বেঁচে আছি এটাই বিশ্বাস হচ্ছে না
টি.আই সানি,শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধিঃ
মেহেদী হাসান মাসুম শ্রীপুর পৌর এলাকার এসরোটেক্স নামের একটি কারখানার ফ্যাসন ডিজাইনার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। গত চারমাস আগে সায়েদা কামরুন্নাহার স্বর্ণার সাথে তাঁর বিয়ে হয়। নববিবাহিত দম্পতির এটাই প্রথম পর্যটক হিসেবে ভ্রমন ছিল। ভ্রমনের সফরসঙ্গী হিসেবে ছিলেন তাঁর স্বজন ফারুক হোসেন দম্পতির তিন সদস্য।
মেহেদী হাসান মাসুম চোখের সামনে থেকে দেখেছেন মৃত্যুদুতকে, যন্ত্রণায় মানুষগুলোর ছটফটানির চিত্র গুলো এখন সামনে ভেসে বেড়াচ্ছে। এমন দুঘটনার পরও নিজে ও তাঁর স্ত্রী যে বেঁচে আছেন, এটাই বিশ্বাস হচ্ছে না। তবে চোখের সামনে স্বজন হারানোর বেদনায় বেঁচে থাকার আনন্দ এখন আর তাঁর নেই।
সোমবার দুপুরে যখন বিমানটি দুর্ঘটনায় পতিত হন সেদিন সন্ধ্যায় বাবা তোফাজ্জল হোসেনকে মুঠোফোনে জানিয়েছিলেন সে বেঁচে আছেন। এর পর থেকেই নেপালের কাঠমন্ডু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বিছানায় থেকে পরিবারের সাথে মুঠোফোনে কথা বলে স্বজনদের সান্তনা দিচ্ছেন তিনি। আর মাঝে মধ্যে দুর্ঘটনার বর্ণণাও দিচ্ছেন।
মেহেদী হাসান মাসুমের বরাত দিয়ে তাঁর বাবা তোফাজ্জল হোসেন জানান, দুর্ঘটনার আগে কিছুক্ষনের মধ্যে বিমানটি অবতরনের প্রস্তুতি নিচ্ছিল, আর পর্যটকদের মধ্যে ছিল অন্যরকম আনন্দ। বিমানটি নামতে গিয়ে কিসের সঙ্গে যেন ধাক্কা খেল। আমরা ছিলাম বিমানের মাঝামাঝি , এসময় পিছন থেকে আগুনের ধোয়া দেখা গেল। বিকট আওয়াজে আতঙ্কিত হয়ে দেখি বিমানটি দ”ুভাগ হয়ে গেল। আমি প্রথমে লাফিয়ে পরি, পরে স্ত্রীকে নামাই এরপর ভাইয়ে স্ত্রীকে নিচে নামাই। কিন্তু প্রিয়ক ও তার শিশু সন্তানকে নামাতে পারিনি এরআগেই আগুন ধরে যায়।
এদিকে নেপাল অবস্থান করা প্রিয়কের স্বজন সোহানুর রহমান সোহাগ বুধবার সকালে জানান,বিমান দুর্ঘটনায় প্রিয়কের স্ত্রী আলমুন নাহার এনির পা ভেঙ্গে গেছে। নিজে চিকিৎসাধীন থাকাবস্থায় স্বামী ও সন্তানের খোঁজে এখনও কেদেই চলছেন।মেহেদীর স্ত্রী সাইদা কামরুননাহার স্বর্ণা আইসিইউতে রয়েছেন। সেও কথা বলতে পারছেন না। তবে চিকিৎসকরা নিশ্চিত করেছেন বেঁচে থাকা সদস্যরা প্রত্যেকেই শঙ্কামুক্ত।
এদিকে বিধ্বস্ত বিমানে থাকা শ্রীপুরের পাঁচ সদস্যের মধ্যে ফারুক হোসেন প্রিয়ক ও তাঁর তিন বছর বয়সী শিশু কন্যা নিহত হয়েছেন। তাঁদের কফিনবন্দি লাশের জন্য অধির আগ্রহের প্রতিক্ষা যেন শেষ হচ্ছে না স্বজন ও প্রতিবেশীদের।