নৌকায় ভোট দিলে কেউ বঞ্চিত হয় না: প্রধানমন্ত্রী
রাজধানীর যানজট নিরসনে চালু হলো বাড্ডা-নর্থ ইউলুপ। সমন্বিত হাতিরঝিল প্রকল্পের আওতায় শনিবার (২৮ জুলাই) বিকেলে এই ইউলুপ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় তিনি বলেন, ‘রাজধানী ঢাকাকে ঘিরে বৃত্তাকার উড়ালপথ, মেট্রোরেল এবং পাতাল রেলের মতো উন্নয়ন প্রকল্পের বাস্তবায়ন এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। রাজধানীসহ দেশব্যাপী উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তরান্বিত হচ্ছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন- নৌকা মার্কায় ভোট দিলে কেউ বঞ্চিত হয় না।
যানজট নিরসনে হাতিরঝিল প্রকল্পকে কেন্দ্র করে ঢাকার এক প্রান্তের সঙ্গে অন্য প্রান্তের চক্রাকার যোগাযোগ আজ পূর্ণরূপ পেল। খুলে দেয়া হলো- বহুল প্রত্যাশিত বাড্ডা নর্থ ইউলুপ। ২০১৬ সালের ২৫ জুন রামপুরা সাউথ ইউলুপের পর এই প্রকল্পটি সম্পূর্ণতা দিল হাতিরঝিলকে।
শনিবার (২৮ জুলাই) বিকেলে সমন্বিত হাতিরঝিল প্রকল্পের আওতায় থাকা সাতটি স্প্যানের ওপর দাঁড়ানো ৪৫৮ দশমিক ৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের এই ইউলুপ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
উদ্বোধনের পর মোটরকেড এ পুরো ইউলুপটি পরিদর্শন করেন প্রধানমন্ত্রী। উদ্বোধনী আয়োজনের বক্তব্যে শেখ হাসিনা বলেন, ‘ হাতিরঝিলে এক সময়ের সুয়ারেজ জমে থাকা স্থানে মানুষ আজ মুক্ত বাতাস নিতে আসে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘ হাতিরঝিলের জায়গাটা এখন দৃষ্টিনন্দন জায়গায় পরিণত হয়েছে। যেখানে সুয়ারেজের পানি জমা হত। দুর্গন্ধের কারণে থাকা যেত না। আজ সেই এলাকায় বিনোদনের জায়গা হিসেবে পরিণত হয়েছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘পুরো ঢাকা ঘিরে একটা রিং রোড করব। সেটা হবে সম্পূর্ণ এলিভেটেড রিং রোড। রাস্তা দিয়ে যাবে না, উপর দিয়ে যাবে। ট্রেন এখন মাটির নিচ দিয়ে যাবে, উপর দিয়েও যাবে। দুই দিক দিয়ে আমরা করতেছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জনগণ নৌকা মার্কায় ভোট দিয়েছিল বলে আমরা জনগণের সেবা করার সুযোগ পেয়েছি। একটানা দুই বছর ক্ষমতায় আছি বলে উন্নয়নের কাজগুলো সম্পূর্ণ করতে পেরেছি। নৌকা মার্কায় ভোট দিলে কেউ বঞ্চিত হয় না। স্বাধীনতা যেমন পেয়েছেন, উন্নয়ন পাবেন।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এমন ব্যবস্থা করা হবে যাতে প্রতিদিনই বাইরে থেকে মানুষ ঢাকার কর্মস্থলে এসে কাজ শেষে ফিরে যেতে পারেন। ঢাকার চারপাশের চারটি নদীকে ঘিরে আমরা নৌপরিবহন ব্যবস্থা চালু করবো। নদীগুলোতে যেসব ব্রিজের কারণে নৌচলাচল করতে পারে না, সেসব ব্রিজ পরিবর্তন করে নৌচলাচলের উপযোগী করার পরিকল্পনা নিচ্ছি।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘সৈয়দপুর বিমানবন্দরকে আমরা আঞ্চলিক বিমানবন্দর হিসেবে গড়ে তুলবো। রাজশাহী ও বরিশাল বিমানবন্দরেরও উন্নত করবো। আর কক্সবাজারে সবচেয়ে দৃষ্টিনন্দন বিমানবন্দর নির্মাণ করা হবে।’
আগামী নির্বাচনে নৌকা মার্কায় ভোট দিতে জনগণকে আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘নৌকায় ভোট দিলেই দেশের উন্নয়ন হয়। আগামীতেও উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে নৌকা মার্কায় ভোট চাই।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য দেশকে আরো এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। বাংলাদেশে কাজ করতে গিয়ে নানা সমস্যায় পড়তে হয়। হাতির ঝিল করতে গিয়ে ৬৮টি মামলার মুখোমুখি হতে হয়।দেশীয় সম্পদ ব্যবহার করে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজটি করেছে সেনাবাহিনী। এজন্য তাদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’
সরকারের নেওয়া নানা উদ্যোগের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের বিস্ময়। বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা অর্জন করেছে। আমাদের প্রবৃদ্ধি বর্তমানে ৭.৭৮ শতাংশ। দারিদ্র্যের হার ২২ শতাংশে নেমে এসেছে। বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ১৮ হাজার ৩৫৩ মেগাওয়াট। মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি পেয়ে ১৭৫২ ডলারে উন্নীত হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, ‘আমরা বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণ করেছি। পাবনার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের কাজ এগিয়ে চলছে। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে। এ অগ্রযাত্রা কেউ ব্যাহত করতে পারবে না। উন্নয়নের এ ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে আমি সকলকে আহ্বান জানাচ্ছি’
গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, স্থানীয় সংসদ সদস্য এ কে এম রহমত উল্লাহ, সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ, প্রকল্প পরিচালক মেজর জেনারেল আবু সাইদ মো. মাসুদ উপস্থিত ছিলেন।