শোক দিবস উপলক্ষে চাঁদা না দেওয়ায় স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে মারধর, দোকান লুট
নিজস্ব প্রতিবেদক, সাভার ঢাকা:
১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস পালনের জন্য চাঁদা না দেওয়ায় সাভারে স্বর্ণের দোকানে হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে আশুলিয়া থানা সেচ্ছাসেবকলীগ নেতা কামরুল হাসান নয়নের বিরুদ্ধে। এসময় হামলাকারীরা দোকানে থাকা জ্যোতি লাল ঘোষ ও তার ছেলে বিজয় চন্দ্র ঘোষকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও পিটিয়ে জখম করে। এরপর সন্ত্রাসীরা দোকানে থাকা স্বর্ণালঙ্কার, রৌপ্য ও নগদ টাকাসহ প্রায় দশ লক্ষাধিক টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়।
বুধবার বিকেলে উপজেলার পাথালিয়া ইউনিয়নের পানধোয়া বাজারে অবস্থিত পূর্ণতা জুয়েলার্স নামক স্বর্ণের দোকানে এ হামলা ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। এঘটনায় ভুক্তভোগী দোকান মালিক কার্তিক ঘোষ বাদি হয়ে বুধবার রাতে আশুলিয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
দোকান মালিক কার্তিক চন্দ্র ঘোষ অভিযোগ করেন, সেচ্ছাসেবকলীগ নেতা পরিচয়ে এলাকার বখাটে কামরুল হাসান নয়ন (২৮), ইউসুফ আলী (৪২), ফেরদৌস আলমসহ (২৭) কয়েকজন ছেলে শোক দিবস পালনের জন্য আমার কাছে পঞ্চাশ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে তা না হলে ব্যবসা করতে দিবে না বলে হুমকি দেয়। আমি চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় বুধবার দুপুরে কামরুল হাসানসহ তার সন্ত্রাসী বাহিনী লোহার রড, হাতুরী, রামদা, চাপাতিসহ তিনটি মোটরসাইকেল ও একটি মাইক্রোবাসে করে আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আসে। তারা আমাকে না পেয়ে আমার ভাই জ্যোতি লাল ঘোষ ও ভাতিজা বিজয় চন্দ্র ঘোষকে এলোপাথারি মারপিট করে। এক পর্যায়ে সন্ত্রাসীরা দোকানে ভাংচুর চালিয়ে সিন্দুকের তালা ভেঙ্গে ২৩ ভরি স্বনের গহনা, ২৯২ ভরি রুপার অলঙ্কার ও ক্যাশে রক্ষিত নগদ টাকাসহ দশ লক্ষাধিক টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়।
সন্ত্রাসীরা চলে যাওয়ার পর স্থানীয় আমার ভাই ও ভাতিজাকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। আমার ভাইয়ের অবস্থা বেশী ভাল নয় বলে জানিয়েছে কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা।
কার্তিক চন্দ্র ঘোষের ব্যবসায়ীক অংশীদার লুৎফর রহমান বলেন, কামরুল হাসান নয়ন নিজেকে আশুলিয়া থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের কার্য্য নির্বাহী সদস্য পরিচয় দিয়ে নানা অপরাধ মূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছে। পাথালিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পারভেজ দেওয়ানের ছত্রছায়ায় থাকায় তার বিরুদ্ধে কেউ কিছুই বলার সাহস পায়না। হামলা ও লুটপাটের ঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়েরের পর পাথালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান পারভেজ দেওয়ান বিষয়টি ধামাচাপা দিতে রাতেই থানায় ছুটে যায় বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান পারভেজ দেওয়ান বলেন, মারামারি ঘটনা শুনে বিষয়টি জানার জন্য আমি থানায় গিয়েছি। ওসি সাহেব এর সুষ্ঠু ব্যবস্থা গ্রহন করবেন বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল আউয়াল বলেন, লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।