থায়ী শহীদ মিনার ও নিরাপত্তা ইস্যুতে কন্সাল জেনারেলের তৎপরতা নিউইয়র্কে
কাজে যোগদানের প্রথম মাসেই প্রবাসীদের দীর্ঘদিনের দুটি দাবি নগর প্রশাসনে উপস্থাপন করলেন নিউইয়র্কে বাংলাদেশের কন্সাল জেনারেল সাদিয়া ফয়জুননেসা।
একইসাথে প্রবাসীদের নিরাপত্তায় আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সজাগ থাকার অনুরোধও করেছেন। দাবি দুটি হচ্ছে স্থায়ী একটি শহীদ মিনার নির্মাণ এবং মসজিদ-মন্দিরের আশপাশে পুলিশি টহল বৃদ্ধিসহ গাড়ি পার্কিংয়ের সুবিধার সম্প্রসারণ।
গত ১২ জুলাই সাদিয়া সাক্ষাৎ করেন কুইন্স বরো প্রেসিডেন্ট মেলিন্ডা কাটজের সাথে। সৌজন্য সাক্ষাতে গিয়ে নারী প্রেসিডেন্টকে বিশেষভাবে অভিনন্দন জানিয়ে সবচেয়ে বেশী অভিবাসী অধ্যুষিত কুইন্সের নানা ইস্যুতে তারা কথা বলেন। হৃদ্যতাপূর্ণ পরিবেশে সাদিয়া আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস এবং মায়ের ভাষার জন্য বাঙালির রক্তদানের অবিস্মরণীয় ইতিহাস টানেন।
বরো প্রেসিডেন্ট তাকে জানান যে, তিনি এ ব্যাপারে সবকিছু অবহিত আছেন এবং কয়েক বছর ধরেই তার অফিসে দিবসটি গভীর শ্রদ্ধায় পালিত হচ্ছে। কন্সাল জেনারেল এ সুযোগে তার প্রতি আহবান রাখেন স্থায়ী একটি শহীদ মিনার নির্মাণের জন্য।
একইসাথে কুইন্সে বসবাসরত বাংলাদেশিদের ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণের পাশপাশি বাংলা ভাষা-সংস্কৃতি বিকাশে চলমান কার্যক্রমেও সহযোগিতার দিগন্ত প্রসারিত রাখার অনুরোধ করেন।
এর ঠিক ৬ দিন পর গত ১৮ জুলাই সাদিয়া সাক্ষাৎ করেন নিউইয়র্ক সিটি পুলিশ কমিশনার জেমস পি. ও’নেইল এর সাথে। পুলিশ সদর দফতরে কমিশনার ও’নেইল কন্সাল জেনারেল ফয়জুননেসাকে স্বাগত জানান।
কমিশনার ও তাঁর ডিপার্টমেন্টকে বাংলাদেশি-আমেরিকান জনগোষ্ঠীকে সেবা প্রদানের জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে বাংলাদেশি এই কূটনীতিক পুলিশ কমিশনার ও’নেইলকে নিউইয়র্ক সিটিতে বাংলাদেশি-আমেরিকান অধ্যুষিত এলাকায়, বিশেষ করে ধর্মীয় অনুষ্ঠানের সময় এবং জুমার দিনে টহল বৃদ্ধির অনুরোধ জানান।
বাংলাদেশি-আমেরিকান বিশেষত নারীদের তার ডিপার্টমেন্টে যোগ্যতার ভিত্তিতে চাকরির ব্যাপারে সুপারিশ করেন কন্সাল জেনারেল সাদিয়া ফয়জুননেসা।
এসময় পুলিশ কমিশনার তার বাহিনীতে কর্মরত বাংলাদেশি-আমেরিকান পুলিশ সদস্যদের পেশাদারিত্বের সাথে দায়িত্ব পালনের বিষয়টি উল্লেখ করে তাদের প্রশংসা করেন। কন্সাল জেনারেল উত্থাপিত বিষয়গুলোর প্রতি তিনি নজর রাখবেন বলে আশ্বাস দেন এবং পুলিশ কমিশনার তার ডিপার্টমেন্টকে সহযোগিতার জন্য নিউইয়র্ক সিটিতে বসবাসরত বাংলাদেশি-আমেরিকান কম্যুনিটির সকল সদস্যকে ধনবাদ জানান।
নিউইয়র্কের ইনটেলিজেনস প্রধান থমাস পি. গ্যালাটি, উপ-কমিশনার (ইনটেলিজেনস এবং কাউন্টার-টেররিজম) জন মিলার এবং বাংলাদেশ কনস্যুলেটের কাউন্সেলর আয়েশা হক এ সময় সেখানে ছিলেন।
কন্সাল জেনারেলের এ তৎপরতার খবরে প্রবাসীরা অভিভূত। সাদিয়ার এমন বিচরণ সর্বত্র অব্যাহত থাকলে বহুজাতিক এই সিটিতে বাংলাদেশিরা আরো নিরাপদ এবং স্বাচ্ছন্দবোধ করবে বলে অনেকে মনে করছেন।
প্রসঙ্গত, উল্লেখ্য, সাদিয়া হচ্ছেন নিউইয়র্ক কন্স্যুলেটে প্রথম নারী কন্সাল জেনারেল এবং কার্যক্রম শুরু করেছেন নিউইয়র্কে কর্মরত সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়ের মধ্য দিয়ে।