো হয় ফেসবুক, মেসেঞ্জার এবং হোয়াটসঅ্যাপসহ বিভিন্ন মাধ্যমে গোয়েন্দাদের নজরদারি। ইতোমধ্যে লক্ষ্য করা গেছে, বিগত কয়েকবছর টাকার বিনিময়ে প্রশ্নফাঁসের ঘোষণা দেওয়া হলেও এবার তার ব্যতিক্রম। চলতি বছর ‘বিনামূল্যে’ শিক্ষার্থীদের প্রশ্ন দেওয়া হবে বলে ফেসবুকের বিভিন্ন গ্রুপে ঘোষণা দেওয়া হচ্ছে। অনেকে অবশ্য টাকার বিনিময়েও এসব গ্রুপে প্রশ্ন দেওয়ার কথা বলছে। এসব গ্রুপে পোস্টদাতাদের বিভিন্ন কৌশলে ধরছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এমনকি ছাত্র কিংবা অভিভাবক সেজে প্রশ্নফাঁসকারী চক্রকে গ্রেপ্তারের ঘটনাও ঘটেছে। তবে অপরাধীদের সংখ্যা অনুপাতে গ্রেপ্তার এখনও অনেক কম। তারপরেও গোয়েন্দাসহ এই কৌশলের সঙ্গে জড়িত সবাইকে আমরা অভিনন্দন জানাই। এসব মাধ্যমে অপরাধীদের গ্রেপ্তারের সংখ্যা আরও বাড়াতে হবে বলে আমরা মনে করি। কারণ, যারা আমাদের দেশ, প্রজন্মের ভবিষ্যৎ নিয়ে ভয়ঙ্কর খেলায় মেতে উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নিতে একটুও ছাড় দেওয়া যাবে না। এছাড়া প্রশ্নফাঁস রোধে বিভিন্ন প্রযুক্তির কথা ইতোমধ্যে আলোচিত হচ্ছে। যেই প্রযুক্তির অপব্যবহারের মাধ্যমে প্রশ্নফাঁস হচ্ছে, সেই প্রযুক্তির মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান করা যায় কিনা সেই ব্যাপারেও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করা যেতে পারে। তবে আমরা মনে করি, এই মহামারী থেকে বাঁচতে হলে সর্বোপরি দেশের সাধারণ মানুষকেই এগিয়ে আসতে হবে। সন্তানদের টাকার বিনিময়ে অনৈতিকভাবে প্রশ্নপত্র পাওয়ার বিষয়ে নিরুৎসাহিত করতে হবে। একইসঙ্গে প্রশ্নফাঁসকারীদের জাতীয় শত্রু মনে করে তাদের সামাজিকভাবে বয়কট এবং প্রমাণ পেলে তাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জানানোর জন্য আমরা সবাইকে আহ্বান করছি।