শ্রীপুরে দালালচক্র হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা প্রতিবাদে গ্রামবাসি
শ্রীপুর (গাজীপুর) সংবাদদাতা :
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার কাওরাইদ ইউনিয়নের হয়দেবপুর এলাকায় সরকারি মাস্টারপ্ল্যানের অন্তর্ভুক্ত বিদ্যুৎ লাইন নিয়ে সক্রিয় দালালচক্র। এই চক্রটি সম্পূর্ণ বিনামূল্যে প্রাপ্য বিদ্যুৎ লাইন থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। অভিযোগ দায়েরের পরও ব্যবস্থা নিচ্ছে না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে হয়দেবপুর এলাকার ইব্রাহীম খানের পুত্র অহাব খান পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান ও ময়মনসিংহ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২-এর জেনারেল ম্যানেজার বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগে জানা যায়, বর্তমান সরকার তৃণমূলে বিদ্যুৎ সুবিধা পৌঁছে দিতে স্থানীয় সাংসদ আলহাজ অ্যাড. রহমত আলীর ডিও লেটারের প্রেক্ষিতে মড়ল বাড়ি থেকে দরগা বাজার পর্যন্ত ৭ কিলোমিটার বিদ্যুৎ লাইন নির্মাণের চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়। পরবর্তীতে ওই লাইন নির্মাণের জন্য ময়মনসিংহ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ ঠিকাদার নিয়োগ করে। এ সময় একটি চক্র ওই লাইনের নির্মাণ বাবদ সংযোগ প্রার্থীদের কাছ থেকে মিটার প্রতি ৫ হাজার থেকে ২০হাজার টাকা তুলতে তৎপর হয়ে উঠে। তারা গ্রাহকপ্রতি ৫ থেকে ২০ হাজার টাকা উত্তোলন করে।
অভিযোগে আরো জানা যায়, ইউসুফ খানের পুত্র মাইন উদ্দিন খান, মৃত সামছুর হক মৃধার পুত্র রিজন মৃধা,মৃত মোহাম্মদ আলীর পুত্র কিরন মৃধা,বাশার খান,নাজিম উদ্দিনসহ আরো কয়েকজন ও ভালুকার ঠিকাদার শামীম আহম্মেদের সমন্বয়ে টাকা উত্তোলন করেন। হয়দেবপুর গ্রামের বিদ্যুৎ সংযোগ প্রার্থী জসিম উদ্দিন জানান, ইউসুফ খানের পুত্র মাইন উদ্দিন খান কাছে ২ হাজার টাকা প্রদান করে। পরবর্তীতে আরো ৫ হাজার টাকা দিতে ৭ দিনের সময় বেঁধে দেন, না দিলে বিদ্যুৎ লাইন দেয়া হবে না বলে হুমকি দেয়। এবং থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করার পর থেকে মাইন উদ্দিন খান ছেলে বাশার খান গ্রহকদেরকে হুমকি দিচ্ছে বলেও জানান ওই গ্রামের বিদ্যুৎ সংযোগ প্রার্থীরা।
স্থানীয় নাজিম উদ্দিন জানান, তিনিও আপাতত ৪ হাজার টাকা প্রদান করেন। গৃহবধূ রুনা আক্তার জানান, তিনি বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য তার ছাগল বিক্রি করে দালালদের হাতে ৫ হাজার ৩০০ টাকা দিয়েছেন। আনোয়ারা বেগম,রিপা আক্তারসহ অনেকেই বলেন,মিটার প্রতি কেজি চাউল দিয়েছি পিয়াজ তেল দিয়ছি ।
অভিযুক্ত মাইন উদ্দিন খান টাকা নেয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, ওয়ারিং লাইন নির্মাণ বাবদ ১ লাখ টাকা উত্তোলন করে ঠিকাদারকে দিয়েছেন। এ বিষয়ে বক্তব্য নিতে ঠিকাদার শামীম মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিয়েও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। কাওরাইদ ইউনিয়ন পরিষদের ওয়ার্ড সদস্য আকবর আলী জানান, এই লাইন বাবদ অবৈধভাবে টাকা উত্তোলন করা হয়েছে বলে তিনি জেনেছেন। এধরনের অপরাধের শাস্তি হওয়া উচিত। বিষয়টি নিয়ে তিনি স্থানীয়ভাবে বসবেন বলেও জানান।
ময়মনসিংহ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২-এর সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার জহিরুল হকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, অভিযোগ পেয়েছি, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২-এর নাম ভাঙ্গিয়ে কেউ অবৈধভাবে টাকা উত্তোলন করে থাকলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।