মহান মুক্তিযুদ্ধসহ বাঙালীর ইতিহাস সংরক্ষণে আধুনিক সব ব্যবস্থাপনা রেখে তৈরি হয়েছে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর।
মহান মুক্তিযুদ্ধসহ বাঙালীর ইতিহাস সংরক্ষণে আধুনিক সব ব্যবস্থাপনা রেখে তৈরি হয়েছে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর। শুধু প্রদর্শনই নয়, চাইলে শত বছর পরেও যেন ভবিষ্যত প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে গবেষণা করতে পারে সেব্যবস্থাও করেছে জাদুঘরটি।
১৯৯৬ সালের ২২ মার্চ ব্যক্তিগত পর্যায়ের উদ্যোগে রাজধানীর সেগুনবাগিচার ভাড়া বাড়িতে যে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর যাত্রা শুরু করেছিলো তা এখন আগাঁরগাওয়ে নিজস্ব সুউচ্চ ভবনে। নতুন ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৭ সালের ১৬ এপ্রিল মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের নয়তলা ভবনটির উদ্বোধনও করেন।
জাদুঘরটির ৩য় ও ৪র্থ তলায় রয়েছে মূল ৪টি গ্যালারি। ‘আমাদের ঐতিহ্য, আমাদের সংগ্রাম’ নামের প্রথম গ্যালারিতে রয়েছে প্রাগৈতিহাসিক কাল থেকে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন, ৫২ এর ভাষা আন্দোলন থেকে ৭০ এর নির্বাচন পর্যন্ত ইতিহাস সমৃদ্ধ বিভিন্ন নিদর্শন ও ছবি। এই গ্যালারিতেই রয়েছে, বঙ্গবন্ধুর পোশাক ছাড়াও জাতির জনকের ব্যবহার্য বিভিন্ন জিনিস।
একজন দর্শক সরাসরি মুক্তিযুদ্ধ পর্বে ঢুকে পড়েন দ্বিতীয় গ্যালারিতে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে। শুরুতেই বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ। এখানেই রয়েছে, বাংলাদেশের প্রথম পতাকা ও স্বাধীনতার ঘোষণা পত্র। ২৫ মার্চ কালরাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর নির্যাতনের চিত্রও ফুটিয়ে তোলা হয়েছে এখানে। আছে মেহেরপুরে বাংলাদেশের প্রথম সরকার গঠনের বিভিন্ন নিদর্শন। রয়েছে জাতীয় ৪ নেতার ব্যবহৃত বিভিন্ন জিনিসপত্র।
‘আমাদের যুদ্ধ, আমাদের মিত্র’ নামের ৩য় গ্যালারিতে রয়েছে, ভারতে আশ্রয় নেওয়া শরণার্থীদের জীবনযাত্রা, বিদেশী গণমাধ্যমে প্রচারিত সংবাদ মাধ্যমের ছবি, মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ, রাজাকারদের তৎপরতা, গেরিলা যুদ্ধের বিভিন্ন নিদর্শন। সাথে রয়েছে, বিদেশী বন্ধুদের বিভিন্ন উদ্যোগের ছবি।
‘আমাদের জয়, আমাদের মূল্যবোধ’ নামের শেষ গ্যালারিতে রয়েছে মুক্তিযুদ্ধে ব্যবহৃত বিভিন্ন অস্ত্র, ফরিদপুরের বাখুন্ডা সেতু ধ্বংস করতে ব্যবহৃত নৌকা, বিলোনিয়ার যুদ্ধের বিভিন্ন স্মৃতিচিহ্ন। রয়েছে, মিত্রবাহিনীর ছত্রীসেনাদের আক্রমণ, বাংলাদেশ বিমান বাহিনী গঠন ও তাদের আক্রমণের বিভিন্ন ছবি।
মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের প্রথম তলার ছাদে টানানো রয়েছে, মুক্তিযুদ্ধে ব্যবহৃত ভারতের দেওয়া একটি হেলিকপ্টার ও একটি যুদ্ধ বিমান। এখানেই রয়েছে, সকল শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো শিখা অম্লান।